Bahumatrik | বহুমাত্রিক

সরকার নিবন্ধিত বিশেষায়িত অনলাইন গণমাধ্যম

বৈশাখ ১১ ১৪৩১, বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪

ডিজিটাল সেবায় আধুনিক ও উন্নত জীবন

এস এম মুকুল

প্রকাশিত: ২৩:৪২, ১৪ মে ২০২১

প্রিন্ট:

ডিজিটাল সেবায় আধুনিক ও উন্নত জীবন

-লেখক

সময় বদলাচ্ছে। জীবনও থেমে নেই। আধুনিক সময়ের সাথে জীবনযাপনের আদলও পরিবর্তন হচ্ছে। প্রযুক্তির বহুমাত্রিক ব্যবহাওে আরো অধুনিক ও উন্নত হচ্ছে আমাদেও জীবনযাপন। এখন ঘরেবসে অনলাইনে খাবারের অর্ডার করে ঘরে বসে খাবার পাওয়া যায়। পাওয়া যায় বই, পোশাকসহ ব্যবহার্য সব পণ্যই। ঘওে বসেই অ্যাপের মাধ্যমে গাড়ি ডেকে চলে যাচ্ছি গন্তব্যে।

টাকা পাঠাচ্ছি ঘওে বসে, টাকা আনছি ঘওে বসে। এমনকি নগদ টাকার ব্যবহারও কমছে। চিকিৎসা দরকার, দরকার চিকিৎসকের সাথে সংযোগ, জমির দলিল, স্বাস্থ্যতথ্য, দুর্নীতি অভিযোগ, সরকারের তথ্য জানা, নারী নির্যাতন, সামাজিক অপরাধ নিধন সবকিছুই এখন প্রযুক্তির কল্যাণে সহজতর হয়ে উঠেছে। আর এসবই সম্ভব হয়েছে ডিজিটাল বাংলাদেশ ঘোষণার মধ্য দিয়ে।

গত দুই দশকে দেশের ব্যাংক ব্যবস্থায় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। সাধারণ ব্যাংকিং পরিবর্তিত হয়েছে ডিজিটাল ব্যাংকিং। আর ইন্টারনেট সেবা ও প্রযুক্তিনির্ভরতায় ব্যাংকিং সেবা প্রকৃত অর্থেই গ্রাহকের হাতের মুঠোয় চলে এসেছে। ডিজিটাল সেবার হাত ধরে দীর্ঘ ১০ বছরে বদলে গেছে তৃণমূল বাংলার চিত্র, শহরের সেবা পৌঁছে গেছে গ্রামে। সহজ ও আধুনিক হয়েছে নাগরিক জীবন।

ই-পেমেন্টও জনপ্রিয় হয়ে উঠছে বাংলাদেশে। মানুষ এখন ডিজিটাল ওয়ালেটের দিকে ঝুঁকছেন। বিকাশ, রকেটের মাধ্যমে অনেকেই লেনদেন করেন এবং এটি বেশ জনপ্রিয়। এছাড়াও বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান পেয়জা`র বাংলাদেশ অপারেশন আছে। ডিজিটাল এসব কার্ডের মাধ্যমে দেশ বিদেশ থেকে পণ্য কেনাবেচাসহ লেনদেন হচ্ছে। মানুষ এখন ব্যাংকে না গিয়ে দৈনন্দিন ছোট ছোট নানা প্রয়োজনে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের আশ্রয় নিচ্ছে।

ছোটখাটো লেনদেনে ব্যবহার হচ্ছে মোবাইল ব্যাংকিং। নানা ধরনের পরিষেবা বিল (বিদ্যু, ওয়াসা, গ্যাস, টেলিফোন) পরিশোধ, স্কুল-কলেজের বেতন, অনলাইনে কেনাকাটা, সরকারি ভাতা, পেনশন, বাস ট্রেন থেকে শুরু করে প্লেনের টিকিট ক্রয়, বিমার প্রিমিয়াম পরিশোধ, মোবাইল রিচার্জ, বিভিন্ন অনুদান, সাহায্য ইত্যাদি প্রদানে ডিজিটাল মাধ্যম ব্যবহারে জনপ্রিয়তা বাড়ছে।

