জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গেটের সামনে ইজিবাইকচালকদের কাছ থেকে নিয়মিত চাঁদা আদায় করে আসছিল একটি সংঘবদ্ধ চক্র।
ইজিবাইক থেকে চাঁদা আদায়ের ভিডিও চিত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। অনেকেই চাঁদা আদায়ের সেই ভিডিও চিত্রটি জয়পুরহাট-২ (আক্কেলপুর-কালাই ও ক্ষেতলাল) আসনের সাংসদ ও জাতীয় সংসদের হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপনের কাছে পাঠান। হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন থানা পুলিশকে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন।
মঙ্গলবার বিকেলে থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে তিন জন চাঁদাবাজকে হাতেনাতে আটক করে। পরে তাঁদের তিনজনকে ভ্রাম্যমান হাজির করলে আদালতের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ইউএনও হাবিবুল হাসান তিনজনকে দশ দিন করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, আক্কেলপুর পৌরশহরের বিহারপুর মহল্লার ফজলুর রহমানের ছেলে মাসুদ রানা (২৫), একই মহল্লার বিরেন চন্দ্রের ছেলে অনন্ত কুমার (২৮) ও উপজেলার গোপীনাথপুর গ্রামের রফিকুল ইসলামের ছেলে সোহেল রানা (২২)।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আক্কেলপুর কলেজ বাজারের অবস্থিত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গেট সংলগ্ন এলাকায় ইজিবাইক স্ট্যান্ড থেকে মাসুদ রানা, সোহেল রানা ও অনন্ত কুমার নিয়মিত চাঁদা আদায় করছিলেন। কলেজ বাজার এলাকার এক দোকান কর্মচারী তাঁর মুঠোফোনে ইজিবাইক থেকে চাঁদা আদায়ের দৃশ্য ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছেড়ে দেন। অনেকেই ভিডিওটি শেয়ার করেন।
জামালপুর শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার মাহমুদ গ্রামের বাসিন্দা তৌফিক হাসান ইজিবাইকে চাঁদাবাজির ভিড়িও চিত্রটি হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপনের নজরের আনেন। হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন দ্রুত ব্যবস্থা নিতে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল লতিফ খাঁনকে নির্দেশ দেন। ওসির নেতৃত্বে থানা পুলিশ মঙ্গলবার বিকেল তিনটায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গেট এলাকা থেকে তিন চাঁদাবাজকে হাতেনাতে আটক করে। তাঁরা পুলিশের কাঁছে চাঁদা আদায়ের কথা স্বীকার করেছে।
চাঁদাবাজির অভিযোগে আটক হওয়া মাসুদ রানা ও সোহেল রানা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গেটে লোকজন ও পুলিশ সদস্যের উপস্থিতে বলেন, প্রতিটি ইজিবাইক থেকে দশ টাকা করা হয়। কেউ টাকা দেন আবার কেউ দেন না। প্রায় এক বছর ধরে এভাবেই টাকা আদায় করে আসছেন। ইজিবাইকচালক অনন্ত কুমার থানা পুলিশের নাম ভাঙিয়ে তাঁদের কাছ থেকে প্রতি মাসে নয় হাজার টাকা নেন।
অনন্ত কুমার নয় হাজার টাকা করে নেওয়া কথা স্বীকার করে বলেন, প্রতি রাতেই দুটি করে ইজিবাইক থানার ডিউটি করে। একারণে খরচা বাবদ ওই টাকা নেওয়া হয়। এটি ওসি স্যার অবগত আছেন।
আক্কেলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল লতিফ খাঁন বলেন, থানায় কোনো ইজিবাইক দিয়ে রাতের বেলায় ডিউটি করানো হয় না। যদিও কখনো ডিউটি করানো হয় তাহলে নিজের পকেটের টাকায় ভাড়া পরিশোধ করি। কাজেই ইজিবাইক থেকে চাঁদা আদায়য়ের বিষয়টি জানা নেই। পুলিশের নাম ভাঙিয়ে কেউ যদি টাকা নেন তাহলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বহুমাত্রিক.কম