কুমিল্লা : সাম্প্রতিক সময়ে রাজধানীর চকবাজার ও বনানীর অগ্নিকান্ডের ঘটনার পর আতংক কাজ করছে দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাঝে।খোঁজ নিয়ে দেখা যায়,বিশ্ববিদ্যালয়টির একাডেমিক ভবন,প্রশাসনিক ভবন সহ আবাসিক হল গুলোতে নেই আগুন নিয়ন্ত্রণের জন্য যথেষ্ট প্রস্তুতি ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন, তিনটি একাডেমিক ভবন, চারটি আবাসিক হল, কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়াসহ অন্যান্য স্থাপনা পরিদর্শন করে দেখা যায়,এসব স্থাপনায় স্থাপন করা অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্রগুলোর বেশিরভাগই হয়তো মেয়াদোত্তীর্ণ নয়তো অকেজো অবস্থায় পড়ে রয়েছে।কোনো কোনো যন্ত্রে নেই মেয়াদের স্টিকার কিংবা প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি। আবাসিক হলগুলোর আগুন নিয়ন্ত্রণের মূল্যবান যন্ত্র চুরি হওয়ারও অভিযোগ রয়েছে।
গুরুত্বপূর্ণ ভবনগুলোর কোনোটিতেই নেই একাধিক ফটক কিংবা জরুরী বহির্গমনের উপায়।
হাতেগোনা কয়েকটি অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র সক্রিয় থাকলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশিরভাগ শিক্ষার্থীরই জানা নেই এর ব্যবহারবিধি। ২০১৮ সালের এপ্রিলে ফায়ার সার্ভিসের আগুন প্রতিরোধ বিষয়ক একটি মহড়া অনুষ্ঠিত হলেও এরপর এ বিষয়ে আর কোনো পদক্ষেপ নেয়নি প্রশাসন। যদিও সাম্প্রতিক সময়ে দেশে অগ্নিকান্ডে দুর্ঘটনার হার বেড়েই চলেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী নাজমুল ফাহাদ জানান, ‘উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের উচিত সব ব্যাপারে সচেতন থাকা। আগুন লাগার মত দুর্ঘটনা যে হারে বেড়ে চলেছে সেই অনুপাতে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে না। ক্যাম্পাসের আশেপাশে নেই কোনো পুকুর কিংবা জলাশয়। অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা রয়েছে নামমাত্র, তাও এ বিষয়ে সচেতন নয় শিক্ষার্থীরা। অগ্নিকান্ডের কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে আগুন নিয়ন্ত্রণ করা দুরূহ হয়ে উঠবে।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ‘শীঘ্রই এ নিয়ে কাজ করা হবে’ এমন দাবি করে বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশিরভাগ দপ্তরই একে অন্যের উপর দায় চাপিয়েছেন।
প্রকৌশল দপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী (সিভিল) এস. এম. শহিদুল হাসান বলেন, ‘অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রের মেয়াদ উত্তীর্ণ ও অকেজো এটা আমিও দেখেছি। তবে এর সংশ্লিষ্ট দপ্তর আমার নয়। এটি কোন দপ্তরের অধীনে তাও আমি জানি না।’
তিনি বলেন, ‘এগুলো মেরামত করা জরুরী। এটি নিরাপত্তা শাখা, নাকি এস্টেট শাখা অথবা পরিকল্পনা দপ্তর দেখভাল করে তা একটু খোঁজ নিতে হবে। তবে নতুন যে ভবনগুলো হচ্ছে সেগুলোতে যথাযথ অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা থাকছে।’
অন্যদিকে নিরাপত্তা কর্মকর্তা মো. সাদেক হোসেন মজুমদার অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র মেরামত তার দপ্তরের দায়িত্ব নয় বলে অন্য দপ্তরের উপর দায় চাপিয়ে দেন।
বহুমাত্রিক.কম