ফাইল ছবি
গাজীপুর : গাজীপুর সরকারি মহিলা কলেজের এক শিক্ষার্থী হিজাব পরে ক্লাশ করার সময় তাকে অফিসকক্ষে ডেকে এনে ইচ্ছার বিরুদ্ধে হিজাব খুলতে বাধ্য করা হয়। এ ঘটনার পর থেকে শিক্ষার্থী ক্লাশ করতে পারছেন না। সম্প্রতি কলেজের উচ্চ মাধ্যমিকের হিসাব বিজ্ঞান ক্লাশে এ ঘটনা ঘটে।
ক্লাশে হিজাব পরা নিয়ে আপত্তি উত্থাপনকারী শিক্ষক মুজিবুর রহমান মূলত পার্শ্ববর্তী কাজী আজিম উদ্দিন কলেজের শিক্ষক। নিজ আগ্রহে তিনি মহিলা কলেজে ‘অতিথি শিক্ষক’ হিসাবে পাঠদান করেন। নিগ্রহের শিকার শিক্ষার্থীর বাবা মুজিবুর রহমানের সহকর্মী। একজন অতিথি শিক্ষকের এ ধরণের ঔদ্ধত্যে কলেজের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা উষ্মা প্রকাশ করেছেন।
সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শিক্ষক মুজিবুর রহমান ক্লাশ চলাকালীন ওই শিক্ষার্থীর নাম ধরে দাঁড় করিয়ে মুখ থেকে হিজাব খুলতে বলেন। শিক্ষার্থী ধর্মীয় অনুশাসনের কথা বলে হিজাব খুলতে অপারগতা প্রকাশ করেন। এতে শিক্ষক ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে নানা ভাষায় তিরষ্কার করে সোজা অধ্যক্ষের কক্ষে চলে যান। পরে অধ্যক্ষের মাধ্যমে তাঁর কার্যালয়ে ওই শিক্ষার্থীকে ডেকে এনে হিজাব খুলতে বাধ্য করা হয়।
এ ঘটনা জানাজানি হলে কলেজের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। একাধিক অভিভাবক নাম প্রকাশ না করে বলেন, বাইরের একজন শিক্ষকের মেয়েদের চেহারা দেখার জন্য এত মরিয়া ভাব কেন থাকবে। তাছাড়া ওই শিক্ষক (মুজিবুর রহমান) কত কীর্তিমান শহরের সকলেই জানেন। তিনি তিনটি বিয়ে করেছেন। এর মধ্যে সর্বশেষ স্ত্রী আবার নিজের ছাত্রী। নিজ বাসায় তিনি মহিলা হোস্টেল দিয়ে ব্যবসা ফেঁদেছেন।
অভিভাবকরা আরও বলেন, মহিলা কলেজ হলেও এখানে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক পুরুষ শিক্ষক কর্মরত। তাই ধর্মীয় অনুশাসন মেনে কোন শিক্ষার্থী মুখ ঢাকতেই পারে। এতে এই কলেজের অন্য শিক্ষকদের অসুবিধে হয় না। উনার এত সমস্যা কিসের ?
ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ফেরদৌসী পারভিন এর সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ‘কলেজের ভেতরে মেয়েদের হিজাব না পরার মৌখিক নির্দেশ দেওয়া আছে’। এ ব্যাপারে সরকারি নির্দেশনা আছে কি-না সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের তিনি কোন সদুত্তর দিতে পারেননি।
বহুমাত্রিক.কম