Bahumatrik | বহুমাত্রিক

সরকার নিবন্ধিত বিশেষায়িত অনলাইন গণমাধ্যম

বৈশাখ ৯ ১৪৩১, বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪

উদ্বোধনের অপেক্ষায় খুলনা আধুনিক রেলষ্টেশন

শেখ হেদায়েতুল্লাহ, নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১২:০৮, ১৬ অক্টোবর ২০১৮

আপডেট: ০০:০০, ৩১ ডিসেম্বর ১৯৯৯

প্রিন্ট:

উদ্বোধনের অপেক্ষায় খুলনা আধুনিক রেলষ্টেশন

ছবি : বহুমাত্রিক.কম

খুলনা : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চলতি বছরের মার্চ মাসের ৩ তারিখে খুলনা সার্কিট হাউস মাঠে খুলনা আধুনিক রেলষ্টেশনের উদ্বোধনী ফলক উন্মোন করেন। কিন্তু তখন নির্মাণ কাজের পরিপূর্ণভাবে শেষ হয়নি। এর পর কেটে গেছে প্রায় সাড়ে ৭ মাস। বর্তমানে নবনির্মিত আধুনিক রেলষ্টেশনটি দিয়ে রেল চলাচলের জন্য সম্পূর্ন প্রস্তুত।

গার্ডের সবুজ পতাকার ইশারা আর বাঁশির হুইসেলের অপেক্ষা এখন খুলনাবাসীর। এর মধ্য দিয়ে খুলনা রেলষ্টেশনটি তৃতীয় শ্রেণি থেকে প্রথম শ্রেণির রেলষ্টেশনে পরিবর্তিত হবে। অবসান ঘটবে খুলনার মানুষের দুর্ভোগের। তবে এখন পর্যন্ত রেলপথ মন্ত্রণালয়সহ কেউই নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না কবে থেকে এই রেলষ্টেশন থেকে বিভিন্ন রুটে রেল চলাচল শুরু করবে।

যশোর রোডের পাওয়ার হাউজ মোড় ও শিববাড়ী মোড়ের মাঝামাঝি স্থানে আধুনিক রেলষ্টেশনের প্রধান ফটক। কাছেই মূল স্টেশন ভবন। ভবনটিকে ঘিরে চারিদিকে দেয়া হয়েছে সীমানা প্রাচীর। প্রাচীরের মাঝে বেশ ফাকা রেখেই দেয়া হয়েছে গ্রিল। সেই গ্রিলের ফাকা অংশ দিয়ে দেখা যায় মনোরম ও দৃষ্টিনন্দন নতুন রেল ভবন দেখা যায়। সাদা নতুন ভবন ও লম্বা প্লাটফর্ম চলতি পথে সবারই নজর কাড়ছে। ঝকঝকে তিনতলা বিশিষ্ট মূল স্টেশন ভবন। ১ হাজার ২০০ ফুট দৈর্ঘের তিনটি প্লাটফর্ম।

প্লাটফর্মের মাঝখানে নতুন রেললাইন বসানো হয়েছে। এখানে একই সঙ্গে ৬টি ট্রেন দাঁড়াতে পারবে। মূল স্টেশন ভবনের সামনে বিশাল এলাকা জুড়ে গাড়ি রাখার জায়গা ও বাগান করা হয়েছে। এছাড়া যাত্রী ও দর্শনার্থীদের চলাচলের জন্য রাস্তা তৈরি করা হয়েছে। সৌন্দর্যবর্ধন বাতিও লাগানো হয়েছে প্রবেশপথ ও বের হওয়ার আশপাশে। প্রকল্পের আওতায় প্রায় ২২ হাজার বর্গফুট আকারের একটি তিনতলা স্টেশন ভবন, ১ হাজার ২০০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ৩০ ফুট প্রস্থের তিনটি প্লাটফর্ম, ৭৮৪ বর্গমিটারের একটি লিংক করিডোর নির্মাণ হয়েছে। ভবনের ভেতরে ৮৬০ বর্গমিটারের ফাঁকা জায়গা আছে। এছাড়া চার হাজার বর্গমিটার জায়গা জুড়ে কার পার্কিং, ফুটপাত ও রাস্তা রয়েছে। মূল ভবনের ভেতরে অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা, আধুনিক হাইড্রেন সবই আছে।

