ঢাকা : দৃষ্টিহীনদের সুবিধার জন্য সব ছবিতে বর্ণনামূলক লেখা বা অটোমেটিক অল্টারনেটিভ টেক্সট ফিচার চালু করেছে ফেসবুক। ফেসবুকের পাশাপাশি ইন্সটাগ্রাম ও হোয়াটস অ্যাপেও এক রকম নিরবেই বিশেষ এই সুবিধাটি চালু করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমটি।
তবে অল্টারনেটিভ টেক্সট ফিচারের কারণে ফেসবুক ব্যবহারকারীরা মারাত্মক নিরাপত্তা ঝুঁকির মধ্যে পড়বেন বলে মনে করেন প্রযুক্তি বিশ্লেষকরা। এর সাহায্যে গ্রাহকদের অবস্থান চিহ্নিত করার পাশাপাশি সব ব্যক্তিগত তথ্য হাতিয়ে নেয়া সম্ভব বলেও জানান তারা।
জুলাই মাসের শুরুর দিকে ফেসবুকের সব ফিচার চালু থাকলেও টাইমলাইনে ছবি দেখতে না পাওয়ার অভিযোগ করেন বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের ফেসবুক ব্যবহারকারীরা। শুধু ফেসবুকেই নয় একই সমস্যা দেখা দেয় ইন্সটাগ্রাম ও হোয়াটসঅ্যাপেও। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে ছবি দেখতে না পাওয়ায় বিভ্রাটে পড়েন এর ব্যবহারকারীরা।
পরে জানা যায়, ইন্সটাগ্রামসহ সব ছবিতে ছবির বর্ণনা সংযুক্তের কাজ করছে বৃহৎ আইটি প্রতিষ্ঠান ফেসবুক। আর এ কারণেই ছবি লোড না হওয়াসহ বিভিন্ন সমস্যার মুখোমুখি হন গ্রাহকরা। ফেসবুক বলছে, দৃষ্টিহীনদের জন্যই মূলত বিশেষ এই ফিচারটি চালু করেছে তারা। ছবি দেখতে না পেলেও ছবির বর্ণনা থেকে ছবিটি সম্পর্কে ধারণা পাবেন ব্যবহারকারী।
তবে দৃষ্টিহীনরা ফেসবুকের এই সফটওয়্যারের কল্যাণে সুবিধা পেলেও এই ফিচারের কারণে গ্রাহকদের নিরাপত্তা মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে পড়বে বলে মনে করেন সাইবার নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা। প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান `সাইব্যাজে`র প্রধান পিয়ার লুইগি পেগানিনি জানান, একটি ছবির লিখিত বর্ণনার অনেকগুলো উদ্দেশ্য থাকতে পারে। যারা দেখতে অক্ষম তাদেরকে ছবি সম্পর্কে ধারণা দেওয়া ছাড়াও ছবিটিতে থাকা ব্যক্তি/ব্যক্তিদের সনাক্তের পাশাপাশি তাদের বিভিন্ন তথ্য একত্রীকরণের পর তাদের মধ্যে সম্পর্ক স্থাপনের কাজে অল্টারনেটিভ টেক্সট ফিচার ব্যবহার করা যেতে পারে। আর এই সুযোগ নিয়েই বিভিন্ন গোয়েন্দা ও আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা গ্রাহকদের ওপর নজরদারি করতে পারবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।
ইতোমধ্যে ফেসিয়াল রিকগনিশন সিস্টেম চালু রয়েছে ফেসবুকে। এটিকে কাজে লাগিয়েই গ্রাহকদের তথ্য হাতিয়ে নেয়ার পাশাপাশি তাদের সনাক্ত করতে ও টার্গেট ব্যবহারকারী বা সুনির্দিষ্ট গ্রাহকের কাছে বিজ্ঞাপন পৌঁছানোর ব্যবস্থা করছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমটি। সফটওয়্যার ইনকরপোরেশনের প্রধান নির্বাহী চার্লস আর স্মিথ বলেন, আপাত দৃষ্টিতে মনে হচ্ছে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ রাজনৈতিক কাজে তাদের অ্যাপ ব্যবহারে আগ্রহী নয় বরং বিজ্ঞাপন থেকে অর্থ আয়ের দিকেই ঝোঁক তাদের। তবে কোন এক সময় এই ফিচারটি ভিন্নমতাদর্শী ও বিরোধী রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।