ছবি : বহুমাত্রিক.কম
মৌলভীবাজার : ধলাই নদী থেকে ড্রেজার মেশিন দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ফলে নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে ২০ একর জমি। নদী ভাঙ্গনের কবলে ২০ পরিবার ও হুমকির মুখে ধলাই সেতু।
এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েও কোন কাজে আসেনি। নদী থেকে ড্রেজার মেশিন দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন, নদী সুরক্ষা ও পরিবেশ বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষার দাবিতে অবশেষে নদী পাড়ের মানুষেরা মানববন্ধন করেছে।
রোববার বেলা সাড়ে ১১টায় ধর্মপুর-রামচন্দ্রপুর গ্রামের নদীপাড়ের মানুষ মানববন্ধন করেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, দীর্ঘদিন ধরে ধলাই নদীর ধর্মপুর-রামচন্দ্রপুর এলাকায় অবৈধ ও অপরিকল্পিতভাবে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলনের ফলে গ্রামের কয়েকটি বাড়ি হুমকির মুখে পড়েছে।
এছাড়া ব্রিজের পাশ থেকে বালু উত্তোলন আইনে নিষেধ থাকলেও মৃত্তিঙ্গা ধলাই সেতুর পাশ থেকেই ড্রেজার মেশিনযোগে বালু উত্তোলন চলছে। ফলে মৃত্তিঙ্গা-ভৈরবগঞ্জ সড়কে যাতায়াতে রাস্তায় একমাত্র সেতুটি মারাত্মক ঝুঁকির মুখে পড়েছে।
গ্রামের বাসিন্দা মাওলানা লুৎফুর রহমান জাকারিয়া বলেন, ধর্মপুর ও রামচন্দ্রপুর গ্রামের মধ্যদিয়ে প্রবাহিত ধলাই নদী তীরে বসবাসরত নদী পাড়ের লোকজন আতঙ্কে দিনযাপন করছি। এখানে একটি ইজারাদারের মাধ্যমে স্থানীয় প্রভাবশালী মহল দীর্ঘদিন যাবত ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করায় আমাদের বিশ একর ভূমি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। তিনি আরও বলেন, নদীর ঐ স্থান থেকে ৩০-৪০ ফুট গভীর করে বালু উত্তোলন করার কারণে নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধ ভেঙ্গে বর্তমানে নদী আমাদের বসতভিটার কাছে চলে আসছে।
এখনও ঘরের পাশেই মৃত্তিঙ্গা-ভৈরবগঞ্জ সড়কের ধলাই সেতুর প্রায় একশ’ ফুট অদুরে ড্রেজার মেশিনে বালু উত্তোলন চলছে। বালু উত্তোলনের এই প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকায় গ্রামের দুরুদ মিয়া, সামছুল ইসলাম, ফয়সল আহমদ, আলমাছ মিয়া, আইন উদ্দীন, আনোয়ার মিয়া, আব্দুর রহমান সহ প্রায় ২০টি পরিবার হুমকির মুখে পড়েছে।
স্থানীয় এলাকাবাসী বলেন, এসব বিষয়ে ইতিপূর্বে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক, সিলেট বিভাগীয় কমিশনারসহ সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দেয়া হলেও কোন কাজ হয়নি। তাই এলাকাবাসী নিজেদের অস্থিত্ব রক্ষায় বাধ্য হয়েই মানববন্ধনের মাধ্যমে নদী সুরক্ষা ও পরিবেশ বিপর্যয় রোধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছে।
অভিযোগ বিষয়ে কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশেকুল হক বলেন, এই বিষয়ে অভিযোগ পেয়ে সরেজমিনে গিয়ে বালু উত্তোলন বন্ধ করে আসলেও পরে তা আবার চালু করে দেয়। এখানকার লিজ বাতিলের জন্য প্রস্তাব প্রেরণ করেছি। তাছাড়া এলাকাবাসির দাবির প্রেক্ষিতে ব্যবস্থা গ্রহণের চেষ্টা করবেন বলে জানান।
বহুমাত্রিক.কম