-লেখক। ছবি: সংগৃহীত
অচেনা পরিবেশ, শান্ত জগৎ সংসার- এইটারই দরকার অনুভব করতাম। আধুনিক প্রমোদ, অযথা চাকচিক্য, টাকার প্রতি দুর্নিবার আকর্ষণ জীবনকে বিপথগামী করে চলেছিল। এই সুযোগে অর্থনীতিতে অনেক অনর্থের আমদানী ঘটেছে, যেগুলি পরিহার্য।
শহুরে কৃত্রিম জীবন থেকে মাটির কাছে ফেরা, ছোটদের কাদামাটি মেখে হা ডু ডু , দারিয়াবান্ধা, চু কিৎ কিৎ প্রভৃতি খেলার মধ্যে নির্ভেজাল আনন্দ গ্রহণ করার মধ্যে যে সারল্য আছে, তা কী বুঝতে শিখব?
একটি হারমোনিয়াম/ তানপুরা, একজেড়া বাঁয়া-তবলা, একটি মাউথ অর্গান বা একটি পিয়ানো একর্ডিয়ান বা আরও অনেক কম অনুষঙ্গ নিয়ে দিকপাল শিল্পীরা গেয়েছেনআধুনিক, রাগাশ্রয়ী, রবীন্দ্রসঙ্গীত, অতুলপ্রসাদ-দ্বিজেন্দ্রলাল-নজরুলগীতি, মিন্টু দাশগুপ্তের প্যারডি গান, ভানু-জহরের কৌতুক সামনে বসে দেখেছি। এগুলো কী old-fashioned?
একগাদা কর্ণপটাহ-বিদারী যন্ত্র নিয়ে আজকের শিল্পীরা নিজেদের অযোগ্যতা ঢাকতে চেষ্টা করেন, কষ্ট করে তালিম না নিয়েই- যেন তারা child prodigy-পেট থেকে পড়েই ওস্তাদ হয়ে গেছে। ঝুলিতে আছে ২-৩ টা গান, তাই ঘুরিয়ে ফিরিয়ে গাওয়া। বাংলাভাষায় গানের কথায় যে কবিত্ব, যে simplicity, যে সৌন্দর্য ছিল, সেটা এরা জানে এবং স্বীকারও করে-তবু সুপথে আসে না। বিচারক-মণ্ডলীও দোষে দুষ্ট- প্রতিযোগিতা-নম্বর-সর্বস্ব চিন্তায় কত উঠতি শিল্পীর চোখে জল ঝরান।
বাংলাভাষা শ্রেষ্ঠ, বাংলাগান মরমী-সম্পদশালী এই বোধ আসুক। আমরা নকলনবিশী ছেড়ে মাটির কাছাকাছি ফিরে আসি, একজন সঙ্গীতপ্রেমী ও সাধারণ মাপের গায়ক হিসাবে এইটাই আমার প্রার্থনা।
কলকাতা, ৭ বৈশাখ ১৪২৭
বহুমাত্রিক.কম