ছবি- বহুমাত্রিক.কম
ঠাকুরগাঁও : সীমান্তবর্তী জেলা ঠাকুরগাঁও। হিমালয়ের কাছাকাছি এই জেলার অবস্থান। তাই দেশের অন্যান্য জেলার তুলনায় এই জেলায় শীতের প্রকোপ একটু বেশিই দেখা যায়।
গত কয়েকদিন দিনের বেলায় বেশ গরম থাকলেও সন্ধ্যা নামার পর থেকেই শুরু হয় কুয়াশা পড়া। রাতে ও ভোরের হালকা কুয়াশা সেই সাথে দুর্বা ঘাসের মাথায় শিশির বিন্দু জানিয়ে দিচ্ছে ঠাকুরগাঁওয়ে আসছে শীত।
বুধবার সকালে জেলার বিভিন্ন জায়গায় গেলে এমনি দৃশ্যটি চোখে পড়ে। সারদিনের তীব্র গরম শেষে সন্ধ্যা থেকে শুরু হচ্ছে হালকা হিমেল হাওয়া সঙ্গে নামছে কুয়াশা।একদিকে যেমন শীতের আগমনে দেখা দিয়েছে কিছুটা স্বস্তি। অপরদিকে করোনা ভাইরাসের ফলে চিন্তিত রয়েছেন অনেকেও।
সারেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সবুজ ঘাসের ওপর ভোরের সূর্যের আলো হালকা লালচে রঙয়ের ঝিলিক। দূর থেকে দেখলে মনে হয় প্রতিটি ঘাসের মাথায় যেন মুক্তোর মতো শিশির কণা জমে আছে। আর শীতের এই আবহাওয়া অনুভব করতে সড়কে হাটা চলা করছেন অনেকই। কুয়াশায় চাদরে ঢেকে আছে রাস্তা-ঘাট। সড়কে যানবাহন চলছে ধীর গতিতে হেডলাইট জ্বালিয়ে। এসবই জানান দিচ্ছে প্রকৃতিতে এসেছে শীত।
মূলত পৌষ-মাঘ এই দুই মাস শীতকাল ধরা হলেও আশ্বিন-কার্তিকের দিকেই গুটি গুটি পায়ে শীতের আগাম বার্তা জানায় দেয়।
শহরের বাসষ্ট্যান্ড এলাকায় কথা হয় পথচারী জুয়েলের সাথে। তিনি জানান,এবারে হয়তো আগের বারের মতোই একটু আগেই শীতের আগমন হলো। এখনো শীত আসতে কিছুটা দেরি থাকলেও রাস্তা-ঘাটে রয়েছে কুয়াশা।
শহরের জেলা স্কুল বড়মাঠে হাঁটতে আসা ওয়াদুত হোসেন নামের এক পথচারী জানান, সারাদিন গরম থাকে কিন্তু রাতে ও ভোরে এই শীতের কারনে আবহাওয়া টা অনেক সুন্দর থাকে। তাই মাঠে এসেছি হাটতে। এখানে বিশেষ করে মাঠে ঘাস ও ধানের শীষে বিন্দু বিন্দু কুয়াশা জমতে দেখা যাচ্ছে। দেখতে অনেক ভালো লাগে।
আরেক পথচারী জয়নাল আবেদিন বলেন, একতো আমাদের জেলায় শীত বেশি। অপরদিকে রয়েছে করোনা ভাইরাস। শীতে এই ভাইরাস বাড়ার সম্ভবনা রয়েছে।
সদর উপজেলার সালন্দর ইউনিয়নের বাসিন্দা জাহিদ হাসান জানান, দিনের বেলায় অনেক গরম থাকে। কিন্তু রাতে বৃষ্টির ফোটার মতো কুয়াশা পড়ছে। এবারে শীতে যাতে কেউ কষ্ট না পায় সেজন্য প্রশাসনের কাছে অনুরোধ করবো যাতে যারা গরীব অসহায় আছে তাদের পাশে থাকার জন্য।
ঠাকুরগাঁও সিভিল সার্জন ডা.মাহফুজার রহমান সরকার বলেন,আগের মতো আমাদের জেলা বর্তমানে তেমন কোন করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেনা। সামনে যেহেতু শীত আসছে সে ক্ষেত্রে আমাদের সকলকে সচেতন থাকতে হবে। ইতিমধ্যে স্বাস্থ্য নিয়ে সকলকে সচেতন করা হচ্ছে।
ইতিমধ্যে আমরা ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতাল সহ উপজেলার সকল হাসপাতালে শীতের জন্য অতিরিক্ত করে আরো ৫০টি বেড বৃদ্ধি সহ স্টাফদের যথাযথ প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা করা হয়েছে বলেও জানান সিভিল সার্জন।
ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক ড.কেএম কামরুজ্জামান সেলিম বলেন, হিমালয়ের কাছাকাছি জেলা আমাদের ঠাকুরগাঁও। সেই কারনেই এখানে শীতের তীব্রতা একটু বেশি। গতবারের শীতে আমরা সকলের পাশে থেকেছি। এই শীতেও অসহায়, দরিদ্র মানুষ ও বৃদ্ধা যারা রয়েছে তাদের যাতে কোন কষ্ট না হয় সেজন্য সকল ধরনের ব্যবস্থা নিবো।
তিনি আরো বলেন,শীতে যাতে আমাদের জেলার করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকে এজন্য আমরা প্রতিটি সময় জনগণকে সচেতন করছি। করোনা প্রতিরোধের যে সব নিয়মগুলো আছে সেগুলো মেনে চলে। সেই সাথে সকলে যাতে মাস্ক পড়ে সেই বিষয়টিতে আমরা বেশি জোড়দার দিয়েছি। ইতিমধ্যে আমাদের ম্যাজিষ্ট্রেটরা বিভিন্ন এলাকায় যাচ্ছে এবং যারা এই মাস্ক পড়ছেনা তাদের জরিমানাও করছেন।
বহুমাত্রিক.কম