চীনজুড়ে ক্রমেই ছড়িয়ে পড়ছে লকডাউনবিরোধী বিক্ষোভ। সেই সঙ্গে বাড়ছে সহিংসতা। সাংহাইয়ে পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের ব্যাপক সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে। এতে বেশ কয়েকজন আহত হওয়ার পাশাপাশি চলছে ধরপাকড়ও। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাজধানী বেইজিংসহ বিভিন্ন শহরে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
বিবিসি জানায়, করোনার বিধিনিষেধের বিরুদ্ধে সোমবার (২৮ নভেম্বর) টানা তৃতীয় দিনের মতো সাংহাইয়ের রাস্তায় নামেন বিক্ষোভকারীরা। এদের মধ্যে ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরাও। এ সময় সরকারবিরোধী নানা স্লোগান দেন তারা। এমনকি প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের পদত্যাগ দাবি করতেও দেখা যায় অনেককে।
তবে আন্দোলনকারীরা বিভিন্ন রাস্তায় জড়ো হয়ে নিরাপত্তা বেষ্টনী অতিক্রম করে অগ্রসর হওয়ার চেষ্টা করলে বাধা দেয় পুলিশ। একপর্যায়ে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হলে বেশ কয়েকজনকে আটক করেন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। উভয় পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি ও ধস্তাধস্তির ঘটনাও ঘটে। এতে আহত হন অনেকে।
শুধু সাংহাই নয়, সোমবার লকডাউনবিরোধী বিক্ষোভ হয় উহানেও। সেখানেও পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে। চলে ধড়পাকড়ও। বিক্ষোভের খবর পাওয়া গেছে রাজধানী বেইজিংয় ও হংকংয়েও।
দিন পেরিয়ে সন্ধ্যা গড়াতেই বিক্ষোভ দমনে নিরাপত্তা জোরদার করতে দেখা গেছে বিভিন্ন শহরে। নিরাপত্তা বাহিনীর অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েনের পাশাপাশি প্রধান সড়কগুলোতে বড় বড় ব্যারিকেড বসাতেও দেখা যায়। শুধু তাই নয়, দেশি-বিদেশি সাংবাদিকদের ছবি তোলার ওপর কড়াকড়ি আরোপের পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।
এদিকে চীনে চলমান এ আন্দোলনের প্রতি সমর্থন জানিয়ে বিভিন্ন দেশে বিক্ষোভ হয়েছে। লন্ডনে চীনা দূতাবাসের বাইরে বিক্ষোভ করেন দেশটিতে বসবাসরত চীনা নাগরিকরা। অবিলম্বে চীনে করোনার বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার দাবি জানান তারা। বিক্ষোভে যোগ দিতে দেখা গেছে স্থানীয়দেরও। এছাড়াও একই দাবিতে বিক্ষোভ হয়েছে অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে। চীনের আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানিয়ে বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে বিক্ষোভ করেন দেশটিতে বসবাসরত চীনা নাগরিকরা।
সম্প্রতি চীনের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রত্যন্ত শহর উরুমকিতে একটি বহুতল ভবনে আগুন লেগে ১০ জনের মৃত্যু হয়। এ দুর্ঘটনার জন্য করোনার বিধিনিষেধকে দায়ী করেন স্থানীয়রা। মূলত ওই ঘটনার জের ধরেই বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে বিভিন্ন শহরে।