Bahumatrik | বহুমাত্রিক

সরকার নিবন্ধিত বিশেষায়িত অনলাইন গণমাধ্যম

চৈত্র ১৪ ১৪৩০, শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪

জয় দিয়ে শততম টি-২০ স্মরণীয় করে রাখলো টাইগাররা

বহুমাত্রিক ডেস্ক

প্রকাশিত: ২১:১৪, ২২ জুলাই ২০২১

আপডেট: ২১:১৪, ২২ জুলাই ২০২১

প্রিন্ট:

জয় দিয়ে শততম টি-২০ স্মরণীয় করে রাখলো টাইগাররা

জয় দিয়ে টি-২০ ভার্সনে নিজেদের শততম ম্যাচটি স্মরণীয় করে রাখলা বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে নিজেদের শততম টি-২০ ম্যাচে ৮ উইকেটের বড় জয় পেলো বাংলাদেশ। যার মাধ্যমে তিন ম্যাচ সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়েও গেল টাইগাররা।

কাকতালীয়ভাবে টি-২০ ফরম্যাটে বাংলাদেশে তাদের প্রথম ম্যাচটি খেলেছিল এই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। সে ম্যাচে ৪৩ রানের জয় পেয়েছিল টাইগাররা।

হারারে স্পোর্টস ক্লাবে তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম টি-২০তে টস জিতে আগে ব্যাট করে ১৯ ওভারে সব উইকেট হারিয়ে ১৫২ রান সংগ্রহ করতে সমর্থ হয় জিম্বাবুয়ে। জবাবে ব্যাট করতে নেমে ২ উইকেট হারিয়ে ৭ বল হাতে রেখেই ১৫৩ রান করে জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ।

২০০৬ সালে শাহরিয়ার নাফিসের নেতৃত্বে টি-২০ ফরম্যাটে বাংলাদেশে তাদের প্রথম ম্যাচটি খেলেছিল এই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। ম্যাচটি ৪৩ রানে জিতেছিল বাংলাদেশ। ম্যাচের সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হয়েছিলেন মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা।

আজ জয়ের জন্য ১৫৩ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নামে নাইম শেখ ও সৌম্য সরকার। পাওয়ার প্লেতে দুই অর্ধে বাংলাদেশ ছিল দুই রকম। প্রথম ৩ ওভারে আসে কেবল ৯ রান, পরের ৩ ওভারে ৩৪। দুই ওপেনারই সময় নিচ্ছিরেলন। প্রথম আট ওভারে খেলেছেন ১৯টি ডট বল। এক-দুই নিয়ে খেলছেন। নিজে জোনে বল পেলে মারছেন বাউন্ডারি। মন্থর ব্যাটিংয়ে ৪৪ বলে এসেছে ওপেনিং জুটির ৫০।

বাংলাদেশের হয়ে টি-২০তে রেকর্ড ওপেনিং জুটি উপহার দিলেন সৌম্য সরকার এবং নাঈম শেখ। তাদের জুটি তিন অংক ছুঁয়েছে। এর আগে টি-২০তে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ ওপেনিং জুটি ছিল ৯২। গত বছর ঢাকায় এই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেই ওই জুটি গড়েছিলেন তামিম ইকবাল ও লিটন দাস।

রেকর্ড জুটি করেই ফিরলেন সৌম্য। যে বলে পঞ্চাশ স্পর্শ করলেন, সেই বলেই রান আউট হয়ে গেলেন তিনি। রিচার্ড এনগারাভার বল ডিপ মিডউইকেটে পাঠিয়ে দুই রান নিতে চেয়েছিলেন বাঁহাতি এই ওপেনার। স্টাম্প থেকে বেশ দূরে পাওয়া থ্রো ধরে রেজিস চাকাভা যখন বেল ফেলে দেন তখনও খানিকটা দূরে ছিলেন তিনি। ভাঙে ১০২ রানের জুটি ।ফেরার আগে টি-২০ ক্যারিয়ারে ৪র্থ ফিফটি করেন এ বাহাতি ব্যাটসম্যান।

নেমেই চার মারেন মাহমুদউল্লাহ। ঝুঁকিপূর্ণ একটি সিঙ্গেল নেয়ার চেষ্টায় রান আউট হয়ে গেলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। শিঙ্গিরাই মাসাকাদজার বল মোহাম্মদ নাইম শেখ লেগে পাঠানোর পর একটি রান নিতে চেয়েছিলেন দুই ব্যাটসম্যান। কিন্তু ব্লেসিং মুজারাবানির সরাসরি থ্রো স্টাম্প ভেঙে দেওয়ার সময় কিছুটা দূরে ছিলেন মাহমুদউল্লাহ। ১২ বলে ১ চারে ১৫ রান করেন তিনি।