ঘরে বসেই খুব সহজেই ব্যাংক হিসাব থেকে টাকা আনা সম্ভব হচ্ছে মোবাইল ব্যাংকিং হিসাবে। আবার মোবাইল ব্যাংকিং হিসাব থেকেও ব্যাংকে টাকা জমা করা যাচ্ছে। ক্রেডিট কার্ড কিংবা ব্যাংকঋণের কিস্তির টাকাও জমা দেওয়া যাচ্ছে এর মাধ্যমে। এভাবেই শহর, বন্দর এমনকি প্রত্যন্ত গ্রামের সব শ্রেণি-পেশার মানুষের কাছে থাকা মোবাইল ফোনটি যেন নিজের জন্য একটি ব্যাংক হয়ে উঠছে।

আশার খবরটি হলো- করোনা মহামারির কারণে এশিয়া ও প্যাসিফিক অঞ্চলের মানুষ প্রযুক্তি নির্ভর লেনদেন পদ্ধতি ব্যবহারে উৎসাহী হয়ে উঠছেন। এই অঞ্চলের দেশগুলোর ৯৪ শতাংশ বাসিন্দা বলছেন, তারা আগামী বছরগুলোতে লেনদেনের ক্ষেত্রে কিউআর কোড, ডিজিটাল বা মোবাইল ওয়ালেট, ইনস্টলমেন্ট প্ল্যানস, ক্রিপ্টোকারেন্সি ও বায়োমেট্রিকস এসব পদ্ধতি বা সেবার যেকোনো একটি ব্যবহারের কথা বিবেচনা করবেন। মাস্টারকার্ডের সাম্প্রতিক এক সমীক্ষা তথা গ্রাহক জরিপে এমন তথ্য ওঠে এসেছে।

বাংলাদেশে যোগাযোগ খাতের অ্যাপভিত্তিক সেবাগুলোর চাহিদা বাড়ছে। আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান উবার বাংলাদেশে গাড়িতে করে যাত্রী পরিবহণের পাশাপাশি বাইক সেবাও দিচ্ছে। বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান ‘পাঠাও` খুব ভালো করছে। নাগরিক জীবনে খাবারের সংস্কৃতি অনেকটাই বদলে দিয়েছে এই খাবারের হোম সার্ভিসগুলো। পছন্দের রেস্টুরেন্টের খাবার এক ঘন্টার মধ্যে পৌঁছৈ যাচ্ছে নগরবাসীর টেবিলে।

আর সৌখিন নগরবাসী এসব সুবিধা উপবোগ কওে জীবনকে সাচ্ছন্দময়্য কওে তুলছেন। জনপ্রিয় হয়েছে পণ্যের ডিজিটাল মার্কেট ধরনের স্টার্টআপগুলোও- বাগডুম ডটকম, এসো ডটকম, রকমারি ডটকম, চালডাল ডটকম, প্রিয়শপ ডটকম, আইটি বাজারবিডিসহ অসংখ্য অনলাইনভিত্তিক এসব মার্কেটপ্লেস আছে। এরা সাধারণত বিজনেস-টু-কনজিউমার বা বিটুসি পদ্ধতিতে কাজ করে। সময় বাঁচাতে ও ঝামেলা এড়াতে নাগরিকরা এসব সেবায় অভ্যস্ত হয়ে উঠছেন।

স্বাস্থ্যসেবায়ও অনেক ডিজিটাল অ্যাপ কাজ করছে- ডক্টোরোলা, জিয়ন, ইজিপ্রেস, সিএমইডিসহ কোনো কোনোটি খুব ভালো করছে। উল্লেখ করা যেতে পারে, ডক্টোরোলা যুক্তরাষ্ট্র-ভিত্তিক ফোর্বস ম্যাগাজিনের স্টার্টআপ কোম্পানির তালিকায় স্থান করে নিয়েছে। ওই তালিকায় পুরো পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বেছে বেছে মোট ৮টি কোম্পানির নাম উল্লেখ করা হয়েছে। তার মধ্যে ডক্টোরোলার স্থান ষষ্ঠ। শিক্ষাক্ষেত্রেও অনেকগুলো ডিজিটাল স্টার্টআপ গড়ে উঠেছে যেমন- টেন মিনিট স্কুল।

