Bahumatrik | বহুমাত্রিক

সরকার নিবন্ধিত বিশেষায়িত অনলাইন গণমাধ্যম

চৈত্র ১৪ ১৪৩০, শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪

থমকে গেছে খুলনার ময়ূর নদের দখলদার উচ্ছেদ

শেখ হেদায়েতুল্লাহ, খুলনা

প্রকাশিত: ১৪:২৩, ১০ এপ্রিল ২০১৯

প্রিন্ট:

থমকে গেছে খুলনার ময়ূর নদের দখলদার উচ্ছেদ

ছবি- সংগৃহীত

খুলনা :মহানগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে ময়ুর নদের অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ কার্যক্রম দুই মাস যাবত বন্ধ। অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ ও নদের স্বাভাবিক গতি ফিরিয়ে আনতে দখলদার উচ্ছেদ প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে যাওযায় নগরবাসীর শঙ্কা প্রভাবশালী দখলদাররা কি পার পেয়ে যাবে।

যদিও কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে সীমানা নির্ধারণের কাজ চলছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে ময়ূর নদসহ ২২ খালের অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ কার্যক্রম শুরু হবে। গত ৫ ফেব্রুয়ারি খুলনা সিটি কর্পোরেশন ও জেলা প্রশাসন সম্মিলিথভাবে দখলদার উচ্ছেদ কার্যক্রম শুরু করে।

খুলনা মহানগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনের অন্যতম অন্তরায় নগরীর পশ্চিম পাশ দিয়ে বয়ে চলা ময়র নদ ও নগরীর মধ্য দিয়ে বয়ে চলা ২২ খাল ভরাট হওয়া। বরাট হওয়া এসব খাল অবৈধভাবে প্রভাবশালী মহল দখল করে গড়ে তুলেছে বড় বহুতল ভবনসহ নানান স্থাপনা। খুলনা সিটি মেযর তালুকতার আব্দুল খালেক নির্বাচনের পূর্বে নগরবাসীকে প্রতিশ্রুতি দিযেছিলেন নগরীর অণ্রতম সমস্যা জলাবদ্ধতা নিরসন করবেন।

এছাড়া তিনি দায়িত্বগ্রহণের সময়েও দখলদারদের ব্যাপারে কটোর হুশিয়ারি উচ্চারণ করেন। মেয়র হিসেবে দ্বিতীয় দফায় দায়িত্ব নেয়ার পর সিটি মেয়র নগরীর সমস্যা দূরীকরণে বেশ কয়েকটি পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। যার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ময়ূর নদের অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ। তারই অংশ হিসেবে গত ৫ ফেব্রুয়ারি খুলনা জেলা প্রশাসনের সমন্বয়ে গঠিত কমিটি দখলদার উচ্ছেদ অভিযান শুরু করে। এ দিন নগরীর গল্লামারী ব্রিজ এলাকায় ময়ূর নদীর দুই পাড়ের অবৈধ কাঁচা, সেমিপাকা, পাকা স্থাপনা গুঁড়িয়ে দেয়া হয়। কয়েকদিন চলার পর হঠাৎ করে উচ্ছেদ অভিযান বন্ধ থাকায় নগরবাসীর মনে শঙ্কা জেগেছে ময়ুর নদ কি দখলদার মুক্ত হবে না ?

বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির মহাসচিব শেখ আশরাফ উজ জামান এ বিষয়ে বলেন, খুলনাবাসীর আন্দোলনের ফলে কেসিসি ও জেলা প্রশাসন ময়ূর নদের অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ অভিযান শুরু করে। ২/৩দিন চলার পর সেটি হঠাৎ করে বন্ধ হয়ে গেছে। এতে নগরবাসীর মাঝে শঙ্কার সৃষ্টি হয়েছে। আবারও কি অবৈধদখলদার উচ্ছেদ অভিযান মুখ থুবড়ে পড়ল। াসমযের বর্ষায় নগরীতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। ্এতে বর্ষাকালে কি অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে সেটি সহজে অনুমেয়। তাই বর্ষার আগেই দখলদার মুক্ত করতে হবে।

অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ কমিটির সদস্য সচিব ও খুলনা সিটি কর্পোরেশনের স্টেট অফিসার মো: নুরুজ্জামান এ বিষয়ে বলেন, খুলনা মহানগরীকে জলাবদ্ধমুক্ত করতে কেসিসি কর্তৃপক্ষ বদ্ধ পরিকর। ইতোমধ্যে ময়ূর নদের দখলদার উচ্ছেদ অভিযান শুরু করা হয়েছে। দীর্ঘদিন দখলের কবলে পড়ে নদটি তার সীমানা পরিবর্তন করেছে। তাই ম্যাপ অনুযায়ী সীমানা চিহ্নিত করা হচ্ছে। এটি সম্পন্ন হলেই আবারও উচ্ছেদ অভিযান শুরু হবে।
অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ কমিটির প্রধান খুলনার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ( রাজস্ব) সারোয়ার আহমেদ সালেহীন এ বিষয়ে বলেন, খুলনা সিটি কর্পোরেশনের সহযোগিতায় জেলা প্রশাসনের নেতৃত্বে ময়ূর নদীসহ মহানগরীর অভ্যন্তরীণ ও পার্শ্ববর্তী খালসমূহের অবৈধ দখল উচ্ছেদ কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। মহানগরীর ময়ূর নদীসহ ২২ খালের স্বাভাবিক গতি প্রবাহ ফিরিয়ে আনা, খুলনার সৌন্দর্য ফিরিয়ে আনা ও বসবাসের উপযোগী করার লক্ষ্যে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে সম্পূর্ণ দখলমুক্ত করা হবে। তিনি বলেন বর্তমানে ময়ূর নদ ও ক্ষুদের খালের সীমানা চিহ্নিত করা হচ্ছে। দ্রুততম সমযের মধ্যে আবারও উচ্ছেদ অভিযান শুরু হবে।

দুই যুগ আগেও ময়ূর নদীতে পালতোলা নৌকা চলতো। অনেক জেলে পরিবারের জীবিকার মূল উপজীব্য ছিল এ নদী। অথচ এখন দখল ও দূষণে কারণে ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে নদীটি। ১২ কিলোমিটার দীর্ঘ ময়ূর নদীর সাথে আগে রূপসা নদীর সরাসরি সংযোগ ছিল। দখলের কারণে নদীর নিজস্বতা হারিয়েছে। এই নদীর নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে ২০১৬ সালে ৫ কোটি ৭৮ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে খুলনা সিটি করপোরেশন।

বহুমাত্রিক.কম

Walton Refrigerator Freezer
Walton Refrigerator Freezer