আফগানিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ও কয়েকজন আইনপ্রণেতাকে লক্ষ্য করে হামলায় চার জন নিহত ও ২০ জন আহত হয়েছেন।মঙ্গলবার রাতে দেশটির রাজধানী কাবুলের অতি সুরক্ষিত গ্রিন জোনে এই হামলার ঘটনা ঘটেছে।
নিরাপত্তা কর্মকর্তারা বলেন, হামলায় ২০ জন আহত হয়েছেন। আর চার মরদেহ উদ্ধার করে নিয়ে আসা হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সফলভাবে হামলা প্রতিরোধ করা হয়েছে। হামলাকারীদের নিরাপত্তা বাহিনী হত্যা করেছে। বহু মানুষকে উদ্ধার করা হয়েছে।
গ্রিনজোনখ্যাত কূটনৈতিক পাড়ায় শক্তিশালী বোমা বিস্ফোরণের এই ঘটনায় দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রীর বাসভবন লক্ষ্য করে হলেও তিনি অক্ষত আছেন।
এদিকে হেলমান্দ প্রদেশের রাজধানী লস্কর গাহ্সহ দেশটির প্রধান তিনটি শহর দখলে মরিয়া তালেবান তাদের অগ্রযাত্রা অব্যহত রেখেছে। গোষ্ঠীটিকে রুখতে সেনা অভিযান জোরদারের ঘোষণার পর থেকেই সেখানকার স্থানীয় বাসিন্দাদের সরিয়ে নিতে শুরু করেছে কর্তৃপক্ষ।
মঙ্গলবার স্থানীয় সময় রাত আটটা। হঠাতই বিকট শব্দে কেঁপে ওঠে কাবুলের গ্রিনজোনখ্যাত কূটনৈতিক ও মন্ত্রিপাড়া। হামলায় বাসভাবনের কয়েকজন নিরাপত্তারক্ষীসহ বেশ কয়েকজন আহত হন।
প্রতিরক্ষামন্ত্রী বিসমিল্লাহ খান মোহাম্মদী বলেন, আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যেই আমার বাসভবন লক্ষ্য করে ওই গাড়িবোমা হামলা চালানো হয়েছে। তবে ওইসময়ে আমি এবং আমার পরিবারের সদস্যরা বাইরে থাকায় আল্লাহর অশেষ রহমতে বেঁচে যাই। আমি বলতে চাই, এধরনের ঘৃণ্য হামলা চালিয়ে দেশরক্ষার মহান দায়িত্ব থেকে আমাদেরকে পিছু হঠানো যাবে না।
ওই হামলার পরপরই বেশ কয়েকজন অস্ত্রধারী বাসভাবনের বাইরে অতর্কিত গুলি চালায়। এতে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে ব্যাপক গোলাগুলি হয়। বোমা হামলার প্রায় দুই ঘন্টা পর একই এলাকায় আরও বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেলেও এতে কোন হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
এর মধ্যেই আফগানিস্তানের প্রধান তিনটি শহর লস্কর গাহ, কান্দাহার এবং হেরাত দখলে মরিয়া তালেবান তাদের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রেখেছে। মঙ্গলবারও প্রধান এ তিনটি শহরে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে তালেবানের ব্যাপক সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে।
এতে হেলমান্দ প্রদেশের রাজধানী লস্কর গার রাস্তায় বেশ বহু মানুষের মরদেহ পড়ে থাকতে দেখা যায় বলে জানান স্থানীয়রা। শুধু তাই নয়, সংঘর্ষ থেকে বাঁচতে বহু মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়েছেন বলেও জানা গেছে।
অন্যদিকে তালেবানকে রুখতে আফগান সরকার লস্কর গাহে সেনা অভিযানের ঘোষণা দেয়ার পর থেকেই সেখানকার বাসিন্দাদের সরিয়ে নিতে শুরু করেছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ। একইসঙ্গে ভারী অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে শহরগুলোর কেন্দ্রে অগ্রসর হতে দেখা গেছে আফগান সেনাবাহিনীকে। গেল কয়েকদিনের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে শহরটিতে এ পর্যন্ত অর্ধশত বেসামরিক নাগরিক প্রাণ হারিয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ।
এদিকে আফগানিস্তানজুড়ে তালেবানের অগ্রযাত্রা এবং চলমান সংঘাতে উদ্বেগ জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।