রেলওয়ের কর্মকর্তারা জানান আধুনিক রেলষ্টেশনের নির্মান কাজ শেষ হয়েছে। টিকিট কাউন্টিটার, বিশ্রামাগারসহ আনুসঙ্গিক অন্যান্য কাজও শেষ। ঠিকাদারের কাছ থেকে বুঝে নিয়েই ট্রেন যাতায়াত শুরু হবে। যদিও রেলকর্মকর্তারা জানিয়েছেন ট্রেন চালুসহ স্টেশনের অপারেশনাল কাজ উদ্বোধনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর নিকট সময় চাওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী সময় দিলেই স্টেশনটি আনুষ্ঠানিকভাবে ব্যবহার শুরু হবে।

রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব-এর দপ্তর সূত্রে জানা যায় রেলের মহাপরিচালকের উপর নির্ভও করছে কবে থেকে খুলনার নবনির্মিত আধুনিক রেলষ্টেশন থেকে রেল চলাচল শুরু হবে। মহাপরিচালকের দপ্তওে যোগাযোগ করা হলে বলা হয় রেলওয়ে পশ্চিম বিভাগের প্রধান প্রকৌশলীর সাথে যোগাযোগ করতে। প্রধান প্রকৌশলীর সেলফোনে বার বার কল দিলেও তিনি ফোন কল রিসিভ না করায় বিস্তারিত জানা সম্ভব হয়নি।

খুলনার আধুনিক রেলস্টেশন নির্মাণ প্রকল্পের পরিচালক মোঃ রিয়াদ আহমেদ বলেন, স্টেশনের সব কাজ প্রায় শেষ। এখন প্রধানমন্ত্রী সময় দিলে যে কোনো দিন যাত্রী চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে।

খুলনা রেলওয়ে ষ্টেশনের উর্ব্ধতন উপ- সহকারী প্রকৌশলী ( ওয়ার্কস) মোঃ হাফিজুর রহমান এ বিষযে জানান, খুলনা রিমডেলিং রেলষ্টেশনের নির্মাণ কাজ সম্পূর্নভাবে শেষ হয়েছে। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ষ্টেশন এখনও বুঝে নেয়া হয়নি। কারণ ষ্টেশন বুঝে নিয়ে ব্যবহার না হলে এটি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তাই যেদিন এটি ট্রেন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত হবে সেদিন থেকেই কাজ বুঝে নেয়া হবে।

প্রসঙ্গতঃ বৃটিশ আমলে নির্মিত খুলনার পুরাতন রেল স্টেশন দিয়ে যাতায়াতে দুর্ভোগের শিকার হন খুলনার মানুষ। এ জন্য খুলনায় একটি আধুনিক রেলস্টেশন নির্মাণের দাবি দীর্ঘদিনের। এই দাবিতে বহুবার মিছিল, মানববন্ধন, স্মারকলিপি এমনকি হরতালও হয়েছে। সবশেষে ২০০৭ সালে তখনকার তত্ত্বাবধায়ক সরকার একটি আধুনিক রেলস্টেশন নির্মাণ প্রকল্প গ্রহণ করে। এর নাম দেওয়া হয় ‘রিমডেলিং অব খুলনা রেল স্টেশন অ্যান্ড ইয়ার্ড’। একাধিকবার সংশোধনের পর ২০১৪ সালের ২৬ জানুয়ারি প্রকল্পটি একনেকে অনুমোদন পায়। ২০১৫ সালের এপ্রিল মাসে স্টেশনের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। কিন্তু ধীরগতির কারণে কয়েক দফায় প্রকল্পের সময় বাড়ানো হয়। সম্প্রতি এই কাজ শেষ হয়েছে। স্টেশন নির্মাণে মোট ব্যয় হয়েছে ৬০ কোটি টাকা।

 

বহুমাত্রিক.কম

Walton Refrigerator Freezer
Walton Refrigerator Freezer