থেকে-থেকে গুড়ি-গুড়ি বৃষ্টি। আকাশে পূর্ণিমার চাঁদ। জ্যেৎস্নার হাসিতে যেন অন্ধকারের ঘোমটা খুলে। ঝিঝি পোকার একটানা ডাক যেন নিস্তব্ধ রাতের ঘুম ভাঙ্গায়। রাতের মধ্য প্রহর। বাড়ির বাহিরে নিচ্ছিদ্র পুলিশ প্রহরা। সারা দিনের কর্মব্যস্ততা শেষে নৌ মন্ত্রীমশায় গভীর ঘুমে। হঠাৎ কি একটা মৃদু শব্দে ছেদ পড়ে মন্ত্রীমশায়ের ঘুম সুখনিদ্রায়। মন্ত্রীমশায় এক পলক চোখ বুলালেন ঘরের চারদিকে। কিন্তু কই কোন শব্দের উৎসের তো হদিস মিলে না। শুধু ঘড়ির কাঁটাটা যেন টিক্-টিক্ করে জানান দিচ্ছে এখন রাত দুটা বাজে। মন্ত্রী ভাবলেন স্বপ্ন-টপ্ন হবে। আবার যেন তার দু’চোখে নেমে এল রাজ্যের ঘুম। এবার যেন কিসের একটা শীতল স্পর্শে হঠাৎ ঘুম থেকে চমকে উঠেন মন্ত্রী। তার দুই কর্ণকুহরে যেন বেজে উঠল মৃদু একটা আওয়াজ; মন্ত্রীমশায়, মন্ত্রীমশায়।
মন্ত্রীমশায়ের এবার চোখ খুলল। দু’কান সজাগ হল বেড়ে গেল পঞ্চেন্দ্রিয়ের ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া। ঘরের ড্রীম লাইটের মৃদু আলোতে যেন দেখতে পেলেন দুটি ছায়ামূর্তি মন্ত্রীর শিয়রের পাশে দাড়িয়ে। মন্ত্রী আতঙ্কিত হলেন, মুখ দিয়ে যেন কিছুটা আতঙ্ক আর কিছুটা ভয়ে-ভয়ে চিৎকার দিতে চাইলেন। কিন্তু চিৎকারের শব্দ যেন প্রহরীর কানে পৌঁছায় না। পাশে শায়িত তার চল্লিশোর্ধ স্ত্রী গভীর ঘুমে মগ্ন। যেন তিনি বিশ্বচরাচরে শত ঘটনা-অঘটনার শব্দ ঝংকারের যাতনার উর্ধ্বে। মন্ত্রীমশায়ের সারা গায়ে যেন ঘামের ¯্রােতধারা। গায়ের লোমসমূহ যেন আতঙ্কে সমকোণে খাঁড়া। হাত-পায়ে ঠক-ঠক কাঁপুনি। বুকে হৃদস্পন্দনের গতি যেন অশ্বের গতিকেও হার মানায়। এর তীব্রতার অস্বস্তি যেন যুদ্ধের দামামা বাজায়।
মন্ত্রীমশায়ের মুখ থেকে যেন ক্ষীণকণ্ঠে বের হয়ে আসে তোমরা কারা। ছায়ামূর্তিদ্বয় সমস্বরে বলে উঠে আমরা সদ্য সড়ক দূর্ঘটনায় নিহত দিয়া আর রাজীবের দেহাত্মা। মন্ত্রীমশায় অতিকষ্টে ভয়কে সংবরণ করে বললেন গতকাল বিচ্ছুর দল সাংবাদিকরা যাদের করুণ মৃত্যু সম্পর্কে আমাকে সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্ন করেছিল তারা নয়তো? প্রত্যুত্তরে ছায়ামূর্তিদ্বয় সমস্বরে কি সৌভাগ্য আমাদের শত ঘটনার মাঝেও এক অঘটনের স্বীকার আমাদের দুই হতভাগ্যের নাম আপনার স্মরণে আছে। মন্ত্রী বললেন কিন্তু তোমরা তো মৃত। মৃত মানুষ আবার দেহমূর্তিতে ফিরে আসতে পারে কি? কিন্তু ছায়ামূর্তিদ্বয় এবার কিছুটা ক্রোধের স্বরে বলল চুপ রহ। আমাদের মৃত বল না। আমরা এখন প্রতিবাদের ভাষা। আমরা মৃত্যুঞ্জয়ী। আমাদের নামের উপর ভর করে নগরীর রাস্তায় রাস্তায় প্রতিবাদ মিছিল।
ছাত্র-ছাত্রী, বন্ধু-বান্ধবীরা সড়ক করে অবরোধ। মন্ত্রী ভয়ে কাঁপে। ছায়ামূর্তিদ্বয় মন্ত্রীমশায় ভয় পাবেন না। আপনি হাসুন। একটি বার দেখান না আপনার শতাব্দীর কুৎসিত সেই বিদ্রুপের অট্টহাসি, যা আপনি আমাদের মৃত্যুর করুণ সংবাদ শুনে দেখিয়ে ছিলেন। আপনি সেই হাসি হেসেছিলেন মিশুক মনির আর তারেক মাসুদের মৃত্যুতে। আপনি যে হাসি দিয়ে যাচ্ছেন সড়ক-নৌ দুর্ঘটনার শীকার শত লাশের মৃত্যুতে। মানুষ বেঘোরে মরে