বেসরকারি সেবা পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে ২০১০ সালের ১১ নভেম্বর মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের চার হাজার ৫০১টি ইউনিয়নে একযোগে ইউনিয়ন তথ্য ও সেবা কেন্দ্র উদ্বোধন করেন, যা বর্তমানে ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার (ইউডিসি) নামে পরিচিত। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের বাস্তবায়নাধীন ও ইউএনডিপির সহায়তায় পরিচালিত এসপায়ার টু ইনোভেট (এটুআই) প্রগ্রাম শুরু থেকেই এই ডিজিটাল সেন্টারগুলোর কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে।

দেশব্যাপী ছয় হাজার ৬৮৬টি ডিজিটাল সেন্টারে ২৭০টির অধিক সরকারি-বেসরকারি সেবা প্রদান করছে। ২০২০ সাল পর্যন্ত ডিজিটাল সেন্টার থেকে মোট ৫৫.৪ কোটি সেবা প্রদান করা হয়েছে এবং এর মাধ্যমে নাগরিকদের ১৬৮ কোটির সমপরিমাণ কর্মঘণ্টা ও ৭৬ হাজার ৭৭৫ কোটি টাকা ব্যয় সাশ্রয় হয়েছে। প্রনিধানযোগ্য বিষয় হচ্ছে এসব ডিজিটাল সেন্টার থেকে ২৭০-এর অধিক সেবা প্রদান করে থাকে।

এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো জমির পর্চা, নামজারি, ই-নামজারি, পাসপোর্টের আবেদন ও ফি জমাদান, জাতীয় পরিচয়পত্র, পাসপোর্ট, হজ রেজিস্ট্রেশন, সরকারি সেবার ফরম, টেলিমেডিসিন, জীবন বীমা, বিদেশে চাকরির আবেদন, এজেন্ট ব্যাংকিং, মোবাইল ব্যাংকিং, বাস-বিমান-লঞ্চ টিকেটিং, মেডিক্যাল ভিসা, ডাক্তারের সিরিয়াল নেওয়া, মোবাইল রিচার্জ, সিম বিক্রি, বিভিন্ন ধরনের কম্পিউটার ও কারিগরি প্রশিক্ষণ, ই-মেইল, কম্পোজ-প্রিন্ট-প্রশিক্ষণ, ফটো তোলা, ফটোকপি, সরকারি ফরম ডাউনলোড করা, পরীক্ষার ফলাফল জানা, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির আবেদন করা, অনলাইনে ভিসার আবেদন করা, কৃষি পরামর্শ ও তথ্য সেবা ইত্যাদি।

বাংলাদেশের সকল নাগরিক সুবিধা ডিজিটাল সেবার আওতায় আনার লক্ষ্যে জাতীয় হটলাইন নাম্বারে দেওয়া হচ্ছে বিভিন্ন সেবা। তারমধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো-করোনার জন্য জাতীয় কল সেন্টার ৩৩৩, করোনার জন্য জাতীয় স্বাস্থ্য বাতায়ন ১৬২৬৩, জাতীয় হেল্পলাইন নম্বও ১০৯, বাংলাদেশের জরুরি কল সেন্টার ৯৯৯, দুর্নীতি দমন কমিশনের কল সেন্টার ১০৬, সরকারি আইনি সহায়তা কল সেন্টার ১৬৪৩০, কৃষি বিষয়ক যে কোন পরামর্শের জন্য কলসেন্টার ১৬১২৩, শিশু সহায়তামুলক কল সেন্টার ১০৯৮, জাতীয় তথ্যবাতায়ন কল সেন্টার ৩৩৩, বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্য কল সেন্টার ১৬২৬৩, মানবাধিকার সহায়ক কল সেন্টার ১৬১০৮, আপনার ইউনিয়নের সকল তথ্য জানতে কল সেন্টার ১৬২৫৬, বাংলাদেশ রেলওয়ে কল সেন্টার ১৩১, জাতীয় পরিচয়পত্র তথ্য কল সেন্টার ১০৫, বিটিআরসি কল সেন্টার ১০০, বিটিসিএল কল সেন্টার ১৬৪২০ প্রভৃতি।

