বাংলাদেশসহ বিশ্বের ২ শতাধিক দেশে আতঙ্ক সৃষ্টিকারী নোভেল করোনাভাইরাসের জিনগত রহস্য সাফল্যজনকভাবে প্রথমবারের মতো উন্মোচন করেছে ডিএনএ সল্যুশনসহ যৌথভাবে তিনটি প্রতিষ্ঠান।
সরকারী পর্যায়ের অন্য দুটি প্রতিষ্ঠান হলো বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের বিসিএসআইআরের ডিআরআইসিএম এবং কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতাল। যুগান্তকারী এ আবিষ্কারের ফলে করোনা ভ্যাকসিন উৎপাদনে বাংলাদেশ আরও এক ধাপ এগিয়ে যাবে বলে বিজ্ঞানীরা আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।
কোভিড-১৯ নামে পরিচিত করোনাভাইরাস ইতোমধ্যে ইউরোপ-আমেরিকাসহ সারাবিশ্বের ৩ লক্ষাধিক মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে। এর মধ্যে বাংলাদেশেও আড়াই শ’র অধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে, আক্রান্ত হয়েছে বিশ সহস্রাধিক এবং দিনকে দিন এই সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে। দেখা যাচ্ছে এই ভাইরাসে দেশ ভেদে মৃত্যু হার কম-বেশি হচ্ছে। আক্রান্তের হার এবং অসুস্থতায় তীব্রতা ও মাঝারি নিয়ে অনেকে সুস্থ হচ্ছে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এবং সংশ্লিষ্ট বিজ্ঞানীরা বলছেন, ভাইরাসটির জিনগত বৈশিষ্ট্যের তারতম্যের কারণেই এমনটি হচ্ছে।
তাই ভাইরাসটির সঠিক কার্যকর ভ্যাকসিন তৈরির জন্য এর জিনগত বৈশিষ্ট্য উন্মোচন খুবই জরুরী। এই বিষয়টি স্মরণ রেখেই সরকারী দুটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ শুরু করে ডিএনএ সল্যুশন লিঃ। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের বিসিএসআইআর’র ডিআরআইসিএম এবং কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালের যৌথ উদ্যোগে দেশে করোনা আক্রান্ত দেড় শতাধিক রোগীর নমুনা নিয়ে গবেষণা করে।
বাংলাদেশে বেসরকারী পর্যায়ের সবচেয়ে অত্যাধুনিক ল্যাব ডিএনএ সল্যুশন লিমিটেড তাদের ‘এম্পিøকন বেজড নেক্সট জেনারেশন সিকোয়েন্সিং সিস্টেমের’ মাধ্যমে ইতোমধ্যে কোভিড-১৯’র পাঁচটি ভাইরাসের পুরো জিনোম সিকোন্সিং সাফল্যজনকভাবে উন্মোচন করে এক যুগান্তকারী মাইলফলক অর্জন করেছে। যা বাংলাদেশে সর্বপ্রথম। বাকি ভাইরাসগুলোর জিনোম সিকোন্সিংও আগামী কিছুদিনের মধ্যেই সম্পন্ন হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। করোনাভাইরাসগুলোর উন্মোচিত জিনোম সিকোন্সিংগুলো ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক জিন ডাটা ব্যাংক বাংলাদেশ হতে গ্রহণ করেছে।
অত্যাধুনিক ‘এম্পিøকন বেজড নেক্সট জেনারেশন সিকোয়েন্সিং সিস্টেমের’ মাধ্যমে বাংলাদেশে সর্বপ্রথম করোনাভাইরাসের জিনগত রহস্য উন্মোচনের মতো একটি কঠিন কাজে সার্বিক সহযোগিতা এবং উৎসাহ প্রদানের জন্য বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমানকে অভিনন্দন জানিয়েছেন ডিএনএ সল্যুশনে ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাবেদ ইকবাল পাঠানসহ সংশ্লিষ্টরা। বাংলাদেশের করোনাভাইরাসগুলোর উন্মোচিত তথ্য-উপাত্ত হতে জিনের বৈশিষ্ট্য, রোগের গতি প্রকৃতি হতে করোনার প্রতিষেধক উৎপাদনে বাংলাদেশের ঔষধ শিল্প সাফল্যজনকভাবে এগিয়ে যাবে মর্মে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন ডিএনএ সল্যুশনের সমন্বয়ক বিজ্ঞানী ড. ফজলে আলম রাব্বি, সরকারী ডিআরআইসিএম’এর পরিচালক ড. মালা খান, কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালের পরিচালক ডিআইজি ড. হাসানুল হায়দার।
এছাড়া এ গবেষনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন স্বনামধন্য ওষুধ কোম্পানি নিপ্রোজেএমআই ফার্মার প্রধান নির্বাহী মিজানুর রহমান, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. কাজী নাদিম হাসান এবং ড. আব্দুল খালেক।