Bahumatrik | বহুমাত্রিক

সরকার নিবন্ধিত বিশেষায়িত অনলাইন গণমাধ্যম

চৈত্র ১৪ ১৪৩০, শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪

ঈদকে সামনে রেখে ব্যস্ত সাভারের মেহেদী চাষীরা

তুহিন আহামেদ, নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৭:০৯, ৩ জুন ২০১৯

আপডেট: ১৭:২৫, ৩ জুন ২০১৯

প্রিন্ট:

ঈদকে সামনে রেখে ব্যস্ত সাভারের মেহেদী চাষীরা

ছবি : বহুমাত্রিক.কম

সাভার: ঈদ মানে আনন্দ, ঈদ মানে খুশি। ঈদের কেনা কাটা এরই মধ্যে শেষ হলেও, বাকী শুধু হাত রাঙ্গানোর মেহেদীর আলপনা। ঈদকে ঘিরে বাহারি নকশায় হাত সাজাতে তরুণীদের ব্যস্ততার পাশাপাশি ছেলেরাসহ নানা বয়সির মানুষও ঈদে মেহেদী পড়ে।

সহজলভ্যতা ও ঝামেলা এড়াতে বিগত কয়েক বছর ধরে টিউব মেহেদীই অনেকটা বাজার দখল করে রেখেছে। তবে গাছের মেহেদীর কদর কমেনি। শুধু তাই নয়, দেশের কয়েক জায়গায় বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে মেহেদী পাতার।

আর প্রকৃতির এমন মেহেদী চাষ করে স্বাবলম্বী সাভারের অনেক চাষী। বছরের এই সময়টায় বাড়তি মুনাফা ঘরে তুলতে ব্যস্ত সময় তাদের। বিশেষ করে সাভার উপজেলার ভাকুর্তা ইউনিয়নের শ্যামলাসী, বাহেরচর সহ বেশ কয়েকটি গ্রামের বিস্তির্ণ এলাকা জুড়ে মেহেদী চাষ করা হয়। এখান থেকে পাইকারদের হাত ধরে মেহেদী পাতা রাজধানীর কাওরান বাজারসহ দেশের বিভিন্ন বাজারে পৌছে যায়।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, সাভারে প্রায় ১৬ হেক্টর জমিতে মেহেদী পাতা চাষাবাদ হচ্ছে। এটাকে পুঁজি করে জীবিকার মাধ্যমে উপজেলার প্রায় ৫০টি পরিবার স্বাবলম্বী হয়ে উঠেছেন। এর চাষ খুবই সামান্য খরচেই করা যায়। একবার রোপণ করা গাছ থেকে একাধিকবার ডগা কেটে রোপণ করে মেহেদী উৎপাদন করা যায়। একটি মেহেদী গাছ থেকে বছরে পাঁচবার ডালসহ পাতা পাওয়া যায়।

সরেজমিনে দেখা যায়, চাষীরা ঈদ ঘিরে মেহেদী পাতার ডাল কাটায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। কেউ কেউ পরিচর্যা নিয়েও কাজ করছেন। অনেকটা চায়ের বাগানে আদলে মেহেদী বাগান।সারি সারি গাছের মাঝখানে হাঁটা ও কাজ করার জন্য সরু পথ।

এলাকার মেহেদী চাষী আব্দুল জলিল জানান, বাজারে প্রক্রিয়াকৃত মেহেদীর তুলনায় চাষ করা মেহেদির ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। প্রতি আটি মেহেদিপাতা ১০ থেকে ১৫ টাজা করে বিক্রি করা হয়।ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পাইকাররা এসে মেহেদী কিনে নিয়ে যায়। বছরের অন্যান্য সময়ের তুলনায় ঈদ মৌসুমে মেহেদীর চাহিদা অনেক বেশি থাকে।

রাজধানী থেকে মেহেদী পাতা কিনতে আসা এমদাদ হোসনে জানান, ঈদ হাতে মেহেদী পড়া ছাড়াও, চুল ও দাড়িতে ব্যবহারের জন্য এই প্রাকৃতিক পাতার বেশ কদর রয়েছে। তাই সরাসির চলে আসলাম। এমন বাগান কখনো দেখিনি। দেখাও হয়ে গেল।

বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থী মনোয়ারা আক্তার মনি জানান, হাতে বাহারি নকশা তৈরিতে মেহেদির কোন জুড়ি নেই। বাজারের কেনা মেহেদি অনেকটা ভেজাল থাকে। তবে চাষ করা মেহেদি অনেকটা গুণগত। তাই এ চাষ করা মেহেদি আমাদের পছন্দের তালিকায় থাকে।

সাভার উপজেলা কৃষি অফিসার নাজিয়াত আহমেদ বলেন, ‘মেহেদী চাষে অল্প খরচে অধিক মুনাফা পাওয়া যায়। উপজেলা কৃষি বিভাগ থেকে চাষাবাদ কৌশল, কখন, কিভাবে চাষ করা যায় এসব তথ্য দেওয়া হয়ে থাকে। জমি তৈরি কৌশল, সার প্রয়োগের নিয়মাবলী ইত্যাদি তথ্য কৃষকদের দেওয়া হয়ে থাকে। তবে সরকারি কোন নিয়ম না থাকায় মেহেদি চাষীদের কোন ধরনের ঋণ কার্যক্রম সহায়তা দেওয়া হয় না।’

ইতিহাসপাঠে জানা যায়, পাঁচ হাজার বছর আগে থেকে মিশরীয়রা চুলের সৌর্ন্দয্য রক্ষায় মেহেদি ব্যবহার করত। পরে ধীরে ধীরে হাতে বাহারী নকশায় সাঁজাতে মেহেদীর প্রচলনের দখা মেলে।

বহুমাত্রিক.কম

Walton Refrigerator Freezer
Walton Refrigerator Freezer