৩৩৩ : এই নম্বরে ফোন করলে করোনার তথ্য, খাদ্য সহায়তাসহ অনেক বিষয়ে সরকারি তথ্য সহায়তা পাওয়া যাচ্ছে। সরকারি তথ্যসেবা নম্বর ৩৩৩ এ কল করে যে কেউ যেকোন সময় নিতে পারবেন এই সেবাটি। যারা বাসায় অবস্থান করছেন তাঁদের জন্য রয়েছে সরাসরি বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের পরামর্শ আর কর্মহীন মানুষের জন্য রয়েছে সরকারি ত্রাণ সুবিধা। বাংলাদেশের যেকোনো মোবাইল বা টেলিফোন থেকে ৩৩৩ নম্বরে ডায়াল করে দেশের যেকোন প্রান্ত থেকে ৬৪টি জেলায় অবস্থিত বিভিন্ন সরকারি কার্যালয়, সরকারি বিভিন্ন তথ্য সেবা, বিভিন্ন সামাজিক সমস্যার প্রতিকার, সরকারি কর্মকর্তাদের তথ্য এবং জেলা ও পর্যটন সম্পর্কিত তথ্য পাচ্ছেন নাগরিকরা।

বিভিন্ন সামাজিক সমস্যার সমাধান করার ব্যাপারেও সাহায্য চাইতে পারবেন। ভূমি সম্পর্কিত ও ভূমি অফিসের যাবতীয় নাগরিক তথ্য এই কল সেন্টার থেকেই পাবেন। ভোক্তা অধিকার সম্পর্কিত বিষয়, যেমন ভেজাল পণ্য উৎপাদন/বিক্রি সংক্রান্ত অভিযোগ করতে পারবেন ও তথ্য দিতে পারবেন। বাল্যবিবাহ, যৌতুক, ইভ টিজিং ইত্যাদি সামাজিক সমস্যা থেকে উত্তরণের সমাধান চাইতে পারবেন কিংবা আপনার এলাকায় এ ধরনের ঘটনা ঘটতে দেখলে তথ্য দিতে পারবেন। চোরাচালান, মাদকদ্রব্য ক্রয়-বিক্রয়, জুয়া, সরকারি সম্পদ দখল/চুরি প্রভৃতি সম্পর্কে অভিযোগ করতে পারবেন।

১০৬ : দুর্নীতি ও অনিয়মের তথ্য সরাসরি জানাতে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) হটলাইন ‘১০৬’। বিনা খরচে এবং যে কোন মোবাইল বা টেলিফোন থেকে এই নাম্বারে কল করে দুদককে দুর্নীতির তথ্য, অভিযোগ জানানো যাবে। অফিস চলাকালীন সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত এই নম্বরে ফ্রি কল করে দুর্নীতির তথ্য জানানো যাবে।

৯৯৯ : জরুরি সেবা বাংলাদেশ পুলিশের অধীনে পরিচালিত একটি জরুরি কল সেন্টার। এখান থেকে জরুরি পুলিশ, জরুরি ফায়ার সার্ভিস ও জরুরি এ্যাম্বুলেন্স সেবা প্রদান করা হয়। দেশের যে কোন প্রান্ত থেকে যে কোন ব্যক্তি ৯৯৯ কল করার মাধ্যমে এ সকল জরুরি সেবা গ্রহন করতে পারছেন। বর্তমানে এই কল সেন্টারে শতাধিক এজেন্ট জরুরি সেবা প্রদানে কাজ করে যাচ্ছে। ৯৯৯ নম্বরে ডায়াল করলেই মিলছে জরুরি অ্যাম্বুলেন্স, ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশি সেবা। কল করতে কোনও টাকা খরচ হয়না।

