Bahumatrik | বহুমাত্রিক

সরকার নিবন্ধিত বিশেষায়িত অনলাইন গণমাধ্যম

বৈশাখ ৫ ১৪৩১, শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪

আশুলিয়ায় সড়কে রিকশা-অটোরিকশার রাজত্ব

তুহিন আহামেদ, নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৪:২৩, ১৭ এপ্রিল ২০২০

প্রিন্ট:

আশুলিয়ায় সড়কে রিকশা-অটোরিকশার রাজত্ব

ছবি: বহুমাত্রিক.কম

সাভার: করোনার প্রভাবে সৃষ্ট পরিস্থিতি মোকাবেলায় মানুষ যখন ঘরের বাহিরে বের হতে পারছেন না,  ঠিক সেই মুহুর্তে পেটের দায়ে রোজগারের আশায় নিয়মিত রিকশা অটোরিকশা নিয়ে বাধ্য হয়েই রাস্তায় বের হচ্ছেন অসহায় চালকরা। সারাদিন কোন মানুষ তেমন বের না হলেও সকালে বাজার করতে মানুষজন বের হচ্ছে। আর ওই সময়টাই বেছে নিয়েছে আশুলিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলের রিকশা অটোরিকশা চালকরা।

জীবন আর জীবিকার তাগিদে করোনার ঝুঁকি নিয়ে বের হন তারা। আর বিভিন্ন সড়ক মহাসড়কের পাশে সেই আগের রুপ ফিরে আসে রিকশা আর অটোরিকশার কারণে। দেখে মনে হয় দুর্যোগের কোন ছিটেফোঁটা নেই সড়ক-মহাসড়কে।

যতই দিন অতিবাহিত হচ্ছে করোনাভাইরাস ততই ভয়ঙ্কর রূপ নিচ্ছে। বেড়েই চলেছে মৃত আর আক্রান্তের সংখ্যা। এর থাবা থেকে জাতীকে বাঁচাতে চতুর্থ দফায় ছুটির মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে সরকারী, বে-সরকারি সকল প্রতিষ্ঠানসহ গণপরিবহণ। সেই সাথে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হয়েছে পুরু বাংলাদেশ। কিন্তু এর মাঝেও সড়ক ও মহাসড়কে  রিকশা আর অটোরিকশার দখলে। সকাল থেকেই চলতে দেখা যায় এসব রিকশা। মুলত বাজারকেন্দ্রিক হয়ে পড়েছে রিকশাগুলো। বাজার সময়টুকু ছাড়া যাত্রী না থাকায় এসময়টাই বেছে নিয়েছেন তারা।

শুক্রবার সকালে আশুলিয়ার জামগড়া, বাইপাইল, কাঠগড়া, জিরানী বাজার, বলিভদ্র, শ্রীপুর, ভাদাইল ও জিরাবো এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। ভয়ের ছিটেফোঁটা নেই তাদের চোখে মুখে। এ যেন চিরচেনা সেই আগের মহাসড়ক। মহাসড়ক দেখে এক মুহুর্তের জন্য যেন মনে হয়নি দেশটায় নেই কোন ভয়, নেই কোন ভাইরাস, এ যেন নির্ভয়া পৃথিবী। নির্ভয়েই রিকশা চালাচ্ছেন তারা, আর যাত্রিও উঠছেন একইভাবে।

জিরানী বাজার থেকে বাজার করে অটোরিকশায়  বাড়ি ফিরছেন শহিদুল। তিনি বলেন, ১০টার পর বের হতে পারি না। তাই সকাল সকাল বাজার করতে অঅটোরিকশা করে এসেছি। বাজার তো করতেই হবে। আমরা পড়েছি উভয় সংকটে। একদিকে করোনা অন্যদিকে গাদাগাদি মানুষ, ইচ্ছা না থাকলেও বাজারে আসতে হয়। বাজারে না আসলে কোন প্রকার ঝুঁকি থাকতো না। বাজার করে আবার বাধ্য হয়ে যেতে হচ্ছে অটোরিকশায়। না জানি এই অটোরিকশায় কে কে বসেছে। আমরা ঝুঁকির মধ্যেই আছি। আল্লার ওপর ভরসা করে চলছি।

অটোচালক ফরহাদ জানান, সারাদিনতো বের হতে পারি না৷ সকাল বেলা কয়েক ঘন্টা সময় পাই চালাতে। এইটুকু সময়ের মধ্যে যা আয় হয় তা দিয়ে বাজারটা অন্তত করতে পারি। করোনার ঝুঁকি রয়েছে তা জেনেই  বাধ্য হয়ে বের হয়েছি।

আরেক রিকশা চালক আলী হোসেন জানান, আমার পিপিই নাই, হ্যান্ড গ্লাভস নাই। কিন্তু মাস্ক পড়েই প্রতিদিন সকালে বের হই। আমরা খেটে খাওয়া মানুষ আমাদের কিছু হবে না।

অপর রিকশা চালক অাজগার বলেন, আমারা রিকশা না চালালে যারা বাজার করতে আসে তাদের দুর্ভোগ বেড়ে যেতো। তাদেরও সুবিধা হয় আমাদের কয়টা টাকা কামাই হয়। সকালে রিকশা চালাই সারাদিন বাসায় থাকি। সকালে যা হয় তাই দিয়ে কোনমতে হাত না পেতে চলতে পারছি। কিন্তু বাসায় ঢোকার আগেই কাপড় পরিবর্তনসহ গোছল করি। যাতে আমার সাথে জীবাণু বাসায় না আসে। পরিবারের জন্যই রিকশা চালাই, তাই পরিবারকে সুরক্ষা রাখার জন্য সব ধরনের চেষ্টা করি।

এ ব্যাপারে সচেতন নাগরিক কমিটির সভাপতি (আশুলিয়া) লায়ন মোহাম্মদ ইমাম বলেন, ব্যক্তিগতভাবে যতটা সম্ভব মানুষকে এড়িয়ে চলতে হবে, যদি এই ভাইরাস থেকে বাঁচতে হয়। সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে চলাফেরা করা উচিৎ। আর বাজারে এটা অত্যন্ত জরুরি। যেভাবে ঝুঁকি নিয়ে  রিকশা চলাফেরা করছে এভাবে চলতে থাকলে এই ভাইরাস ছড়ানোর সম্ভাবনা রয়েছে। আমরা যদি নিজেরা সচেতন হই তাহলেই কেবল এই ভাইরাস থেকে পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব।

বহুমাত্রিক.কম

Walton Refrigerator Freezer
Walton Refrigerator Freezer