Bahumatrik | বহুমাত্রিক

সরকার নিবন্ধিত বিশেষায়িত অনলাইন গণমাধ্যম

বৈশাখ ১১ ১৪৩১, বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪

জীবিকার সংকটে পতনউষারের দিনমজুররা

নূরুল মোহাইমীন মিল্টন, নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৮:৩৮, ১৫ এপ্রিল ২০২০

আপডেট: ১৮:৩৯, ১৫ এপ্রিল ২০২০

প্রিন্ট:

জীবিকার সংকটে পতনউষারের দিনমজুররা

ছবি- বহুমাত্রিক.কম

মৌলভীবাজার : ‘‘গত বিশ দিন ধরিয়া কোন আয় ইনকাম নাই। ইউনিয়ন তাকিয়াও কিচ্ছু পাইরাম না। ব্যক্তিগত ভাবেও কেউ কিচ্ছু দিরা না। বউ বাচ্চা নিয়া বাঁচার আর কোন উপায় নাই। এখন নিজের সাড়ে তিন হাজার টাকা দামের মোবাইল ফোন বারশ’ টাকায় বেঁচে খরচ নিরাম”-ক্ষোভে দু:খে কথাগুলো বললেন মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার পতনঊষার ইউনিয়নের শহীদনগর বাজার এলাকার অটোরিক্সা চালক ছুরুক মিয়া।

বুধবার দুপুরে সরেজমিনে পতনঊষার ইউনিয়নের শহীদনগর বাজার, লাঘাটার পার, শ্রীসূর্য্য নোয়াগাও গ্রাম এলাকা ঘুরে অভাবী মানুষের হাহাকারের চিত্র ফুটে উঠে। ইউনিয়নের দরিদ্র, নিন্মআয়ের মানুষ, ভূমিহীন, নিন্মমধ্যবিত্ত, দিনমজুর ও কৃষকরা তাদের পরিবারের অভাব অনটনের চিত্র তুলে ধরে কেউ কেউ কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। দিনমজুর লোকেরা দিন এনে দিন খান। তবে গত দুই সপ্তাহ ধরে তাদের কোন আয় রোজগার না থাকায় চরম মানবেতর জীবন যাপন করছেন বলে অভিযোগ করেন।

ইউনিয়নের লাঘাটাপারের বাসিন্দা রিক্সা চালক কাইয়ুম মিয়া, কমরু মিয়া, গৃহিনী রহিমুন্নেছা, মমলু মিয়া, শেলী বেগম, আনোয়ারা বেগম, সাজনা বেগম, নূরুন বেগম বলেন, “আমরার চার থেকে ছয় সদস্যের পরিবার। রিক্সা চালাইয়া, দিনমজুরি করিয়া কোনমতে সংসার চলে। গত বিশ দিন ধরিয়া কোন আয় রোজগার নাই। কোন ধরণের সাহায্য সহযোগিতাও পাইরাম না। একবেলা, আধাবেলা খাইয়া দিন কাটরাম। চেয়ারম্যান-মেম্বারের কাছে গিয়াও কোন সহযোগিতা পাইরাম না। এখন না খাইয়া মরার অবস্থা।”

গ্রামের প্রবাসীর স্ত্রী আজিরুন বেগম বলেন, “আমার স্বামী বিদেশে থাকলেও কাজকর্ম নাই। বাসায় আছেন। কোন টাকা পয়সাও দিতা পাররা না। সংসারে বাচ্চাকাচ্চা নিয়া ৩ জনের খুব কষ্টে দিন কাটারাম। কেউরে কিছু কইতেও পাররাম না। কোন ভাবে সাহায্যও পাইরাম না।”

এদিকে পতনঊষারের দিনমজুর আলই মিয়া, শ্রীসূর্য্যরে মিন্টু বৈদ্য, ধূপাটিলা গ্রামের মাসুক মিয়া, আলমাছ মিয়া, কনু মিয়া, সিএনজি-অটো রিক্সা চালক মুকিদ মিয়া, দিনমজুর সুশেন্দ্র মালাকার, ব্রাহ্মনঊষারের মছদ্দর মিয়া, ঠেলা চালক মন্তাজ মিয়া বলেন, “বাবু আমরা কেমনে বাঁচতাম। এখন পর্যন্ত ইউনিয়নের পক্ষ থাকি কিংবা কোন ব্যক্তির পক্ষ থাকি কোন ধরণের সহায়তা পাইছি না। আমরারে সাহায্যের ব্যবস্থা করইন।”

নোয়াগাঁও গ্রামের দিনমজুর বাবুল মিয়া কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, “ভাই আমার বাড়িতে গিয়া দেখিয়া যাইন। দুপুরের রান্না করার চাউলটুকু পর্যন্ত নাই। কিভাবে দিন চালাইতাম।”

এভাবে ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় শত শত শ্রমজীবি, দিনমজুর, রিক্সা ও ঠেলাচালকরা তাদের অভাব অনটনের চিত্র তুলে ধরে খাদ্য সহায়তার দাবি জানান। এ ব্যাপারে পতনঊষার ইউপি চেয়ারম্যান তওফিক আহমদ বাবু নিন্মআয়ের মানুষের দুর্ভোগের কথা স্বীকার করে বলেন, সরকারের পাশাপাশি আমরা নিজেদের পক্ষ থেকেও সহায়তা অব্যাহত রেখেছি। এলাকার বিত্তবানদেরও এব্যাপারে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, নিন্মআয়ের সবাইকে কমবেশি সহযোগিতা করা হয়েছে। কেউ পায়নি এমন ব্যক্তি খুবই নগন্য।

বহুমাত্রিক.কম

Walton Refrigerator Freezer
Walton Refrigerator Freezer