করোনা পরিস্থিতির মধ্যে স্বাস্থ্য সুরক্ষা মেনে যশোর ৬ কেশবপুর সংসদীয় আসনের উপ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে এই ভোট গ্রহণ শুরু হয়ে একটানা বিকেল ৫টা পর্যন্ত চলে। ভোটগ্রহণ শেষে নৌকার প্রার্থী শাহীন চাকলাদার এক লাখ ২৪ হাজার ৩ ভোট পেয়ে বেসরকারি ভাবে নির্বাচিত হয়েছেন।
নির্বাচনে এক লাখ ২৯ হাজার ৬৭ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। নির্বাচনে ধানের শীষের প্রার্থী পেয়েছেন ২ হাজার ১২ ভোট এবং লাঙ্গলের প্রার্থী পেয়েছেন এক হাজার ৬৭৮ ভোট।
এই উপ-নির্বাচনে আসনটিতে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ছিলেন নৌকা প্রতীকের প্রার্থী যশোর জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদার ও লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী জাতীয় পার্টি নেতা হাবিবুর রহমান হাবিব। নতুন করে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার পর বিএনপি কেন্দ্রীয়ভাবে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোয় মাঠে নামেননি ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা আবুল হোসেন আজাদ।
যদিও ব্যালটে প্রতীকটি ছিল। নির্বাচনে এই আসনের ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ৩ হাজার ১১৮ জন। ভোটগ্রহণ চলাকালে বিভিন্ন কেন্দ্রে গিয়ে দেখা গেছে, হ্যান্ড স্যানিটাইজার বা সাবানপানি দিয়ে হাত ধুয়ে মাস্ক পড়ে ফাঁকা ফাঁকা লাইনে দাঁড়িয়ে ভোটাররা ভোট দিয়েছেন। গোটা এলাকা নৌকা প্রতীকের কর্মী সমর্থকরা মুখরিত করে রেখেছিলেন।
এরপর বিপরীতে জাতীয় পার্টির তেমন কোনো কর্মী সমর্থককে চোখে পড়েনি। যশোর জেলা সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির জানান, যশোর-৬ কেশবপুর আসনের উপ-নির্বাচনের ভোটগ্রহণ সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে সম্পন্ন হয়েছে। বিকেল ৫টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ শেষে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। করোনাকালের মধ্যে ভোটগ্রহণ হওয়ায় ভোটাররা স্বাস্থ্যবিধি মেনে স্বতস্ফূর্তভাবে ভোটপ্রদান করেছেন।
প্রাথমিক হিসাবে ৬০ ভাগ ভোট কাস্ট হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী যশোর জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদার বলেছেন, সুষ্ঠুভাবে ও সুন্দর পরিবেশে স্বাস্থবিধি মেনে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের পাশাপাশি তার নিজ উদ্যোগেও প্রতিটি কেন্দ্র স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী রাখা হয়েছিলো। তিনি জয়ী হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী ও কেশবপুরবাসীকে ধন্যবাদ জানান। অন্যদিকে, লাঙল প্রতীকের জাতীয় পার্টির প্রার্থী হাবিবুর রহমান অভিযোগ করেছেন, বিভিন্ন কেন্দ্রে তার পোলিং এজেন্টকে বসতে দেওয়া হয়নি।
ভোটারদের বের করে দেয়া হয়েছে। প্রশাসনের সামনে নৌকার লোকজন এসব করলেও তারা কিছু বলেনি। যশোর জেলা প্রশাসক ও রির্টানিং কর্মকর্তা মো: তমিজুল ইসলাম খান জানান, ভোটগ্রহণ অবাধ, সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও নিরাপদ করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিপুল সংখ্যক সদস্য নিয়োজিত ছিল।
নির্বাচনী এলাকায় ২ জন জুডিশিয়াল ও ১৪ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করেছেন। ছয় প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন ছিল। এছাড়াও ১৮টি মোবাইল টিম ও স্ট্রাইকিং ফোর্সের ৬টি টিম নির্বাচনের মাঠে সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করেছে। প্রতিটি কেন্দ্রে পুলিশ, আনসার-ভিডিপি সদস্যদের নিয়োজিত রাখা হয়। নির্বাচন কমিশন ভোটারদের জন্য অবশ্য প্রতিটি কেন্দ্রে ব্যানারসহ হ্যান্ড স্যানিটাইজার, সাবান, টিস্যু পেপারের ব্যবস্থা রাখা হয়। নির্বাচন উপলক্ষে মঙ্গলবার সকালে উপজেলার ৭৯টি ভোটকেন্দ্রে ব্যালটপেপার পাঠানো হয়।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ২১ জানুয়ারি সংসদ সদস্য ও সাবেক জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ইসমাত আরা সাদেকের মৃত্যু হলে আসনটি শূন্য হয়। এরপর বিজ্ঞপ্তি জারি করে উপ-নির্বাচনের তফসীল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। ২৯ মার্চ নির্বাচনের তারিখ থাকলেও তার এক সপ্তাহ আগে করোনার কারণে ২২ মার্চ ওই নির্বাচন স্থগিত করে নির্বাচন কমিশন।
বহুমাত্রিক.কম