Bahumatrik | বহুমাত্রিক

সরকার নিবন্ধিত বিশেষায়িত অনলাইন গণমাধ্যম

বৈশাখ ১১ ১৪৩১, শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪

কুষ্টিয়ায় ভুয়া চিকিৎসকের দৌরাত্ম্য, প্রতারিত সাধারণ মানুষ

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ০৩:৩৭, ৬ আগস্ট ২০১৬

আপডেট: ০০:০০, ৩১ ডিসেম্বর ১৯৯৯

প্রিন্ট:

কুষ্টিয়ায় ভুয়া চিকিৎসকের দৌরাত্ম্য, প্রতারিত সাধারণ মানুষ

ছবি-বহুমাত্রিক.কম

কুষ্টিয়া : কুষ্টিয়ায় ডা: এ এস এম আলম নামের এক ভুয়া সহকারী অধ্যাপকের সন্ধান পাওয়া গেছে। তিনি ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছে এমন তথ্য দিয়ে কুষ্টিয়া শহরের বিভিন্ন ক্লিনিক ও ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে রোগী দেখে সাধারন মানুষের সাথে প্রতারণা করে চলেছেন।

তিনি ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছে এ ব্যাপারে সেখানকার সংশ্লিষ্টদের সাথে যোগাযোগ করে কোন সঠিক তথ্য পাওয়া যায়নি।

ডা: এ এস এম আলম তার ভিজিটিং কার্ডে এম.বি.বি.এস, এম.আর.সি.এস (লন্ডন), এফ.সি.পি.এস (সার্জারি) এম.এস (নিউরো সার্জারী) এবং ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক হিসেবে উল্লেখ রয়েছে।

এভাবে দিনে পর দিন প্রতারনার শিকার হচ্ছে দালাল মাধ্যমে গ্রাম থেকে সহজর সরল মানুষেরা। যারা চিকিৎসার জন্য শহরের বিভিন্ন নামিদামি ক্লিনিক কিংবা ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে এসে ধোকা খাচ্ছে প্রতিনিয়িত।

ডা: এ এস এম আলম শহরের প্রধান ডাকঘরের সামনে সীম্যাক ডায়াগনষ্টিক সেন্টার, পপুলার ডায়াগনষ্টিক ও নিউ এ্যাপোলো ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনষ্টিকসহ বিভিন্ন ক্লিনিক এবং ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে রোগী দেখে থাকেন।

শুধু কুষ্টিয়া শহরই নয়, পাশ্ববর্তী আলমডাঙ্গা, চুয়াডাঙ্গা, গাংনীতে রোগী দেখে থাকেন। তবে সেটি মাঝে মাঝে। তবে এর আগে তিনি সনো হসপিটাল-২ তে নিয়মিত রোগী দেখতেন। সেখানে ভুয়া সহকারী অধ্যাপকের পরিচয় গোপন করে রোগী দেখতো। বিয়ষয়টি জানতে পেরে হাসপাতাল কতৃপক্ষ সেখান থেকে বের করে দেয় বলে একটি বিশ্বস্ত সুত্রে জানা গেছে।

ডা: এ এস এম আলম শুধু ভুয়া সহকারী অধ্যাপকই নন। ভিজিটিং কার্ডে উল্লেখ করেছে এম.বি.বি.এস, এম.আর.সি.এস (লন্ডন), এফ.সি.পি.এস (সার্জারি) এম.এস (নিউরো সার্জারী) এবং ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক।

আবার তার লাগানো সাইনবোর্ডে উল্লেখ করা রয়েছে ডা: মো: এ,এম,এস আলম, এম.বি.বি.এস,ঢাকা, সিসিডি (বার্ডেম), সিএমইউ (আলট্রা) এম.আর.সি.এস (লন্ডন), এফ.সি.পি.এস (সার্জারি) এম.এস (নিউরো সার্জারী), প্যারালাইসিস ও বাত ব্যথা, নিউরো মেডিসিন, ব্রেন, নার্ভ ও নিউরোমেডিসিন ও সার্জন বিশেষজ্ঞ এবং সহকারী অধ্যাপক ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল।

বিশেষজ্ঞ ব্রেন ব্রেন, নার্ভ ও নিউরোমেডিসিন ও সার্জন। তবে সাইনবোর্ড এবং ভিজিটিং কার্ডে তার নাম এবং ডিগ্রি আলাদা আলাদা দেখতে পেয়ে বিশিষ্টজনরা নানান মস্তব্য প্রকাশ করেছে।

বিশেজ্ঞরা বলছে, একশ্রেণীর চিকিৎসক নিজের নামপত্র (ভিজিটিং কার্ড) বা নামফলকে যথাযথ কর্তৃপক্ষের স্বীকৃত নয় এমন নানা ধরনের ডিগ্রি ব্যবহার করছেন। বড় মাপের চিকিৎসক হিসেবে নিজেকে জাহির করার জন্য তাঁরা এটি করেন। আইন বলছে, এসব অস্বীকৃত ডিগ্রি ব্যবহার করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

এব্যাপারে ডা: এ এস এম আলমের সাথে কথা হলে তিনি এর সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক, আমাকে বেশ কয়েক বছর ডেপুটেশনে (ওএসডি)তে রাখা হয়েছে। আমি এম.বি.বি.এস পাশ করেছি সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে। এবং এম.আর.সি.এস (লন্ডন) লেখা থাকলেও আমি কোলকাতা থেকে এম.আর.সি.এস কোর্স সম্পন্ন করেছি। ভিজিটিং কার্ড এবং সাইনবোর্ডের ব্যাপারে ইচ্ছামত ক্লিনিক ও ডায়াগনষ্টিক সেন্টার কর্তৃপক্ষ লিখে রেখেছে।

এব্যাপারে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষ অধ্যাপক শংকর নারায়ণ দাস জানান, ডা: এ এস এম আলম নামের ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক বলে কেউ নেই। তবে কেউ যদি এরকম পরিচয় দিয়ে থাকে তাহলে তার বিরুদ্ধে প্রশাসনিকভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিৎ।

কুষ্টিয়ার সিভিল সার্জন ডা: নাজমুল ইসলাম বলেন, অস্বীকৃত নাম, পদবি, বিবরণ বা প্রতীক এমনভাবে ব্যবহার বা প্রকাশ করা ঠিক নয়, যা দেখে অতিরিক্ত পেশাগত যোগ্যতা আছে বলে কারও মনে হয়। অস্বীকৃত ডিগ্রি, পদবি ব্যবহার অপরাধ। যদি কেউ এ ধরনের কাজ করে থাকে তাহলে সেটি অবশ্যই অন্যায় করেছে।

বহুমাত্রিক.কম

Walton Refrigerator Freezer
Walton Refrigerator Freezer