Bahumatrik | বহুমাত্রিক

সরকার নিবন্ধিত বিশেষায়িত অনলাইন গণমাধ্যম

বৈশাখ ৪ ১৪৩১, বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪

কালবৈশাখীর ক্ষয়ক্ষতি: কমলগঞ্জে একমাসেও মেলেনি সহায়তা

নূরুল মোহাইমীন মিল্টন, নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২৩:৩৯, ২৯ মে ২০১৯

প্রিন্ট:

কালবৈশাখীর ক্ষয়ক্ষতি: কমলগঞ্জে একমাসেও মেলেনি সহায়তা

ছবি : বহুমাত্রিক.কম

মৌলভীবাজার: ‘একমাস আগে ঘুর্ণিঝড়ে বসতঘরের টিনের চালা ভাঙ্গিয়া উড়াইয়া নিয়া গেছে। থাকার মতো জায়গা নাই। বৃষ্টির পানিতে ভিজিয়া দু:খকষ্টে দিন গেছে। এখন আবার বন্যার পানিতে সবজি ক্ষেত পুরাটা ডুবিয়া বিনাশ হই গেছে। সবজি ক্ষেত করিয়া সবজি বিক্রির আশায় খরচ করার পর এখন আর আয় রোজগারের কোন পথ নাই। বারবার ক্ষতিগ্রস্ত হইলেও এখন পর্যন্ত ঘর মেরামত কিংবা ক্ষেতের লাগি কোন সাহায্য পাইছি না। খুব কষ্টের মধ্যে দিন কাটের’-কথাগুলো বলছিলেন কমলগঞ্জ উপজেলার শমশেরনগর ইউনিয়নের কেছুলুটি গ্রামের ফরিদ মিয়া।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, গত ২৮ এপ্রিল (২০১৯) রোববার দুপুরে স্মরণকালের কালবৈশাখী ঝড়ে উপজেলার মুন্সিবাজার, শমশেরনগর, পতনউষার ইউনিয়নের একাংশে প্রায় অর্ধসহস্রাধিক ঘর বিধ্বস্ত হয়। এরমধ্যে প্রায় শতাধিক ঘর সম্পূর্ণ এবং বাকিগুলো আংশিক বিধ্বস্ত হয়েছে। কালবৈশাখি ঝড়ে শমশেরনগরের কেছুলুটি গ্রাম, পতনঊষারের ধুপাটিলা, পতনঊষারসহ কয়েকটি গ্রামের বাড়িঘর ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

এছাড়াও প্রচুর গাছগাছালি উপড়ে বিদ্যুৎ লাইনের ব্যাপক ক্ষতি সাধন হওয়ায় এক সপ্তাহ বন্ধ হয়ে পড়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ। এই ঝড়ে অন্যদের মতো ক্ষতিগ্রস্ত হন কেছুলুটি গ্রামের ফরিদ মিয়া। এর ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে না উঠতে গত বৃহস্পতিবারের ভারী বর্ষনে পাহাড়ি ঢলে বন্যার সৃষ্টি হয়। বন্যায় রাস্তাঘাট, ক্ষেত খামার তলিয়ে যায়। ফলে অনেকেই নানাভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হন। তবে কালবৈশাখি ঝড়ে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার একমাস অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত তারা কোন সহযোগিতা পাননি। ফলে তাদের জীবন জীবিকা দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে।

ধুপাটিলা গ্রামের শেলী বেগম, সারবান বিবি বলেন, আমাদের ঘর ঘুর্ণিঝড়ে ভেঙ্গে দিল, অথচ এখন পর্যন্ত আমরা কোন সহযোগিতা পাইনি। এখন আবার বন্যায়ও ক্ষতি করলো। দু’দিন পরে ঈদ, আমরা ঈদের আনন্দ থেকে বঞ্চিত হবো। কেছুলুটি গ্রামের ফরিদ মিয়া বলেন, আমার প্রায় এক কিয়ার জমিতে করলা ও কুমড়া সহ বিভিন্ন ধরণের সবজি ক্ষেত করে এখন বিক্রির সময়ে বন্যার পানিতে ডুবে সব বিনষ্ট হয়েছে। এখন পর্যন্ত ঘরের জন্যও কিছু পাইনি, ক্ষেতখামারের জন্যও কোন সাহায্য নাই।

পতনঊষার ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান নারায়ন মল্লিক ও শমশেরনগর ইউনিয়নের হাফিজুল হক চৌধুরী বলেন, যথা সময়ে উপজেলায় ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা প্রদান করা হলেও এখন পর্যন্ত কোন সহযোগিতা প্রদান করা হয়নি। পতনঊষারে শতাধিক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর বলা হয়েছে বরাদ্ধ কম আসছে তাই মাত্র ১৬ জনকে এক বান্ডিল করে ঢেউটিন আর ১০ জনকে এক হাজার করে টাকা দেয়া হবে। তাহলে অন্যরা কি করবে।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস সূত্রে জানা যায়, ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য মাত্র ত্রিশ বান্ডিল ঢেউটিন ও ১০ মে.টন চাল বরাদ্ধ করা হয়েছে। কিছুদিনের মধ্যেই বিতরণ করা হবে। প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ইউনিয়ন থেকে সঠিকভাবে তালিকা আসার পর বরাদ্ধ দেয়া হবে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আনিসুজ্জামান বলেন, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য কোন সহায়তা আসেনি। যদি আসে তাহলে তারা পাবেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশেকুল হক বলেন, আসলে ক্ষয়ক্ষতির তোলনায় বরাদ্ধ কিছুটা কম। তারপরও প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে এগুলো শিগগির বিতরণ করা হবে।

বহুমাত্রিক.কম

Walton Refrigerator Freezer
Walton Refrigerator Freezer