মোবাইল ফোনে টাকা না থাকলেও বিপদগ্রস্ত যেকোনও নাগরিক দেশের যেকোনও প্রান্ত থেকে ৯৯৯ এর মাধ্যমে পুলিশসহ অন্যান্য জরুরি সেবা সংস্থাগুলোর সাহায্য নিতে পারবেন। জরুরি সেবা ছাড়াও কোনও অপরাধ সংঘটিত হতে দেখলে, প্রাণনাশের আশঙ্কা দেখা দিলে, কোনও হতাহতের ঘটনা চোখে পড়লে, হতাহতের আশঙ্কা তৈরি হলে, আশেপাশে দুর্ঘটনা ও আগুনের ঘটনা ঘটলে ৯৯৯ এ কল দিয়ে সহায়তা পাবেন।

১৬১২৩ : কৃষি কল সেন্টারের শর্ট কোড নম্বর ১৬১২৩ -এ যে কোন অপারেটরের মোবাইল ফোন থেকে প্রতি মিনিটে ২৫ পয়সা হারে কল করে কৃষকরা কৃষি, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ বিষয়ে যে কোন সমস্যার তাৎক্ষণিক বিশেষজ্ঞ পরামর্শ পাচ্ছেন । শুক্রবার ও অন্যান্য সরকারি ছুটির দিন ছাড়া প্রতিদিন সকাল ৭টা থেকে রাত ৯টার মধ্যে ১৬১২৩ নাম্বারটি থেকে বর্তমানে কৃষি কল সেন্টারের এ সেবাটি দেয়া হচ্ছে।
১৬৪০২: রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিযোগাযোগ সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানি লিমিটেড (বিটিসিএল) ২৪ ঘণ্টার একটি সার্বক্ষণিক কল সেন্টার ‘১৬৪০২’ চালু করেছে।

কল সেন্টারের মাধ্যমে গ্রাহকেরা টেলিফোন, ইন্টারনেট, খুদে বার্তাসংক্রান্ত অভিযোগ জানাতে পারবেন।
১৬২৬৩: স্বাস্থ্য বাতায়ন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রনালয়ের আওতাধীন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এমআইএস বিভাগ কর্তৃক পরিচালিত একটি সেবা। স্বাস্থ্য বাতায়নের হেল্পলাইন নম্বর ১৬২৬৩-তে কল করে আপনি স্বাস্থ্য সংক্রান্ত যেকোন বিষয়ে সরাসরি ডাক্তারের পরামর্শ নিতে পারেন। স্বাস্থ্যবাতায়ন থেকে আপনি সরকারী হাসপাতাল, ডাক্তারের তথ্য কিংবা স্বাস্থ্যসেবা বিষয়ক অন্যান্য যেকোন তথ্য এবং ফোন নাম্বার পেতে পারেন। সরকারী-বেসরকারী স্বাস্থ্য সেবা অথবা হাসপাতাল বিষয়ক আপনার কোন অভিযোগ কিংবা পরামর্শ থাকলেওএই নম্বরে জানাতে পারেন।

১০৯২২: নারী ও শিশুদের জন্য সঠিক সময়ে দ্রুততার সাথে সঠিক তথ্য প্রাপ্তি একটি চলমান সমস্যা। এই সমস্যা দূরীকরণে প্রকল্পের মাধ্যমে ঢাকায় জাতীয় মহিলা সংস্থায় প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে একটি কল সেন্টার । কৃষি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, ব্যবসা, জেন্ডার, আইন এই ছয়টি বিষয়ের প্রতিটির উপর একজন করে বিশেষজ্ঞ কল সেন্টারে এজেন্ট হিসেবে কাজ করছে এবং ১০৯২২ হটলাইন নম্বরে ফোন করার মাধ্যমে দেশের যে কোন স্থান থেকে যে কেউ এই বিশেষজ্ঞগণের সেবা গ্রহণ করতে সক্ষম। এক সাথে ছয় জন সেবাগ্রহীতাকে সেবা প্রদান করার মত সুবিধা কলসেন্টারটিতে রয়েছে।

