ছবি: সংগৃহীত
উজান এর ৬ষ্ঠ প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর অনুষ্ঠানে সম্মাননা স্মারক "উজান পদক" তুলে দেওয়া হয় বাউল শিল্পী শাহ আলম সরকারকে। আলোচনা, সম্মাননা ও সুরের মূর্ছনায় প্রতিষ্ঠার ৬ষ্ঠ বছর উদযাপন করে লোকসঙ্গীতের দল উজান।
বিশ্বের সবচেয়ে বিশাল লোকসংস্কৃতির উত্তরাধিকার হচ্ছে বাঙ্গালী জাতি, বাংলার কৃষ্টি, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যে বিশেষ ভূমিকা রেখেছে বাংলাদেশের লোকসাহিত্য। যদিও এর সৃষ্টি ঘটেছে অশিক্ষিত জনগোষ্ঠীর মাধ্যমে এবং প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে প্রসার ঘটেছে মৌখিকভাবে।
নিরক্ষর মানুষের আঞ্চলিক ভাষায় সুরে উচ্চারিত প্রকৃতি প্রাধান্য দৈনন্দিন জীবনের সুখ দুঃখের বহিঃপ্রকাশই বাউল গান। এই ধারাবাহিকতায় আজ ১ অক্টোবর মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬.৩০ টায় কেন্দ্রীয় পাবলিক লাইব্রেরীর শওকত ওসমান স্মৃতি মিলনায়তনে লোকসঙ্গীতের দল উজান`র প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে আয়োজন করে বিভিন্ন অঞ্চলের জনপ্রিয় লোকগান, বাউল, পালা, বিচ্ছেদ ও আঞ্চলিক গানের বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠান `বাউলমন`।
অনুষ্ঠিত আয়োজনে প্রধান অতিথি ছিলেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি লেখক-গবেষক গোলাম কুদ্দুছ, বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ গণসঙ্গীত সমন্বয় পরিষদের সভাপতি গণসঙ্গীত শিল্পী ফকির আলমগীর। সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি সাইফুল ইসলাম।
প্রতিবারের মত এবারও সংস্কৃতিতে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর এই আয়োজনে গুণী পালাকার, বাউলশিল্পীকে উজান সম্মাননা প্রদান করে সংগঠনটি। সম্মাননাপ্রাপ্ত শিল্পীর হাতে সম্মাননা স্মারক "উজান পদক" তুলে দেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি গোলাম কুদ্দুছ। উত্তরীয় পরিয়ে দেন উজান সাংগঠনিক সম্পাদক শ্যামল হাসান।
অর্থ-সম্পাদক মাসুদ আহমেদ এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে গোলাম কুদ্দুছ বলেন বাঙালির প্রান হলো লোকসংস্কৃতি। শেকড়ের সন্ধান করতে হলে বিদেশী অপসংস্কৃতির চর্চা পরিহার করে আমাদেরকে শেকড়ের সন্ধান করতে হবে। উজান সে কাজটি করার প্রত্যয় ব্যক্ত করায় তাদের অভিনন্দন জানাই। শাহ আলম সরকার বলেন পথে চলতে হলে উজানেই চলতে হয়, মাটিতে তো সবাই চলে। স্রোতের বিপরীতে চলার নামই উজান।
আলোচনা ও সম্মাননা পর্ব শেষে অনুষ্ঠিত হয় লোক ও পালা গানের আসর বাউল মন। এ পর্বের শুরুতেই সম্মেলক কণ্ঠে উজানের শিল্পীরা শাহ আলম সরকারের কথা ও সুরে- দিলো না দিলো না গানটি পরিবেশনের মধ্য দিয়েই `বাউলমন` পরিবেশনায় একে একে ১২টি গান সম্মেলক কণ্ঠে পরিবেশন করে আয়োজক সংগঠনের শিল্পীরা।
অনুষ্ঠানের সবশেষে একক সংগীত পরিবেশন করেন পালাকার, কণ্ঠশিল্পী শাহ আলম সরকার- বিয়ে করা মানে জ্যান্ত থেকে মরা। রোজা নামাজ ফরজ তাতে নাই গরজ, ওয়াজিব কুরবানীর জন্য সকলে পাগল আহাম্মকের দল যত আহাম্মকের দল। উজানের শিল্পীরা হলেন দিলসাদ জাহান পিউলী, ফেরদৌসী প্রবর্তনা, সাইফুল ইসলাম, মাসুদ আহম্মেদ, শ্যামল হাসান ও রাফি আহমেদ টুটুল।