ভয়াবহ ধাক্কা কাটিয়ে উঠেছে রাশিয়ার মুদ্রা রুবল। চলতি বছরে এটি বিশ্বের সেরা-কার্যকর মুদ্রায় রূপান্তরিত হয়েছে।
মার্চের প্রথম সপ্তাহে সর্বনিম্ন পর্যায়ে থাকলেও স্থানীয় মার্কেটে এখন পর্যন্ত মার্কিন ডলারের বিপরীতে রুশ মুদ্রার মান ১১ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে।
ব্লুমবার্গের উপাত্তের বরাতে বিজনেস ইনসাইডারের খবর বলছে, ৩১টি বড় মুদ্রার মধ্যে সবচেয়ে বেশি সফল রুবল। মানের দিক থেকে ব্রাজিলের মুদ্রা রিয়েলকেও পিছিয়ে দিয়েছে রুশ মুদ্রা। চলতি বছরে রিয়েলের মান বেড়েছে ৯ শতাংশ।
ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের পর অর্থনীতিকে ধরে রাখতে পুঁজির ওপর রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণ আরোপের পরেই রুবলের দামে ঊর্ধ্বগতি শুরু হয়। এর অর্থ হচ্ছে, রাশিয়ায় কিছু বিনিয়োগকারী এবার লাভ তুলে নিতে পারবেন।
মস্কোর ওপর ব্যাপক পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার পর দেশটির প্রাকৃতিক গ্যাস কিনতে হলে তার দাম রুবলে পরিশোধ করতে হবে বলে নির্দেশনা জারি করেন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। রফতানিকারকদেরও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বিক্রি করতে বাধ্য করা হয়েছে।
এ ছাড়াও কিছু কৃত্রিম বাজার কৌশল গ্রহণ করেছে ক্রেমলিন। তুরস্ক ও আর্জেন্টিনাও একই পদক্ষেপ নিয়ে সফল হয়েছিল। কিন্তু কোনো কোনো লেনদেনে স্থানীয় বাজারের বিনিময় হার ব্যবহার বন্ধ করে দিয়েছেন মুদ্রা ব্যবসায়ীরা।
কারণ কঠোর পুঁজি নিয়ন্ত্রণের কারণে দেশের বাইরে রুবলের হারের তুলনায় ঘরোয়া বাজারে তা বেশি বেড়েছে।
এবার পশ্চিমাদের নিষেধাজ্ঞার মূল লক্ষ্য ছিল রাশিয়ান আর্থিক ব্যবস্থা। বিশেষ করে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কার্যক্রম সংকুচিত করা। এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে কার্যকর ছিল আর্থিক লেনদেনের ক্ষেত্রে প্রথমবারের মতো রাশিয়ান ব্যাংকগুলোকে সুইফট ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া।
ফলে ব্যাংকগুলোর আন্তর্জাতিক অর্থ লেনদেন কার্যক্রম অনেকটাই বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও অন্যান্য সংস্থাগুলো নিষেধাজ্ঞার ঝুঁকির কারণে রাশিয়ায় তাদের অফিস কমাতে বা রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে দিয়েছে।
যেসব কোম্পানি জনপ্রিয় পণ্য বিক্রি করে তারাও রাশিয়ার বাজারে তাদের কার্যক্রম সীমিত করছে। মার্সিডিজ বেঞ্জ, অডি, জেনারেল মোটরস এবং জাগুয়ার ল্যান্ড রোভারসহ গাড়ি নির্মাতারা রাশিয়ায় পণ্যের চালান বন্ধ করেছে।
এ ছাড়া আইফোন ও অন্যান্য পণ্য বিক্রির দোকানগুলোও বলেছে যে তারা নতুন কোনো চালান পাচ্ছে না।