ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত ‘ঘ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারেননি ৫৫ বছর বয়সে পরীক্ষায় অংশ নেওয়া আলোচিত বেলায়েত শেখ।
মঙ্গলবার দুপুর ১টার দিকে আনুষ্ঠানিকভাবে এ ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ করেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান।এ সময় উপস্থিত ছিলেন সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক জিয়া রহমান।
ফলাফল ঘোষণার পর আলোচিত বেলায়েতের সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, তিনি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারেননি।
গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলায় বেলায়েত শেখের বাড়ি। দুই ছেলে ও এক মেয়ের জনক তিনি। বড় ছেলে বিয়ে করে ব্যবসা করছেন। ছোট ছেলে শ্রীপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে একাদশ শ্রেণিতে পড়ছেন। একমাত্র মেয়েকে গাজীপুরে বীর মুক্তিযোদ্ধা রহমত আলী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে স্নাতক প্রথম বর্ষে পড়ার সময় বিয়ে দেন বেলায়েত।
বেলায়েত শেখের শিক্ষাজীবন সম্পর্কে কথা বলে জানা যায়, ১৯৮৩ সালে তিনি এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিলেন। সে সময় বাবা গুরুতর অসুস্থ হয়ে যাওয়ায় সংসারের হাল ধরতে হয়েছে। পরে আর শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যেতে পারেননি।
বেলায়েত বলেন, অভাবের কারণে আমি এসএসসি পরীক্ষা দিতে পারেনি। পরে সংসারের হাল ধরেছি। সেই সঙ্গে ভাইদের পড়াশোনার চেষ্টা করেছি, সেটাও পারিনি। এরপর নিজের ছেলে ও মেয়েদের পড়াতে চেয়েছিলাম, সেখানেও ব্যর্থ হই। পরে ৫০ বছর বয়সে ২০১৭ সালে নবম শ্রেণিতে ভর্তি হয়ে লেখাপড়া শুরু করি।
তিনি বলেন, ২০১৯ সালে ঢাকার বাসাবোর দারুল ইসলাম আলিম মাদ্রাসা থেকে এসএসসি পাস করি। আর ২০২১ সালে রাজধানীর রামপুরার মহানগর কারিগরি স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হই।
এসএসসিতে জিপিএ ৪.৪৩ ও এইসএসসিতে জিপিএ ৪.৫৮ পান বলে জানান বেলায়েত।
বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার জন্য শ্রীপুরের মাওনার সাইফুর’স শাখায় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির কোচিং করছেন বলে জানান তিনি।
২০১৭ সালে পড়াশোনা শুরু করেন বেলায়েত শেখ। তিনি বলেন, প্রথমদিকে একটু কঠিনই ছিল। কারণ সে সময় আমার কাছের মানুষজনও আমাকে নিয়ে হাসি-ঠাট্টা করত। তবে একটা সময় গিয়ে সেটা ঠিক হয়ে যায়।
বেলায়েত বলেন, নিজেকে বয়স্ক ভাবি না, যুবক ভাবি। কিছু চুল পেকে গেছে। এগুলো কালি দিয়ে রাখি। কারণ কালি দিয়ে না রাখলে এগুলোর জন্য নিজেকে বয়স্ক মনে হয়। আর তখন মনটা দুর্বল হয়ে যায়।