ছবি ও ভিডিও: লেখক
চাঁচল, মালদহ ঘুরে এসে : একটা সময় গরম পড়লেই খোঁজ পড়ত মাটির কুঁজো-কলসির। রোদে তেতে পুড়ে ঘরে ফিরে এক গ্লাস মাটির কলসি কিংবা কুঁজোর জল সারা শরীর জুড়িয়ে দিত।
তবে দিন পালটেছে। এখন ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ। চলছে বাতানুকুল যন্ত্র, জলের বোতলের গায়ে ঠাণ্ডার পরত। কারণ, বেশিরভাগ ঘরেই এখন ফ্রিজ ঢুকে পড়েছে। তাই আগের মতো মাটির কুঁজো-কলসির ব্যবহার নেই। তবে এখনও গরম পড়লে অনেক বাড়িতে সেসব জিনিসের খোঁজ পড়ে। কিন্তু খানিকটা কম চাহিদা, খানিকটা উপযুক্ত মাটির অভাবে এখন কুমোররা বড় মাটির কলসি কিংবা কুঁজো তৈরি করেন না।
তাঁরা শুধুই ছোট কলসি গড়েন। কারণ, ছোট কলসির চাহিদা গোটা বছরই অল্পবিস্তর থাকে। পুজো হোক কিংবা বিয়ে, ছোট মাটির কলসি লাগবেই। কেন বড় থেকে ছোটই অবতরণ, তারই খোঁজ মিলল চাঁচলের কুমোরদের কাছে। মালদাহয়ের চাঁচলের মতিয়ার পুরের পালপাড়া এলাকার বাসিন্দা নিতাই চন্দ্র পাল।
৫০ বছর ধরে তারা মাটির কারবারের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। একসময় প্রচুর মাটির কলসি, হারিয়ে অন্যান্য মাটির অন্যান্য জিনিস তারা তৈরি করতেন। গ্রীষ্মকালে মাটির কলসির চাহিদা ছিল দেদার, চাকে মাটির কলস তৈরি করে বাড়ির সামনে উঠোনে শুকাতে দিতেন তারপর তৈরি হবার পর সেগুলিকে বাজারে পাঠাতেন। তার মাটির কলসি চাচোল হরিশ্চন্দ্রপুর এমনকি বিহার সংলগ্ন এলাকায় পারি দিত। এত বর্তমানে উন্নত প্রযুক্তির জামানায় সেই মাটির কলসি আস্তে আস্তে হারিয়ে যেতে বসেছে । মানুষজন মাটির আর কিনতে চান না।
উপযুক্ত মাটির অভাবে এখন কুমোররা বড় মাটির কলসি কিংবা কুঁজো তৈরি করেন না।এ বিষয়ে মৃৎশিল্পীর স্ত্রী জয়ন্তী পাল জানান, একসময় কলসির চাহিদা থাকলেও এখন বর্তমানে সেই কলসির চাহিদা নেই। মানুষজন আর কলসি কিনেন না। এখন প্রত্যেকের বাড়িতে ফ্রিজ হয়েছে হয়েছে অত্যাধুনিক জল ধারণ করার ঠান্ডা পাত্র। যার কারনে আস্তে আস্তে চাহিদা কমেছে মাটির কলসি। আমাদের এই পেসার উপরে নির্ভর করে সংসার চলে।
বহুমাত্রিক.কম