ছবি : বহুমাত্রিক.কম
মৌলভীবাজার: বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত থেকে টানা ভারী বর্ষণে ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে কমলগঞ্জ উপজেলার নিন্মাঞ্চল তলিয়ে গেছে। বর্ষণের ঢলে উপজেলার প্রায় তিন হাজার একরের আউশ ক্ষেত নিমজ্জিত হয়েছে। নিচু স্থানের বাড়িঘর পানিবন্দি ও রাস্তাঘাটও তলিয়ে গেছে। উজানে ঢল নামতে থাকায় নদনদী ও নিন্মাঞ্চলে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে।
সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত থেকে আকস্মিকভাবে ভারী বর্ষণ শুরু হওয়ায় উপজেলার বিভিন্ন এলাকার খাল, বিল, ছড়া ও জলাশয় সমুহ পানিতে ভরপুর হয়ে উঠে। টানা বর্ষণের ফলে উজান থেকে পাহাড়ি ঢল নেমে মাঠ, ঘাট, গ্রাম্য রাস্তা ও নিন্মাঞ্চলের শমশেরনগর, পতনঊষার ইউনিয়নের কয়েকটি বাড়িঘর পানিবন্দি হয়ে পড়ে। প্রবল বর্ষণ ও উজানের ঢলে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের প্রায় তিন হাজার একরের আউশ ক্ষেত নিমজ্জিত হয়েছে।
আউশ ক্ষেত ছাড়াও পানিতে কিছু আমনের বীজতলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় উজান থেকেও ঢল নেমে নদনদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। নিন্মাঞ্চলে বাড়িঘর থাকায় শমশেরনগর ও পতনঊষার ইউনিয়নের প্রায় ত্রিশ পরিবার পানি বন্দি রয়েছে। রোপিত আউশ ক্ষেত তলিয়ে যাওয়ায় শমশেরনগরের ভরতপুর, রঘুনাথপুর, নিত্যানন্দপুর, সতিঝিরগ্রাম, কেছুলুটি ও পতনউষার ইউনিয়নের মাইজগাও, পতনঊষার, ধূপাটিলাসহ বিভিন্ন গ্রামের কৃষকদের কেউ কেউ হতাশ হয়ে পড়েছেন।
শমশেরনগর ইউনিয়নের কৃষক গৌতম পাল, গৌরাঙ্গ পাল, নাইওর মিয়া, বিষ্ণু পাল, খালিক মিয়া, কনু মিয়া বলেন, রাস্তায় কালভার্টের অভাবে দশটি গ্রামের পানি আসায় আমাদের গ্রামের রোপিত প্রায় পাঁচশ’ একরের আউশ ক্ষেত তলিয়ে গেছে। পানি বাড়ার কারণে ক্ষেত সমুহ বিনষ্ট হয়ে পড়বে। আউশ ক্ষেত তলিয়ে যাওয়া ছাড়াও রঘুনাথপুর ও ভরতপুর গ্রামের পনেরটি ঘর পানিবন্দি রয়েছে। ইউনিয়নের অন্যান্য কয়েকটি ও পতনউষারের দুটি গ্রামের আরও প্রায় পণেরটি বাড়ি পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। উজান থেকে নেমে আসায় নিন্মাঞ্চলে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় দরিদ্র পরিবার সদস্যরা আতাঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়ছেন।
তবে কমলগঞ্জ উপজেলার উপসহকারী কৃষিকর্মকর্তা কৃষ্ণ সিংহ বলেন, বর্ষণের পানিতে উপজেলার রোপিত আউশ ক্ষেতের একটি বড় অংশ তলিয়ে গেলেও পুরোপুরি তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে বৃষ্টিপাত না হলে পানি নেমে গেলে ক্ষেতের কোন ক্ষতি হবে না। কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশেকুল হক বলেন, ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে ঢল নামার কারণে কিছু আউশ ক্ষেত তলিয়ে গেছে এবং নদনদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে সার্বিক বিষয়ে প্রশাসন নজরদারি করছে।
বহুমাত্রিক.কম