Bahumatrik | বহুমাত্রিক

সরকার নিবন্ধিত বিশেষায়িত অনলাইন গণমাধ্যম

চৈত্র ৪ ১৪৩০, মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪

চা বাগানে স্বাস্থ্যবিধির বালাই নেই: ঝুঁকিতে শ্রমিকরা

নূরুল মোহাইমীন মিল্টন, নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ০০:২৬, ২৪ জুলাই ২০২১

প্রিন্ট:

চা বাগানে স্বাস্থ্যবিধির বালাই নেই: ঝুঁকিতে শ্রমিকরা

ছবি- বহুমাত্রিক.কম

করোনা ভাইরাস থেকে রক্ষায় ২৩ জুলাই থেকে ৫ আগষ্ট পর্যন্ত সরকার কঠোর লকডাউন দিয়েছে। তবে এসময়েও সচল রয়েছে চা শিল্প। কোন ধরণের স্বাস্থ্যবিধি ও মাস্ক ব্যবহার ছাড়াই কর্মরত শতশত শ্রমিকরা। এতে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয় সচেতন চা শ্রমিক নেতৃবৃন্দরা।

সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার ডানকান ব্রাদার্স, ন্যাশনাল টি কোম্পানি (এনটিসি) ও ব্যক্তি মালিকানাধীন চা বাগান সমুহে পুরোদমে কাজকর্ম পরিচালিত হচ্ছে। তবে করোনাকালে চা শ্রমিকদের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মানার কোন বালাই দেখা যায়নি। মাঝে মধ্যে দু’একজনের মুখে মাস্ক পরতে দেখা গেলেও অধিকাংশ শ্রমিকরা মাস্ক ব্যবহার ছাড়াই কাজকর্ম চালিয়ে যাচ্ছেন। তাদের প্রত্যেকেরই গাঁ ঘেষাঘেষি করে পাতি উত্তোলন, ওজন ও গাড়িতে তুলে দিতে দেখা যাচ্ছে। এসব বিষয়ে তদারকি করতেও সংশ্লিষ্ট চা বাগান কর্তৃপক্ষের তেমন কোন উদ্যোগ পরিলক্ষিত হয়নি। কিছু কিছু স্থানে চা ছাত্র ও যুবকরা নিজ উদ্যোগে নারী শ্রমিকদের মধ্যে মাস্ক বিতরণ করতে দেখা গেছে। এতে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ বৃদ্ধির আংশঙ্কা করছেন স্থানীয় সচেতন চা শ্রমিক নেতৃবৃন্দরা।

শমশেরনগর বাগানের চা শ্রমিক সন্তান মোহন রবিদাস ও ইউপি সদস্য সীতারাম বীন বলেন, ‘চা শ্রমিকদের মধ্যে নেই মাস্ক। মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্য বিধি। ইতিমধ্যে আমাদের চা বাগানের কিছু স্টাফও করোনায় আক্রান্তের সংবাদ শুনতে পাচ্ছি। তবে এ অবস্থার মধ্যে মাস্ক ব্যবহার ব্যতীত ও স্বাস্থ্যবিধি না মানার কারণে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধির আশংঙ্কা দেখা দিয়েছে।’ তারা আরও বলেন, ‘করোনা ভাইরাসে সবচেয়ে ঝুঁকিতে আছে দেশের চা শ্রমিকরা। যেখানে চা পাতা তোলা হয় সেখানে স্যানিটাইজার, সাবান থাকে না। এমনকি খাবারে বিশুদ্ধ পানিরও সংকট থাকে। আর গাঁ ঘেষাঘেষি করে পাতি তোলা, ওজন দেয়া ও গাড়িতে লোড করা এসবই চা শ্রমিকদের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি।’

বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক রামভজন কৈরী বলেন, ‘চা বাগানে আমাদের শ্রমিকরা অনেক ঝুঁকি নিয়েই কাজ করছেন। চা শ্রমিকদের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করানোর কথা বললেও এসবে কর্তৃপক্ষ কোন তোয়াক্কাই করছে না। ফলে কার করোনা আছে আর কার নেই সেটি কিভাবে বোঝা যাবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘অন্যান্য সেক্টরে প্রণোদনা দেয়া হলেও চা বাগানের শ্রমিকদের মধ্যে কোন ধরণের প্রণোদনাও দেয়া হচ্ছে না। এতে দু:খ-কষ্টে দিন যাপন করতে হচ্ছে শ্রমিকদের।’

চা শ্রমিক নেতৃবৃন্দরা জানান, চা বাগান খোলা রাখতে আমাদের আপত্তি নেই। তবে যে হারে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পাচ্ছে তাতে স্বাস্থ্যবিধি ও মাস্ক ব্যবহার এবং নিয়মিত হাত ধোঁয়ার সুব্যবস্থা না থাকলে আরও বড় ধরণের ঝুঁকিতে পড়তে হবে।

এ ব্যাপারে মোবাইল ফোনে জানতে চাইলে শমশেরনগর চা বাগান ব্যবস্থাপক কোন কথা বলতে অনীহা প্রকাশ করেন। তবে ওই চা বাগান ম্যানেজমেন্টের একজন কর্মকর্তা নিজের নাম ও পরিচয় গোপন রেখে বলেন, সরকারি সিদ্ধান্ত মোতাবেক চা শিল্পে স্বাস্থ্যবিধি মেনেই কাজকর্ম পরিচালিত হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, চা বাগান বন্ধ থাকলে কঁচি পাতি বিনষ্ট হবে এবং বড় ধরণের লোকসান গুণতে হবে।

বহুমাত্রিক.কম

Walton Refrigerator Freezer
Walton Refrigerator Freezer