আনন্দবাজার পত্রিকায় গর্ব করে লিখেছেন জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী নচিকেতা চক্রবর্তী, বাঙালি জাতি ও পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচন নিয়ে। নচিকেতার কাছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জয় মানে বাঙালির জয়। জয়ের প্রাক্কালে নচিকেতা বলেন, ‘আজ বাঙালির জয়ের দিন। বাঙালির আত্মশ্লাঘার দিন। বাঙালি জিতিয়া প্রমাণ করিল, বাঙালি শ্রেষ্ঠ প্রজাতি’।
কোনো এক মনীষী বলেছিলেন, "বাংলা আজ যেটা ভাবে, ভারত সেটা ভাবে পরশু"। বাঙালিদের এই অহঙ্কারের জায়গাটা একটা সময় পর্যন্ত ছিল। তবে ইদানিং আমরা যেন নিজেদের বাঙালি ভাবতে লজ্জা পাচ্ছিলাম। এখনও প্রচুর মানুষ আছেন, যারা ইংরেজিতে কথা বলতে ভালবাসেন। হিন্দিতেও। কিন্তু আজ একটা বিষয় প্রমাণিত হয়ে গেল, যে দলটা প্রায় গোটা ভারতকে মুঠোয় নিয়ে ফেলেছে, বাংলাকে তারা কব্জা করতে পারল না। এটা আক্ষরিক অর্থেই আমাদের অর্থাৎ বাঙালিদের জয়।
নচিকেতা লেখেন, ‘বাঙালি সব অর্থেই দূরদর্শী। এটা কিন্তু আজও প্রমাণিত হয়ে গেল। সবাই বলেছিলেন, এ রাজ্যে বর্তমান সরকার আর টিকবে না। শাসকদলকে পাততাড়ি গুটিয়ে ঘরে ঢুকে যেতে হবে। কিন্তু সেই বাঙালিই জেতাল। আমার এক বন্ধু ভোটপর্বের সূচনাতেই বলেছিল, নবান্নে আবার হাওয়াই চটি। সবাই শুনে হেসেছিল হয়ত। আজ কিন্তু সেটাই হয়েছে। আমরা প্রমাণ করে দিয়েছি, আমরা অনেকের থেকে অনেক গুণ এগিয়ে।’
হুইল চেয়ারে বসে এক জন ভদ্রমহিলা গোটা রাজ্য ঘুরলেন। সাধারণ মানুষের সুখ-দুঃখের পাশে থাকার চেষ্টা করলেন। উন্নয়নের কথা বললেন। আর ভারত-কব্জা করা একটা দল দিল্লি-বাংলা যাতায়াতেই প্রায় ৩০০ কোটি টাকা খরচ করে ফেলল। গোটা ভোটপর্বের জন্য খরচ শুনেছিলাম প্রায় ২৫ হাজার কোটি রুপি! এই টাকা দিয়ে বাঙালিকে কেনা যায় না। দু’চারটে গাধা কেনা যায় হয়ত। কারণ, শয়তান তো চিরকালই থাকে। ওসব গুনতিতে আসবে না।
তিনি এও বলেন, "আসলে বাঙালিকে আহ্বান জানিয়েছে একটি বাঙালি মন"। আর সেই আহ্বানে সাড়া দিয়ে আমরা প্রমাণ করলাম, আমরা বাঙালি। সদর্পে ওই দলকে জানিয়ে দেওয়া গেল বাংলাটা এখনও গুজরাট হয়ে যায়নি।’