শতে-শতে, লাখে-লাখে। মন্ত্রীমশায় এবার কিছুটা বিরক্তির স্বরে এই মাঝ রাতে কি প্যাঁচাল! এসব দেখার জন্য যোগাযোগ ও সড়ক মন্ত্রী আছে, আছে ট্রাফিক বিভাগ। কিন্তু আপনিত পরিবহন শ্রমিক সমিতির দলপতি। আপনার এক তুড়িতেই সারা দেশে চলে পরিবহন ধর্মঘট। অচল হয়ে পড়ে দেশ। বাড়ায় জনদুর্ভোগ। মন্ত্রী তাত শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের আন্দোলন। চালকের ভুলে, চালকের অদক্ষতায় যাবে শত-সহ¯্র প্রাণ। ফিটনেসবিহীন যানবাহনে সয়লাব হবে সাড়া দেশের সড়ক ও নৌ-পথ। পরিবহন ভাড়ায় নৈরাজ্য। যাত্রাপথে পারমিটবিহীন গাড়ির দৌরাত্য। সেই সাথে গোদের উপর বিষফোঁড়ার মত মাদকের নেশাগ্রস্ত চালকের মাতলামি কিংবা চলমান অবস্থায় মোবাইলে খাজুরি আলাপ কি অধিকার না অপরাধ?
মন্ত্রী এবার কিছুটা অনুনয়ের স্বরে আমি বলছি না যে এসব অপরাধ নয়। আমি সব সময় বলে আসছি যে যার যত অপরাধ ঠিক তার ততটুকুই সাজা প্রাপ্য। ছায়ামুর্তিদ্বয় তাহলে এসমস্ত অনিয়মের প্রতিবাদের বিরুদ্ধে পরিবহন শ্রমিকদের দায়মুক্তির অন্যায় আবদার কি অপরাধের পর্যায়ে পড়ে না? আর তাতে সবাক কিংবা নির্বাক সম্মাতি কি দুষ্টের পালন আর শিষ্টের দমন নয় কি? মন্ত্রী এবার কিছুটা প্রশ্নবোধক ভঙ্গিতে তোমরা বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের নাম শুননি? তোমরা কি সড়ক ও যোগাযোগ মন্ত্রণালয় সম্পর্কে একেবারেই অজ্ঞ? রেল মন্ত্রণালয়ে কি শুধু হাতের আঙ্গুল চুষে। যদিও আমি নৌ মন্ত্রীর দায়িত্বে। আর সড়কে যানবাহন চলাচলের সকল কলা-কানুনত ট্রাফিক বিভাগের জানা। পরিবহন সেক্টরে সকল অনিয়ম আর বিশৃঙ্খলা দমনে রয়েছে হাইওয়ে, নৌ ও রেল পুলিশ।
ছায়ামূর্তিদ্বয় দেশের নাম যেহেতু গণতন্ত্র, মন্ত্রী সভার আপনি একজন সদস্য, সেহেতু আপনি কোন রাজনৈতিক দল কিংবা বিশেষ গোষ্ঠীর নন। আপনি দেশের সকল আমজনতার দ্বারা আমজনতার জন্য, আমজনতার মন্ত্রী। কোন বিশেষ শ্রেণীর অন্যায়-অবিচার দেখেও না দেখার ভান করা কিংবা শুনেও না শুনার ভান করা কিংবা তাদের অনিয়মের সপক্ষে সফাই গাওয়া আপনার কর্ম নয়। জনগণের অধিকার আদায় তথা সার্বজনীন মানবাধিকার রক্ষায় সোচ্চার হওয়াই ছিল আপনার ধর্ম। সড়ক-মহাসড়কের বেহাল দশা, ট্রাফিক বিভাগ, সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ, যোগাযোগ, রেল ও আপনার নৌ মন্ত্রণালয়ে সীমাহীন দুর্নীতি এখন এক ওপেন সিক্রেট ব্যাপার। ফুটপাথসমূহ অবৈধ প্রতিষ্ঠান আর হকারদের দখলে। রাস্তায় ট্রাফিক আইন না মানার হিড়িক।
কিছুক্ষণ নীরব থেকে মন্ত্রী এবার বললেন দেখ আমরা উন্নয়নশীল দেশের অধিবাসী। তাছাড়া পৃথিবীর উন্নয়নশীল-উন্নত দেশেও সড়ক দুর্ঘটনা এক নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার। আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত মূলকেও প্রতিঘন্টায় সড়ক দূর্ঘটনায় গোটা দশেক প্রাণহানী ঘটে। ছায়ামূর্তিদ্বয় এবার সমস্বরে চিৎকার করে বলে থামুস! তারা অধম হবে বলিয়া তুই উত্তম হবিনা কেন? অঘটনের পরিসংখ্যান দেখাস ঘটনার সংখ্যা জানিস না। সমস্যার বাহানা দেখাস, প্রতিকারের পথে আমরা অন্ধ কেন?
