নমুনা পরীক্ষার নামে ভুয়া করোনা টেস্ট রিপোর্ট তৈরির অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া আলোচিত জেকেজি হেলথ কেয়ারের চেয়ারম্যান চিকিৎসক সাবরিনা আরিফ চৌধুরীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা কার্যালয়ে নেওয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে তেজগাঁও থানার ওসি বলেন, আমরা মামলার ডকেট ও আসামিকে গোয়েন্দা কার্যালয়ে পাঠিয়ে দিয়েছি। এই মামলায় তিন দিনের রিমান্ডে পাওয়া আসামি ডা. সাবরিনা চৌধুরীকে ডিবি জিজ্ঞাসাবাদ করবে।
এর আগে সোমবার রাতে রাজধানীর তেজগাঁও থানায় জেকেজির বিরুদ্ধে দায়ের করা প্রতারণার মামলার তদন্তভার ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) তেজগাঁও বিভাগে হস্তান্তর করা হয়েছে। ডিএমপি কমিশনারের নির্দেশে ওই মামলার তদন্তভার হস্তান্তর করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) গোলাম মোস্তফা রাসেল জানান, জেকেজির বিরুদ্ধে করা মামলার তদন্ত আমরা করছি।
গতকাল (১৩ জুলাই) ডা. সাবরিনা আরিফকে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে চার দিনের রিমান্ড চেয়ে একটি প্রতিবেদন দাখিল করে তেজজগাঁও থানার পরিদর্শক (অপারেশন) হাসনাত খন্দকার। শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম শাহিনুর রহমান তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এদিকে জেকেজির বিরুদ্ধে করা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছেন, মামলার আসামি ডা. সাবরিনা আরিফ জেকেজি হেলথ কেয়ার নামক প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান। তিনি তার প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে মামলার ঘটনায় জড়িত তার অপরাপর সহযোগী আসামিদের নিয়ে সরকারি প্রতিষ্ঠানের নাম এবং লোগো ব্যবহার করে প্রতারণার মাধ্যমে করোনাভাইরাস সংক্রমণের বিষয়ে পজিটিভ জাল রিপোর্ট সরবরাহ করে নিরীহ লোকদের টাকা আত্মসাৎ করেন। এরকম অবহেলাজনিত কাজের সাহায্যে জীবন বিপন্নকারী রোগের সংক্রমণ বিস্তারে সহযোগিতা করে আসছেন তিনি।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ডা. সাবরিনা স্বাস্থ্য অধিদফতরের ওপর বিভিন্ন সূত্রে প্রভাব খাটিয়ে বিভিন্ন সরকারি কাজ পাইয়ে দিতেন। যার ফলশ্রুতিতে জেকেজি হেলথ কেয়ার বেপরোয়াভাবে সমাজে এইরূপ ক্ষতিসাধন করে বিপুল অর্থ হাতিয়ে নিত মর্মে সাক্ষ্য পাওয়া যাচ্ছে। ডা. সাবরিনা তার অপরাপর সহযোগীদের সহায়তায় করোনাভাইরাস মহামারির সময় অবৈধভাবে লাভবান হওয়ার উদ্দেশ্যে সমাজবিরোধী এবং ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ চালিয়ে আসছেন।
তার প্রতিষ্ঠান জেকেজি ঢাকা শহরসহ সারা দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোগীদের স্যাম্পল কালেকশন করে তা পরীক্ষা না করে হাজার হাজার ভুয়া সার্টিফিকেট (নেগেটিভ/পজিটিভ) প্রদান করেছে। এছাড়া ওই প্রতিষ্ঠান থেকে বাংলাদেশ থেকে বিদেশগামী বাংলাদেশি নাগরিকদের বিদেশে যাওয়ার পূর্বে করোনাভাইরাস সংক্রমণের বিষয়ে জাল বা ভুয়া রিপোর্ট প্রদান করা হয়েছে।