১০৯০ : দূর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে মোবাইর ফোনের মাধ্যমে দুর্যোগের আগাম বার্তা চাহিদা মোতবেক অবহিতকরেণর জন্য টোল ফ্রি পদ্ধতি চালু করা হয়েছে। যে কোন মোবাইল ফোন হতে ১০৯০ টোল ফ্রি নম্বরে ডায়াল করে ১ ডায়াল করলে সমূদ্রগামী জেলেদের জন্য আবহাওয়া বার্তা; ২ ডায়াল করলে নদী বন্দরসমূহের জন্য সতর্ক সংকেত; ৩ ডায়াল করলে দৈনন্দিন আবহাওয়া বার্তা; ৪ ডায়াল করলে ঘূর্ণিঝড়ের সতর্ক সংকেত; ৫ ডায়াল করলে দেশের বন্যা তথা বিভিন্ন নদ/নদীর পানি হ্রাসবৃদ্ধি অবস্থা সম্পর্কিত তথ্য অবহিত হওয়া যাবে।

১০৯৮: শিশুদের সুরক্ষায় দেশব্যাপী সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সমাজসেবা অধিদফতরের অধীনে ইউনিসেফের সহায়তায় চাইল্ড হেল্পলাইন ১০৯৮ চালু হয়েছে। দেশের যেকোনো প্রান্তের কোনো শিশু কোনো ধরনের সহিংসতা, নির্যাতন ও শোষনের শিকার হলে শিশু নিজে অথবা অন্য যে কোন ব্যক্তি বিনামূল্যে ১০৯৮ হেল্পলাইনে ফোন করে সহায়তা চাইতে পারবেন । এক্ষেত্রে আপনার প্রতিকার চাইবার পথটি সহজ হয়ে যাবে। ‘১০৯৮’ এর মাধ্যমে বাল্য বিবাহ, শিশুশ্রম, শিশুনির্যাতন, শিশু পাচার ইত্যাদি শিশু অধিকার লংঘন সংক্রান্ত তথ্যাদি ‘ঈযরষফ যবষঢ় ষরহব ১০৯৮’ এর মাধ্যমে সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করে শিশুঅধিকার ও শিশুর সামাজিক সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করার জন্য সার্বক্ষণিক প্রয়োজনীয় সেবা প্রদান করা হচ্ছে।

১৬২৩৬ : ব্যাংকিং সেবা পেতে গ্রাহক হয়রানির শিকার হলে বা গ্রাহকের কোনো অভিযোগ থাকলে তা ১৬২৩৬ নম্বরে ফোন করে বাংলাদেশ ব্যাংকে জানানো যাবে। পাশাপাশি নন.পরঢ়প@নন.ড়ৎম.নফ ঠিকানায় ই-মেইলের মাধ্যমেও অভিযোগ জানানো যাবে।

প্রবাসী কর্মী এবং তাঁদের পরিবারের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের জন্য ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড কর্তৃক প্রবাস বন্ধু কল সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে। সকল প্রবাসী কর্মী এবং তাঁদের পরিবারের সদস্যরা সহজেই তাঁদের সমস্যাগুলি নিয়ে ২৪/৭ এ কল সেন্টারের মাধ্যমে সহজেই প্রতিকার পায়। কল সেন্টারের যোগাযোগ নাম্বার হলোঃ +৮৮০১৭৮৪ ৩৩৩ ৩৩৩, +৮৮০১৭৯৪ ৩৩৩ ৩৩৩, +৮৮০২-৪৮ ৩১৪ ৮৮৮।

