তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে যুক্তরাজ্যের লন্ডন শহরকে দু’ ভাগে বিভক্ত করে বয়ে চলা টেমস নদীর উৎস অন্য যে কোনও সময়ের চেয়ে বেশিমাত্রায় শুকিয়ে গেছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, খরার কবলে পড়তে চলেছে যুক্তরাজ্য। এদিকে বিশেষজ্ঞদের এক বৈঠকের পর ইংল্যান্ডের বিস্তৃত এলাকা জুড়ে আনুষ্ঠানিকভাবে খরা ঘোষণা করা হয়েছে।
ইংল্যান্ডের দক্ষিণে অবস্থিত টেমস নদী ২১৫ মাইল (৩৫৬ কিলোমিটার) দীর্ঘ। প্রাকৃতিক জলপ্রবাহে লন্ডনের বড় উৎস এই নদী। সাধারণত গ্রীষ্মকালে এটির উৎস শুষ্ক থাকে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ বছর আগের তুলনায় নদীর জল অনেক কমে গেছে। নদী সংরক্ষণ বিষয়ক সংস্থা রিভার্স ট্রাস্টের কর্মকর্তা এলিসডেয়ার নাউল বলেছেন, ‘এটি খুব অগভীর হয়ে পড়েছে। টেমসের শুকনো জায়গায় গিয়ে দাঁড়াতে আপনাদের খুব বেশি দূরে যেতে হবে না। সত্যিকার অর্থে এ সময়ে ঐ শুষ্ক জায়গা ভেজা থাকার কথা ছিল। শুধু তাই নয়, সব সময়ই তা ভেজা থাকা উচিত।’
তিনি আরও বলেন, তীব্র গরম এবং কম বৃষ্টির কারণে যুক্তরাজ্যের দক্ষিণাঞ্চলের দুটি জল সরবরাহ কোম্পানি হোসপাইপ ও স্প্রিঙ্কলার সিস্টেম ব্যবহারের ওপর সাময়িক নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। টেমস ওয়াটার নামের আরও একটি কোম্পানি একই রকম ব্যবস্থা নেওয়ার পরিকল্পনা করেছে। নাউল এও বলেন, অগভীর, উষ্ণ জলে কম অক্সিজেন থাকে, যা মাছ এবং অন্যান্য বন্যপ্রাণীর জন্য অতীব প্রয়োজন।
দেশটির যে আটটি এলাকায় খরা ঘোষণা করেছে সেগুলো হল ডেভন অ্যান্ড কর্নওয়াল, সোলেন্ট অ্যান্ড সাউথ ডাউনস, কেন্ট অ্যান্ড সাউথ লন্ডন, হার্টস অ্যান্ড নর্থ লন্ডন, ইস্ট অ্যাঙ্গিলা, টেমস, লিঙ্কোনশায়ার অ্যান্ড নর্দাম্পটনশায়ার এবং ইস্ট মিডল্যান্ডস। অন্যদিকে, ব্রিটেনের আবহাওয়া অধিদপ্তর বৃহস্পতিবার থেকে তীব্র তাপপ্রবাহের পূর্বাভাস থাকায় চার দিনের জন্য চরম তাপমাত্রার দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
যুক্তরাজ্যের আবহাওয়া অফিস বলছে, ১৯৩৫ সালের পর সবচেয়ে বেশি শুষ্ক ছিল গত জুলাই মাস। এ সময়ে ২৩ দশমিক ১ মিলিমিটার গড় বৃষ্টি রেকর্ড হয় অর্থাৎ ৩৫ শতাংশ বৃষ্টিপাত হয়েছে দেশটিতে। যুক্তরাজ্যের কিছু অংশে এটি ছিল এযাবত্কালের সবচেয়ে শুষ্ক মাস।