ঢাকা : তুরাগ নদের তীরে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম মুসলিম জমায়েত চার দিনব্যাপী বিশ্ব ইজতেমা শুক্রবার বাদ ফজর থেকে আমবয়ানের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে।
বিশ্ব ইজতেমার আয়োজক কমিটির মুরুব্বি প্রকৌশলী মো. মাহফুজুর রহমান জানান, শুক্রবার বাদ ফজর উর্দুতে চূড়ান্ত আম বয়ানের মধ্য দিয়ে এবারের বিশ্ব ইজতেমার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। পাকিস্তানের মাওলানা জিয়াউল হক শুল বয়ান শুরু করেন। আর বাংলাদেশের নোয়াখলীর মাওলানা নূরুর রহমান তা বাংলায় তরজমা করেন। ইজতেমাস্থলের বয়ান মঞ্চ থেকে মূল বয়ান উর্দূতে হলেও তাৎক্ষণিকভাবে ২৪টি ভাষায় তা তরজমা হচ্ছে।
শনিবার মাওলানা জোবায়ের পন্থীদের আখেরি মোনাজাত অনুষ্ঠিত হবে। মোনাজাত শেষে জোবায়ের পন্থীরা ময়দান ছেড়ে চলে গেলে রোববার থেকে মাওলানা সা’দ পন্থীদের পরিচালনায় ইজতেমা ফের শুরু হবে। সোমবার মাওলানা সাদ পন্থীদের আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে শেষ হবে এ পর্বের চার দিনের বিশ্ব ইজতেমা।
শুক্রবার দুপুর দেড়টার দিকে টঙ্গীর ইজতেমা ময়দানে বৃহত্তর জুমা’র নামাজ অনুষ্ঠিত হবে। এতে ইমামতি করবেন কাকরালাইলের মাওলানা মো. জোবায়ের। এবারে ৬৪ জেলার মুসল্লিদের জন্য পুরো ময়দানকে ৫০টি খিত্তায় (ভাগে) ভাগ করা হয়েছে। নির্দিষ্ট খিত্তা নির্দিষ্ট জেলার মুসল্লির জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
৬৪টি জেলা থেকে মুসল্লিদের কাফেলা এখন টঙ্গীর ইজতেমা ময়দানের দিকে। বৃহস্পতিবার থেকে আসতে থাকা মুসল্লিদের ঢল শুক্রবারও অব্যাহত থাকবে। শুক্রবার পবিত্র জুম্মার নামাজে লাখ লাখ মুসল্লি একসঙ্গে জুমার নামাজ আদায় করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। ছুটির দিন থাকায় গাজীপুরসহ আশপাশের অঞ্চলগুলো থেকেও বিপুল সংখ্যক মুসল্লি জুমার নামাজ আদায় করতে ইজতেমা ময়দানে আসতে শুরু করবেন।
সকাল থেকে টঙ্গী ও এর আশপাশের লোকজন ইজতেমায় বৃহত্তর জুমার নামাজের জামাতে অংশ নিতে হেঁটে ইজতেমা ময়দানে আসতে শুরু করেছেন। শুক্রবার বাদ ফজর থেকে ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের জিকির আসকার ইবাদত বন্দেগিতে টঙ্গী এখন এক পবিত্র পুণ্যভূমিতে পরিণত হয়েছে। হজের পর মুসলমানদের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমাবেশ হলো এ বিশ্ব ইজতেমা।
গাজীপুরের জেলা প্রশাসক দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর জানান, পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ, র্যাব, আনসার সদস্যরা কয়েকটি স্তরে বিভক্ত হয়ে পোশাক ও সাদা পোশাকে দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়া বাইনোকুলার, মেটাল ডিটেক্টর, নৌ-টহল, চেকপোস্টও রয়েছে। ইজতেমা মাঠের সার্বিক নিরাপত্তায় পুলিশ ও র্যাব কন্ট্রোলরুম ও ওয়াচ টাওয়ার স্থাপন করেছে। সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে সার্বিক নিরাপত্তা কন্ট্রোলরুম থেকে মনিটরিং করা হচ্ছে। খিত্তায় খিত্তায় সাদা পোশাকে আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা অবস্থান করছেন।
শুক্রবার ইজতেমা ময়দানে জুমার নামাজ আদায় করতে ঢাকা থেকে মন্ত্রী, সংসদ সদস্য ও রাজনৈতিক নেতৃবর্গসহ সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ের ভিআইপি অতিথিরাও ইজতেমা ময়দানে আসবেন বলে আশা করা হচ্ছে।