কুষ্টিয়ায় বোধন থিয়েটারের প্রযোজনায় মঞ্চ নাটক "কোর্ট মার্শাল" অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার সন্ধ্যায় কুষ্টিয়ার জেলা শিল্পকলা একাডেমির অডিটোরিয়ামে এ নাটক মঞ্চস্থ হয়।
স্বাধীনতার পরবর্তী সময় আমাদের দেশে স্বাধীনতা বিরোধী শক্তির অপচেষ্টায় যে, অজানা ঘটনাগুলো ঘটেছিল ঠিক তেমনি একটি চিত্র মঞ্চস্থ হয়েছে এই নাটকের মধ্য দিয়ে। নাট্য অভিনেতা মরহুম মাহবুব আলীর স্মরণে ও কুষ্টিয়া জেলা শিল্পকলা একাডেমির আয়োজনে ও বোধন থিয়েটারের সহযোগিতায় ‘কোর্ট মার্শাল’ ১১২ তম প্রদর্শনী উৎসর্গ করা হয়।
নাটকের উদ্বোধন করেন কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক ও জেলা শিল্পকলা একাডেমির সভাপতি মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম। এসময় তিনি বলেন, ইতিহাস ঐতিহ্য সাংস্কৃতিক জেলা কুষ্টিয়া। শিল্প-সংস্কৃতির আলোয় আলোকিত হলে মানুষ উন্নত মানসিকতা সম্পন্ন হবে। সংস্কৃতির সুষ্ঠু চর্চা ও বিকাশ হলে উগ্রতা ও জঙ্গিবাদ থেকে তরুণ প্রজন্ম দূরে থাকবে। দেশবাসী সবাই শিল্প-সংস্কৃতিমনা হোক, সেটাই চাই। এরকম মঞ্চ নাটক বেশি বেশি করে উপহার দেওয়ার আহবান জানান তিনি।
তিনি বলেন, মঞ্চ নাটক মানেই এমন এক ধরনের শিল্পকলা যার মধ্যে শিল্পীরা তাদের কণ্ঠ এবং শরীরকে ব্যবহার করে শৈল্পিক অভিব্যক্তির সৃষ্টি করেন। এটি দৃষ্টিধর্মী শিল্পকলার থেকে সরাসরি দর্শকের সামনে পরিবেশিত হয়। আমরা মঞ্চ নাটক দেখার মধ্য দিয়ে যেন সেসময়ের বাস্তবচিত্র দেখতে পেলাম। শিল্প ও কলাকুশীলদের চমৎকার উপস্থাপন সত্যি আমাদের মতো দর্শকদের আনন্দ মাত্রা বাড়িয়ে তুলেছে।
জেলা কালচারাল অফিসার সুজন রহমানের সভাপতিত্বে এ সময় স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক আরিফুজ্জামান, কুষ্টিয়া জেলা শিল্প কলা একাডেমির সহ-সভাপতি আশরাফ উদ্দিন নজু, কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ অজয় সুরেকা, বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক মমিনুর রহমান মোমিজ, যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক খন্দকার ইকবাল মাহমুদ, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক এবং সাংবাদিক ইউনিয়ন কুষ্টিয়ার সভাপতি রাশেদুল ইসলাম বিপ্লব, ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সহসভাপতি আফরোজা আক্তার ডিউ, জেলা ছাত্র লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ হাফিজ চ্যালেঞ্জ সহ অন্যন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
পরিবার পরিজন নিয়ে মঞ্চ নাটক দেখতে এসেছিলেন কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ও দৈনিক দেশের বাণী পত্রিকার প্রকাশক ও সম্পাদক মমিনুর রহমান মোমিজ। তিনি বলেন, দীর্ঘদিন পর এগো সুন্দর পরিবেশে মঞ্চ নাটক উপভোগ করলাম। ‘শিল্পীদের নিখুঁত অভিনয় আমাদের মুগ্ধ করেছে। নাটকটি দেখে মনে হচ্ছে রাজাকার ও মুক্তিযোদ্ধাদের রক্তের দুটি ধারা বাংলাদেশ। এ ধরনের নাটক বার বার মঞ্চস্থ হওয়া প্রয়োজন বলেও জানান তিনি।
কুষ্টিয়া জেলা শিল্পকলা একাডেমির সাধারণ সম্পাদক মোঃ আমিরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা আমাদের ১১২ তম নাটক উপস্থাপন করেছি। এর মধ্য দিয়ে সামাজিক শ্রেণিবদ্ধ, রাজনৈতিক উত্তরাধিকার, প্রবৃত্তির উৎপীড়ন এবং নৈরাজ্যের সংগ্রাম হয়ে উঠেছে নাট্য চিন্তার মূল প্রতিপাদ্য। আগামী প্রজন্মকে বেশি বেশি করে এই নাটক দেখার আহ্বান জানাচ্ছি।’
কুষ্টিয়া জেলা শিল্পকলা একাডেমির সাধারণ সম্পাদক মোঃ আমিরুল ইসলামের সার্বিক তত্ত্বাবধায়নে এবং আসলাম আলীর প্রযোজনায় নাটকটিতে অভিনয় করেন, আমিরুল ইসলাম, আনিসুর রহমান, মীর আতিক আহমেদ, আনোয়ার বাবু, আসলাম আলী, সাহেব সরোয়ারদী, শহিদুর রহমান বাবু, বিশ্বজিৎ মজুমদার, আশরাফুন্নাহার দিনু, ফাহিম হাসান, নান্টু আলম ও শাহিন সরকার।
বহুমাত্রিক.কম