১০০: দিন-রাতের যে কোনো সময় টেলিযোগাযোগ সেবার বিষয়ে অভিযোগ জানাতে পারবেন গ্রাহকরা। শর্টকোড ১০০-এর মাধ্যমে কমিশন অভিযোগ গ্রহণ করে থাকে। সর্টকোডটি তে সরাসরি কল করে দেশের অভ্যন্তরে অবস্থানরত গ্রাহক টেলিযোগাযোগ সংশ্লিষ্ট যেকোন অনিষ্পন্ন অভিযোগ অথবা পরামর্শ বিটিআরসি’র নিকট দাখিল করতে পারেন।

১৬৪৩০: সরকারি আইনি সেবার মানোন্নয়নে সহায়তা প্রদান প্রকল্পের আওতায় জাতীয় পর্যায়ে সম্পূর্ণ টোল ফ্রি ১৬৪৩০ নম্বরের মাধ্যমে হেল্পলাইন সার্ভিস কার্যক্রম বাস্তবায়ন করেছে। এই শর্টকোড নম্বরটি নিয়ে জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থার কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে একটি কল সেন্টার নির্মাণ করা হয়েছে।

১৬১৬২: নগরবাসীকে তাৎক্ষণিকভাবে তথ্য জানাতে এবং তাদের অভিযোগ শুনতে হেলপলাইন চালু করেছে ঢাকা পানি সরবরাহ এবং পয়োঃনিষ্কাশন কর্তৃপক্ষ-ঢাকা ওয়াসা। হেলপলাইনের নম্বর ১৬১৬২। ‘ওয়াসা লিংক’ নামের এ নম্বরে ফোন করে ঢাকা ওয়াসার গ্রাহকরা যে কোন সময় তথ্য জানতে পারবেন এবং পানি, পয়োঃ এবং ড্রেনেজ সংক্রান্ত যে কোনো অভিযোগ দাখিল করতে পারবেন।

১৬২৫৬: এনআইএলজি কর্তৃক স্থানীয় সরকার হেল্পলাইন ১৬২৫৬ চালুকরণ স্থানীয় সরকার ব্যবস্থার উন্নয়নে একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। সিটি কর্পোরেশন থেকে শুরু করে ইউনিয়ন পরিষদ পর্যন্ত নাগরিক বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা প্রদানের জন্য চালু করা হয়েছে ‘লোকাল গভর্ণমেন্ট হেল্প লাইন-১৬২৫৬’ নাম্বারটি।

৩৩৩১: এই নম্বরে ফোন করে কৃষকরা তাদের কৃষি বিষয়ক সব সমস্যার সমাধান পাবেন। কৃষি কর্মকর্তাদের কাছ থেকে মিলবে সব ধরণের কৃষি পরামর্শ ও সেবা। ৩৩৩১ নম্বরে ফোন করে সেবার পাওয়ার নাম দেয়া হয়েছে কৃষক বন্ধু ফোন সেবা। এ সেবা সম্পর্কে কৃষি তথ্য সার্ভিস এর ঊর্ধতন এ কর্মকর্তা উদাহারণ দিয়ে বলেন, ধরুন রহিমপুর একটি ব্লকের নাম। ওই ব্লকের কোনো কৃষক সমস্যায় পরেছেন, তখন ওই কৃষক যদি ৩৩৩১ নম্বরে ফোন করেন তা ওই ব্লকের উপসহাকারী কৃষি কর্মকর্তার কাছে চলে যাবে।

যদি ওই উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা ফোন কলটি না ধরতে পারেন তাহলে কলটি চলে যাবে কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তার কাছে। যদি কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা ফোনটি না ধরতে পারেন তাহলে এবার ওই কলটি চলে যাবে উপজেলা কৃষি অফিসারের কাছে। উনিও যদি না ধরতে পারেন তাহলে কলটি কৃষি বাতায়নে জমা হবে। যখনই কৃষি বাতায়ন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা খুলবেন/পরবেন তখনই ওই কৃষকের কল সম্পর্কে ম্যাসেজ পেয়ে পাবেন (আসবে) এবং তার সমাধান দেয়ার কাজ শুরু করবেন।

বহুমাত্রিক.কম

Walton Refrigerator Freezer
Walton Refrigerator Freezer