মন্ত্রী এবার কিছুটা করুণার স্বরে সড়ক দূর্ঘটনায় হতাহতদের আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেয়া হয় নিয়মিত। সংবাদ-মিডিয়াতেও এর প্রচার সুস্পষ্ট। ছায়ামূর্তিদ্বয় এবার সমস্বরে কেঁদে উঠে। তাদের ক্রন্দনের করুণায় ভূলোক-দূল্যোক যেন শোকাময়। তারা বলে উঠে একটা মানুষের জীবনের মূল্য কি লক্ষ টাকা? একটা পানিতে ডুবে মরার মূল্য কি এক ছাগলমান? সাবেক এক মন্ত্রীর ভাষাতে আমরা আল্লাহর মাল। তাঁর মাল তিনি নিয়ে যাবেন। আমাদের কার কি? আমরা একে-একে মরি, আমাদের স্বজন কাঁদে, আমাদের পিতা-মাতা সন্তান হারা, আমাদের সন্তানরা হয় এতিম। তাদের বুকভাঙ্গা আর্তনাদে ভারী হয়ে উঠে দেশ মাতার আকাশ-বাতাস। অথচ নির্বিকার আমাদের মন্ত্রী-প্রধান মন্ত্রী। যেন তাদের ধারণা কারও মৃত্যুতে দুনিয়া থেমে থাকে না।
কিন্তু তারা বুঝেন না যে পরবর্তী শত লক্ষ প্রাণের বিনিময়েও সে আর ফিরে না। শূন্য যেন শূন্যই থেকে যায়। আর বিদেশ বিভুঁইয়ের উদাহরণ দেখাতে তোর চোখ কি শুধু ভারত মূলকে। তোর চোখ কি যায় না কোরিয়া মূলকের দিকে। যেখানে এক ফেরী দূর্ঘটনায় তিন শতাধিক যাত্রী মৃত্যুর দায়ভার নিয়ে সে দেশের তৎকালীন যোগাযোগ মন্ত্রীর পদত্যাগ। এতেও তার বিবেকের কাঠগোড়ায় বিচার অসম্পূর্ণ থাকায় আত্মবলিদানে তার পাপের শেষ প্রায়শ্চিত্ত। এক একটি দূর্ঘটনায় যেন ঝরে যায় যেন এক একটি তাজা প্রাণ। সেই সাথে শুন্য মিলায় যেন তার সকল আশা-আকাঙ্খা আর সম্ভাবনা।
পরিবার, সমাজ, সর্বোপরি দেশ যেন ছেয়ে যায় নিরাশার ধূসর পর্দায়। মন্ত্রী এবার কিছুটা তর্কের স্বরে এসবের সাথে আমি কি সরাসরি জড়িত? ছায়ামূর্তিদ্বয় আপনি সরাসরি খান না, আপনি অন্যের হাতে খান। আপনি শালা-সমন্ধী, জ্ঞাতি-গোষ্ঠী, আপনার দয়া-দাক্ষিণায় লালিত নেতা-পাতিনেতারা যেন পরিবহন সেক্টরকে করে রেখেছে একটা সিন্ডিকেট। তার উপর সব রসুনের কোয়া একের মত এই সিন্ডিকেটটাকে আরও শক্তিশালী করেছে সরকারী-বিরোধী দল নির্বিশেষে মন্ত্রী-এমপিদের যোগসাজশ। যেখানে পরিবহন সেক্টরকে সকল অনিয়মের বিরুদ্ধে দেয়া হয়েছে অলিখিত দায়মুক্তি। যেকোন দূর্ঘটনা পত্রিকায় প্রকাশ আর শোক-বার্তা দিয়েই খালাশ।
