ময়মনসিংহ : শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার বারমারী সাধু লিও’র খ্রিষ্টধর্মপল্লীতে স্থাপিত ফাতেমা রাণীর তীর্থস্থানে শুক্রবার বেলা ১২টায় রোমান ক্যাথলিক খ্রিষ্টভক্তদের দুইদিন ব্যাপি বাৎসরিক তীর্থ উৎসব পালিত হয়েছে। এই উৎসবে গিয়ে শুক্রবার রাতে বিষাক্ত মদ (চুঁ ) পান করে ৪ জন আদিবাসী গারো মারা গেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আদিবাসী গারো সম্প্রদায়ের জনৈক নেতা জানান, নালিতাবাড়ীর বারমারীতে ফাতেমা রাণীর তীর্থ উৎসবে যোগ দিয়ে আশপাশের গ্রামে গিয়ে গারো সম্প্রদায়ের সদস্যরা চুঁ (মদ) পান করে। এসময় বিষাক্ত মদ পান করে বিভিন্নস্থানের ৬ জন আদিবাসী গারো মারা যাওয়ার খবর তারা পেয়েছেন। তার মধ্যে ময়মমনসিংহের ধোবাউড়া উপজেলার দায়েরপাড়া গ্রামের মেরাডোনা ¤্রং (২৮) বিষাক্ত মদ পান করে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে রোববার ভোররাতে সে মারা যায়।
একই উপজেলার চন্দ্রকোণা গ্রামের হিজল রংখেং (২৫) মদ পান করে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে হালুয়াঘাটের জয়রামকুড়া হাসপাতালে নেয়া হলে গত শনিবার রাতে সে মারা যায়। এ ছাড়া দুর্গাপুরের বিরিশিরির অটুট থিগিদি (২৪) শনিবার রাতে মারা গেছে। এছাড়াও বিষাক্ত মদ পান করে গুরুতর অসুস্থ হয়ে মারা যায় নালিতাবাড়ির দাওধারা কাটাবাড়ি পাড়ার একজন মারা যাওয়ার খবর নিশ্চিত করেছে আদিবাসী গারো সম্প্রদায়ের জনৈক নেতা। তাবে তাদের নাম দিতে পারেন নি।
তীর্থ উদযাপন কমিটির সমন্বয়কারী পালপুরোহিত রেভারেন্ট ফাদার মনিন্দ্র এম. চিরান জানান, দেশের খ্রিষ্টভক্তদের প্রধান ধর্মগুরু কার্ডিনাল প্রেট্রিক ডি. রোজারিও সিএসসি প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত থেকে বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টায় খ্রিষ্টযাগ উৎসর্গ করেন। রাত সাড়ে আটটায় অনুষ্ঠিত হয় বিশাল আলোর মিছিল। নিজেদের পাপমোচনে এই মিছিলে হাজার হাজার খ্রিষ্টভক্তরা মোমবাতি জ্বালিয়ে প্রায় ২ কিলোমিটার পাহাড়ি পথ অতিক্রম করে এসে দেশের সর্ববৃহৎ ৪৮ ফুট উচু মা মারিয়ার মুর্তির কর কমলে ভক্তিশ্রদ্ধা জানান।
এছাড়াও সান্ধ্যকালীন খ্রিষ্টযাগ, ম্যাগাজিনের মোড়ক উন্মোচন, গীতি আলেখ্য ও নিশি জাগরন অনুষ্ঠিত হয়। শুক্রবার সকাল ৮টায় জিবন্ত ক্রুশের পথ ও বেলা ১২টায় মহা খ্রিষ্টযাগের মধ্যদিয়ে দুই দিনব্যাপি তীর্থ উৎসবের সমাপ্তি হয়।
বারমারী খ্রিষ্টধর্মপল্লীর সহ-সভাপতি ও নালিতাবাড়ী ট্রাইবাল ওয়েল ফেয়ার এসোসিয়েশনের (টিডব্লিউএ) চেয়ারম্যান মি. লুইস নেংমিনজা জানান, এবারের তীর্থ উৎসবে বাংলাদেশের প্রধান খ্রিষ্টধর্মগুরু কার্ডিনাল পেট্রিক ডি রোজারিও সিএসসি প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া তাকে সহযোগিতা করেন ময়মনসিংহ খ্রিষ্টধর্ম প্রদেশের বিশপ পনেন পৌল কুবি সিএসসি। এতে দেশি-বিদেশি প্রায় ২৫ হাজার খ্রিষ্টভক্তগন অংশগ্রহণ করেন।
বহুমাত্রিক.কম