ঢাকা : চলতি মৌসুমে দেশের চা শিল্পের ইতিহাসে উৎপাদনের অতীতের রেকর্ড ভাঙতে যাচ্ছে। আবহাওয়া ও অনুকূল পরিস্থিতি থাকায় গত মৌসুমের চেয়ে প্রায় ৪০ ভাগ বেশি চা উৎপাদনের আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
চা শিল্পের এমন সোনালি অধ্যায়ে নিম্নমানের চা আমদানির কারণে চা বিক্রি নিয়ে শঙ্কায় আছেন ব্যবসায়ীরা। পাশাপাশি শ্রীমঙ্গলে অবস্থিত দেশের দ্বিতীয় চা নিলাম কেন্দ্রের পরিপূর্ণতাও চাচ্ছেন তারা।
প্রকৃতির আলো-ছায়ার মাঝে বেড়ে ওঠা চা শিল্পে এখন চলছে বাম্পার মৌসুম। চা বাগানের একশ’ ৭০ বছরের ইতিহাসে এমন উৎপাদন আগে কখনও হয়নি। বছরজুড়ে অনুকূল আবহাওয়ায় প্রতিটি বাগান সবুজের সমারহ পাতায় পাতায় ছেয়ে গেছে। দেশে সর্বোচ্চ চা উৎপাদন হয়েছিল ২০১৬ সালে, সাড়ে ৮ কোটি কেজি। গত মৌসুমে উৎপাদন হয়েছিল ৮ কোটি ২১ লাখ কেজি। আর চলতি মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রা ১১ কোটি কেজি। টার্গেট পূরণে চা উৎপাদনের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা আশাবাদী। তবে ভারত থেকে নিম্নমানের চা আমদানির কারণে চা বিক্রি নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন তারা।
এম আর খান ও নন্দরাণী টি এস্টেটের মহাব্যবস্থাপক জহির আহমদ চৌধুরী বলেন, ‘ভারতের চা আশায় দেশের চায়ের মূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে।’
দেশের অধিকাংশ চা বাগানের অবস্থান সিলেট অঞ্চলে। কিন্তু বন্দরসহ নানা সুবিধার কথা বলে ১৯৪৭ সালে চট্টগ্রামে চা নিলাম কেন্দ্র স্থাপন করা হয়। দীর্ঘপথ অতিক্রম করে চট্টগ্রামে নেয়ার ফলে চায়ের গুণগত মান ধরে রাখা সম্ভব হয় না। পাশাপাশি পরিবহন খরচও বেশি পড়ে। এ কারণে সিলেট অঞ্চলে চা নিলাম কেন্দ্র স্থাপনের দাবিতে সোচ্চার ছিলেন চা বাগান মালিকেরা।
শ্রীমঙ্গল চা ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো. চেরাগ আলী বলেন, ‘এখানে দু’টি নিলাম শুরু হলে সবাই উপকৃত হবে।’
দীর্ঘদিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৭ সালে শ্রীমঙ্গলে দেশের দ্বিতীয় চা নিলাম কেন্দ্র স্থাপন করা হয় এবং গত বছর থেকে চা নিলাম শুরু হয়। আন্তঃমন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তে এ কেন্দ্রে মাসে দু’টি নিলাম হওয়ার কথা থাকলেও অবকাঠামো না থাকায় বর্তমানে একটি নিলাম হচ্ছে। এতে কাঙ্ক্ষিত সুফল আসছে না বলে দাবি সংশ্লিষ্টদের।
টি প্ল্যান্টার্স অ্যান্ড ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সদস্য সচিব জহর তরফদার জানান, আপদকালীন সময়ের জন্য এটি শুরু হয়েছিল। কথা ছিল ৩ মাস পর দু’টি করে চট্টগ্রাম ও শ্রীমঙ্গলে শুরু হবে। এটি বাস্তবায়ন সিলেটবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি।
চা উৎপাদনকারী দেশ হিসেবে বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান নবম। আর ১৯৮৯ সালে ছিল ১২তম।