মন্ত্রীমশায় তাহলে রাস্তা অবোরধ, গাড়ি ভাঙচুর আর জনদূভোর্গ সৃষ্টিই কি প্রতিবাদের ভাষা। ছায়ামূর্তিদ্বয় ধ্বংস সৃষ্টির লক্ষ্যে। রাষ্ট্র যখন কোন অনিয়মের বিরুদ্ধে নির্বিকার, বিচার ব্যবস্থা যখন অন্ধ, সংসদ যখন তুচ্ছ ব্যাপারে ঝগড়া-বিবাদের পালার মঞ্চ, তখন অধিকারহীন, সম্বলহীন, মানুষের না প্রাপ্তির বেদনা যেন প্রতিবাদের অগ্নিস্ফুলিঙ্গ হয়ে জ্বলে উঠে। সেই আগুনে ছাই-ভস্মে পরিণত হয় জনবিচ্ছিন্ন জন-মহাজন। অন্তত পৃথিবীর ইতিহাস তাই বলে। আপনি অন্ধ হলেই কি এই প্রতিবাদের মহাপ্রলয় এড়ানো যাবে? মন্ত্রী তাহলে তোমাদের চাওয়া কি? ছায়ামুর্তি দ্বয় তোমার পদত্যাগ। পূর্বেকার সকল ব্যর্থতার দায়ভার নিয়ে পদত্যাগ। এবার মন্ত্রী কিছুটা রাগতস্বরে পদত্যাগ কি ছেলের হাতের মওয়া পেয়েছ? কিংবা একশত টাকার নোটে ছাপানো চাহিবা মাত্রই ইহা বাহককে দিতে বাধ্য থাকিবে এরূপ বাধ্যবাধকতা। কই প্রহরী? কই অর্ধাঙ্গিনী?
কই আমার সন্তান-সন্ততি, চাকর-নফর? কই আমার একান্ত সহকারী? কিন্তু তার সেই চিৎকার যেন তার মাথার মস্তিষ্কের প্রতিটা স্নায়ুতন্তুতেই প্রতিফলিত হয়ে এক অসহ্য যন্ত্রণার সৃষ্টি করে। তীব্র মাথাব্যথায় কাতর হয়ে মন্ত্রী কোঁকাতে থাকে। ছায়ামুর্তিদ্বয় এবার বিদ্রুপের অট্টহাসিতে ফেটে পড়ে। আজ তার এই অপরাধীর ডাক কারও কর্ণ-কুহরে প্রবেশ করে না। ব্যাঘাত ঘটে না কারও সুখনিদ্রার। অন্যায়ের সহায় হয় না কোন প্রহরী। তোর অপরাধের আজ নেই কোন ভাগিদার।
যার অপরাধ, তার শাস্তি। যার ভার, তার কষ্ট। অতপর কিছুটা আলোয় দৃশ্যমান হয়ে ওঠে দিয়া আর রাজিবের ক্ষত-বিক্ষত দেহ। আতঙ্কিত হয়ে পড়ে মন্ত্রী। কিন্তু একি! মন্ত্রীকে একে একে চারপাশ থেকে ঘিরে ধরতে শুরু করে শত-সহ¯্র ক্ষত-বিক্ষত পঁচা রক্ত-মাংসের গন্ধযুক্ত দূর্ঘটনা কবলিত হতভাগ্য মানবাত্মার দল। সকলেই সমস্বরে বলতে থাকে,
“লাশ পড়ে, মন্ত্রী হাসে।
দেশময় প্রতিবাদ।
আমাদের সবার এক দাবি
মন্ত্রীমশায়ের পদত্যাগ।”
তাদের ভীড়ে যেন তীব্র শ্বাসকষ্ট অনুভব করতে শুরু করে মন্ত্রী। প্রাণবায়ু যেন দেহখাঁচা থেকে বের হবার যোগাড়। দেহময় অনুভূত হতে থাকে নরকের এক প্রাণ অসংহারী বিশাদময় যন্ত্রণা। কিন্তু এই ভূলোক-দূল্যোকে সকলেই গভীর ঘুমে। তার যন্ত্রণা যেন তারই। কেউ নেই তার বেদনায় সমব্যথি হওয়ার। চার পাশে তার প্রতিবাদী, অতৃপ্ত, দূর্ঘটনা কবলিত দেহাত্মাদের পৈচাশিক হাসি। এক তীব্র আতঙ্কে আকাশ-বাতাস বিদীর্ণ করা চিৎকার দিয়ে মন্ত্রীমশায়ের নিদ্রা ভঙ্গ। পাশে তার অর্ধ্বঙ্গিনী প্রশ্নবোধক মুখ নিয়ে মন্ত্রীমশায়ের দিকে তাকিয়ে। তার সারা গা বেয়ে তখনও বইছে যেন ঘামের স্রোতধারা।
লেখক : মেডিসিন ও মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞ
E-mail: [email protected]
বহুমাত্রিক.কম