পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যাওয়া ভোলা জেলা ছাত্রদলের সভাপতি নুরে আলমের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের রাস্তার দুই পাশে হাজার হাজার নেতাকর্মী ও সমর্থক এই জানাজায় অংশ নেন।
এর আগ বেলা ১১টায় এই জানাজা হওয়ার কথা থাকলেও ময়নাতদন্ত ও গোসলের কারণে কিছুটা বিলম্ব হয়। পরে দুপুর ১টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে মরদেহ নয়া পল্টন কার্যালয়ের সামনে নিয়ে আসা হয়।এর পর পরই জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজা শেষে নুরে আলমের মরদেহ তার গ্রামের বাড়ি ভোলার উদ্দেশে নিয়ে যাওয়া হয়। সঙ্গে বিএনপির অনেক নেতাকর্মীও রয়েছেন।
বিএনপির পূর্ব ঘোষিত এই জানাজায় অংশ নিতে সকাল ৯টা থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন স্থান থেকে নেতাকর্মীরা কার্যালয়ের সামনে জড়ো হতে থাকেন। এ সময় নেতাকর্মীরা মিছিল ও স্লোগান দিতে থাকেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ছিল সতর্ক অবস্থায়। কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। তবে জানাজা শেষে ছাত্রদল নেতাকর্মীরা আপ্লুত হয়ে পড়েন এবং অনেকে কান্নায় ভেঙে পড়েন।
ওলামা দলের মাওলানা নেছারুল হক জানাজা নামাজে ইমামতি করেন এবং দোয়া পরিচালনা করেন। এর আগে বিএনপি কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান ডাক্তার জাহিদ হোসেন এবং স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডাক্তার রফিকুল ইসলাম ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গ থেকে নুর আলমের মরদেহ বুঝে নেন। নয়া পল্টনে মরদেহ পৌঁছানোর পর বিএনপির এবং এর অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা জানানো হয়।
জানাজায় উপস্থিত ছিলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আজম খান, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, হাবিব উন নবী খান সোহেল, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান, সদস্য সচিব আমিনুল হক, দক্ষিণের সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু, জাতীয়তাবাদী যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, কৃষক দলের সভাপতি হাসান জাফির তুহিন, সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল, ছাত্রদলের সভাপতি কাজী রওনোকুল ইসলাম শ্রাবন, সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল, এলডিপি একাংশের মহাসচিব ডক্টর রেদওয়ান আহমেদসহ ২০ দলীয় জোটের নেতারা। জানাজাকে ঘিরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সতর্ক অবস্থান নিতে দেখা গেছে। এ ছাড়া সড়কে যান চলাচল বন্ধ ছিল।
উল্লেখ্য, গত ৩১ শে জুলাই বিএনপি কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে ভোলায় বিক্ষোভ চলাকালীন পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এতে স্বেচ্ছাসেবক দলের আব্দুর রহিম নামে এক কর্মী নিহত হন। গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন নুরে আলম। গতকাল চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। গতকাল সন্ধ্যায়ই বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জানাজা হওয়ার কথা ছিল।
বিকেল ৫টা থেকেই তখন নেতাকর্মীরা নয়া পল্টনের আশপাশে জড়ো হয়ে কালো ব্যাচ পরে বিক্ষোভ দেখান। পরে মরদেহ না পৌঁছানোয় নেতাকর্মীরা নয়া পল্টন ছেড়ে চলে যান।