দেশের স্বনামধন্য পরমাণুবিজ্ঞানী এবং একুশে পদকপ্রাপ্ত ভাষাসৈনিক ও লেখক ড. জসীম উদ্দিন আহমেদ না ফেরার দেশে পাড়ি দিয়েছেন। গত বুধবার (২১ সেপ্টেম্বর) ব্যাংককে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৯১ বছর।
তাঁর পুত্রবধূ বিজ্ঞানী শচি আহমেদ এ তথ্য জানিয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে ফেসবুক পোস্টে তিনি জানান, কয়েক মাস আগে জসীম উদ্দিন আহমেদের ব্রেইন স্ট্রোক হয়েছিল। এরপর থেকে তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। ব্যাংককের একটি হসপিটালে তাঁর চিকিৎসা চলছিল।
আগামী রোববার (২৫ সেপ্টেম্বর) বাদ জোহর ঢাকার গুলশানের আজাদ মসজিদে তাঁর নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। পরে মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন করা হবে। তিনি স্ত্রী সাকিনা আহমেদ, তিন ছেলে শাব্বির, শাকিল ও সাজ্জাদ এবং আটজন নাতি-নাতনিসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
ড. জসীম উদ্দিন আহমেদকে ভাষা আন্দোলনে অবদানের জন্য ২০১৬ সালে একুশে পদকে ভূষিত করা হয়। জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা, ভিয়েনা ও অস্ট্রিয়াতে তিনি পরিচালক ও পরমাণু বিজ্ঞানী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। জাতিসংঘের ৪৪টি সদস্য রাষ্ট্রের কারিগরি উপদেষ্টা হিসেবে বিশ্ব ভ্রমণ করেন।
ড. জসীম উদ্দিন আহমেদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পদার্থবিদ্যায় স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। পরে রচেস্টার ইউনিভার্সিটি থেকে আরেকটি স্নাতকোত্তর ডিগ্রি এবং মিশিগান ইউনিভার্সিটি থেকে নিউক্লিয়ার ফিজিক্সে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন।
বিজ্ঞানী জসীম উদ্দিন আহমেদ ছিলেন একজন আজন্ম কাব্য সাধক। তাঁর প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা ৩৬টি। তিনি বিজ্ঞান বিষয়ক ১৭টি বই লিখেছেন। এছাড়া সংগীতের অ্যালবামও প্রকাশ করেছেন।
পরিবারের সদস্যসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন ড. জসীম উদ্দিন আহমেদ। দরিদ্রদের সাহায্য ও শিক্ষিত করতে ওয়াজউদ্দিন ফাউন্ডেশন ট্রাস্ট প্রতিষ্ঠা করেন ড. জসীম উদ্দিন আহমেদ। তিনি কুমিল্লায় তার গ্রামে একটি এতিমখানা, একটি স্কুল ও মসজিদ স্থাপন করেছেন।
