Bahumatrik | বহুমাত্রিক

সরকার নিবন্ধিত বিশেষায়িত অনলাইন গণমাধ্যম

বৈশাখ ৬ ১৪৩১, শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪

আমিরাতে নিহত আজাদের মরদেহ আসেনি এক মাসেও

নূরুল মোহাইমীন মিল্টন, নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ০০:২১, ২৬ আগস্ট ২০১৯

প্রিন্ট:

আমিরাতে নিহত আজাদের মরদেহ আসেনি এক মাসেও

ছবি- সংগৃহীত

মৌলভীবাজার: অভাবের সংসারে মা ও ভাইবোনদের ভালোভাবে খেয়ে পরে জীবন ধারণের জন্য এক বছর পূর্বে সংযুক্ত আরব আমিরাতে পাড়ি জমান আজাদ মিয়া। ৩১ বছর বয়সের আজাদ মিয়ার বাড়ি মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার রহিমপুর ইউনিয়নের বড়চেগ গ্রামে। গ্রামের উস্তার মিয়ার ছেলে আজাদ। সে দুই ভাই ও দুই বোনের মধ্যে তৃতীয়।

গত বছরের ২৬ নভেম্বর আজাদ মিয়া সংযুক্ত আরব আমিরাত পৌঁছান। সেখানে ভিজিট ভিসায় গিয়ে সে দেশের চলমান আইন অনুযায়ী বিজনেস পেশায় (এক্বামা) আইডি লাগিয়ে কাজে যোগ দেন। কাজ চলাকালীন সময়ে গত ২৫ জুলাই দুর্ঘটনা কবলিত হয়ে মারা যান। তার মৃত্যু মধ্যদিয়ে অভাবী সংসারে নেমে আসে শোকের ছায়া। আজাদের মুখ এক নজর দেখার জন্য আহাজারি করছেন তার পরিবারের সদস্যরা। তবে নানা জটিলতায় আটকা আজাদের মরদেহ দীর্ঘ একমাস ধরে আরব আমিরাতের খলিফা হাসপাতাল মর্গে পড়ে আছে।

মৃত্যুর এক মাস অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত আজাদের লাশ বাংলাদেশে আসেনি। আরব-আমিরাতের আল-আইন শহরে কর্মস্থলে থাকাবস্থায় গত ২৫ জুলাই একটি শেওল গাড়ি স্টিলের রেডিমেট ঘরে ধাক্কা দিলে ঘরটি বিধ্বস্ত হয়ে আজাদ মিয়ার উপরে পড়ে। আজাদের মাথা ও শরীর থেঁতলে মারাত্মক আঘাতপ্রাপ্ত হয়েল ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান।

সংযুক্ত আরত আমিরাতের জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাজিদুর রহমান সাচ্চু জানান, গত ২৫ জুলাই আল-আইন শহরে কর্মস্থলে থাকাবস্থায় একটি শেওল গাড়ি স্টিলের রেডিমেট ঘরে ধাক্কা দিলে ঘরটি বিধ্বস্ত হয়ে আজাদের উপরে পড়ে। এ সময় আজাদের মাথা ও শরীর থেঁতলে মারাত্মক আঘাত প্রাপ্ত হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান। পরবর্তীতে আজাদের লাশ দেশে পাঠানোর জন্য আমাদের একটি টিম হাইকমিশনের সঙ্গে দেখা করি। এ সময় অ্যাম্বাসেডর বেলাল উদ্দিন এই প্রফেশনের শ্রমিকের লাশ সরকারি খরচে দেশে পাঠানো যাবে না বলে জানান।

এদিকে নিহতের পরিবার ও প্রবাসীরা জানান, বাংলাদেশি হাই কমিশনের অবহেলার কারণে আজাদের লাশ সংযুক্ত আরব আমিরাতের খলিফা হাসপাতাল মর্গে দীর্ঘ এক মাস ধরে পড়ে আছে। ইউএই’র বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের নেতারা আজাদের লাশ দেশে পাঠানোর জন্য জোর দাবি জানালেও বাংলাদেশের হাইকমিশন এগিয়ে আসছে না বলে তারা অভিযোগ করেন।

আজাদের অসুস্থ মা রোকিয়া বেগম বলেন, আরব আমিরাতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনের কর্মকর্তারা আমার ছেলের লাশ পাঠাতে গড়িমসি করছেন। এটি অমানবিক বলে তিনি দাবি করেন। তার বৈধ সব কাগজপত্র থাকার পরেও সরকারের নিয়োগকৃত কর্মকর্তারা লাশ দেশে পাঠানোর ব্যাপারে কোনো উদ্যোগ গ্রহণ না করা খুবই দু:খজনক।

আজাদের বোন সাজনা আক্তার জানান, ২ ভাই ও ২ বোনের মধ্যে আজাদ মিয়া ৩য়। আজাদ মিয়া অবিবাহিত। বড় ভাই ও ২ বোনের বিয়ে হয়েছে। বাবা নেই, অসুস্থ মা মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে আরও অসুস্থ হয়ে উঠছেন।

 

বহুমাত্রিক.কম

Walton Refrigerator Freezer
Walton Refrigerator Freezer