এর আগে টসে হেরে ফিল্ডিংয়ে নেমে ওপেনিং বোলিংয়ে আসেন অলরাউন্ডার মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। পরের ওভারেই মুস্তফিজুর রহমান বল হাতে পান সফলতা। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে তাদিওয়ানাশে মারুমানিকে ৭ রানে মাঠছাড়া করেন বাংলাদেশি পেসার। ডিপ মিডউইকেট থেকে দৌঁড়ে এসে দুর্দান্ত ড্রাইভে ক্যাচটি ধরেন সৌম্য সরকার। তাতে ১০ রানে ভাঙে উদ্বোধনী জুটি।

ফিরতি ক্যাচ নিয়ে ওয়েসলি মাধেভেরেকে ফিরিয়ে বিপজ্জনক হয়ে ওঠা জুটি ভাঙেন সাকিব আল হাসান। বাঁহাতি স্পিনারকে লং অফ দিয়ে উড়িয়ে খেলতে চেয়েছিলেন মাধেভেরে। কিন্তু ব্যাটের ভেতরের দিকে লেগে ক্যাচ যায় বোলারের কাছে। লাফিয়ে ক্যাচ মুঠোয় জমিয়ে ৩৮ বল স্থায়ী ৬৪ রানের জুটি ভাঙেন বাংলাদেশের প্রথম ও শততম টি-২০ খেলা একমাত্র খেলোয়াড় সাকিব।

১১তম ওভারে শরিফুল ইসলামের প্রথম বলে চাকাবাকে রান আউট করেন নুরুল হাসান সোহান। ২২ বলে ৫ চার ও ২ ছয়ে ৪৩ রান করেন জিম্বাবুয়ান ওপেনার। শরিফুলের ওভারে চার বলের ব্যবধানে সিকান্দার রাজাও আউট হন। তিন বল খেলে রানের খাতা না খুলে সোহানকে পেছনে ক্যাচ দেন স্বাগতিক অধিনায়ক। এরপরেই সৌম্য সরকারের ওভারে এলবিডবি¬উ হয়ে ফিরলেন তারিসাই মুসাকান্দা।

খরুচে প্রথম ওভারের পর দারুণ বোলিং করছেন শরিফুল ইসলাম। পরের ওভারে মাত্র ১ রান দিয়ে নেন একটি উইকেট, রান আউটে এসেছিল আরেকটি উইকেট। এবারও ১ রানে পেলেন একটি উইকেট। বাঁহাতি পেসারের অফ স্টাম্পে থাকা ফুল লেংথ বল ক্রস ব্যাটে খেলতে চেয়েছিলেন ডিওন মায়ার্স। বলের লাইনে যেতে পারেন, উড়ে যায় স্টাম্প। টি-২০তে নিজের প্রথম ইনিংসে ২২ বলে দুই চারে ৩৫ রান করেন মায়ার্স।

ভালো বোলিং করলেও উইকেট পাচ্ছিলেন না মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিন। নিজের শেষ ওভারে পেলেন জোড়া উইকেট। অফ স্টাম্পের অনেক বাইরের বল স্কুপ করতে চেয়েছিলেন লুক জঙ্গি। ব্যাটের কানায় লেগে বল আঘাত হানে লেগ স্টাম্পে। দুই চারে ১৬ বলে ১৮ রান করে ফিরেন জঙ্গি বদলি ফিল্ডার শামীম হোসেনের দুর্দান্ত এক ক্যাচে সেই ওভারেই ফেরেন রায়ান বার্ল।

নিজের শেষ ওভারে ফিরে জোড়া উইকেট নিয়ে জিম্বাবুয়েকে থামালো মুস্তাফিজুর রহমান। দারুণ এক ডেলিভারিতে বোল্ড করেন রিচার্ড এনগারাভাকে। পরের বলেই শেষ হয়ে যেতে পারত জিম্বাবুয়ের ইনিংস। কিন্তু মুজারাবানির ক্যাচ গ্লাভসে জমাতে পারেননি সোহান। পরের দুই বলে জিম্বাবুয়ের ১১ নম্বর ব্যাটসম্যান মারেন দুটি বাউন্ডারি। ওভারের শেষ বলে তাকে বোল্ড করেন দেন মুস্তাফিজ। এক ওভার বাকি থাকতে ১৫২ রানেই গুটিয়ে যায় স্বাগতিকরা।

শেষ পর্যন্ত নাইম শেখের অপরাজিত ৬৫ ও সোহানের অপরাজিত ১৬ রানের ইংনিসে ৮ উইকেটের জয় পায় বাংলাদেশ।ম্যাচ সেরা হয়েরেছন সৌম্য সরকার।

Walton Refrigerator Freezer
Walton Refrigerator Freezer