মূল রচনা : খুশবন্ত সিং
হিমাচলের বাসিন্দা জগন আমাদের অফিসের বেয়ারা। কোয়ার্টারে একাই থাকে। ছুটি না পাওয়ায় বেচারা বছর তিনেক হলো বাড়ি যেতে পারেনি। হঠাৎ সেদিন দেখি অফিসে সবাইকে মিষ্টি খাওয়াচ্ছে। দেশ থেকে খবর এসেছে ওর ছেলে হয়েছে। আমি ডেকে বললাম, ‘জগন্নাথ, এটা খুশখবরী হলো কিভাবে ? তুমিতো অনেকদিন বাড়ি যাওনি!’
নিরুত্তাপ জবাব এলো, ‘আমাদের মুলুকে এটা একটা সাধারণ ঘটনা। বাড়ির পুরুষরা বাইরে থাকলে আত্মীয়স্বজন আর প্রতিবেশীরাই বউদের দেখভাল করে।’
বড়বাবু রসিকতা করে জিজ্ঞেস করলেন- "ছেলের পদবী কী হবে তাহলে ?"
শুনে জগনের জবাব, ‘এটা নির্ভর করছে কে দেখভাল করেছে তার ওপর । যদি দুজন প্রতিবেশী করে থাকে তবে দ্বিবেদী, তিন জন করে থাকলে ত্রিবেদী, আর চার জন হলে চতুর্বেদী !’
এটা শোনার পর প্রশ্নের ঝড় বয়ে গেলো। প্রেস কনফারেন্সের কায়দায় জগন এক এক করে তার জবাব দিল .... ‘সবাই মিলে যদি দেখভাল করে থাকে তাহলে মিশ্র, যদি বউ প্রতিবেশীর পরিচয় জানাতে লজ্জা পায় তাহলে শর্মা, যদি নাম গোপন রাখতে চায় তাহলে গুপ্তা, আর যদি মনেই না করতে পারে তাহলে ইয়াদব !’
অফিসের কমবয়েসীরা ফোড়ন কাটলো, ‘কেউ যদি জোর করে দেখভাল করে থাকে কিংবা তোমার বউ যদি নিজেই এগিয়ে যায়?’
জবাব এলো, ‘প্রথম ক্ষেত্রে দোশী আর পরেরটায় জোশী !" সব শুনে বড়বাবু বলে উঠলেন, "ব্যাটার জন্মের পেছনে দেখি গোটা দেশের অবদান রয়েছে।’ জগন গম্ভীর হয়ে বললো, ‘সেক্ষেত্রে পদবী হবে দেশপান্ডে !’
বহুমাত্রিক.কম