বসবাস
আমার ভেতর বসত করে একটা পশু, একটা মানুষ
পশুটা শুধু তাড়িয়ে বেড়ায় পাপের পথে লিপ্ত হতে
মানুষ আমায় থামায়, বেহুঁশ হয়ে ফিরি যখন, ফিরিয়ে দেয় হুঁশ।
রঙিন জামার রঙিন লোভে অর্থ জমাই, দোকানে যাই
পোশাক হাতে ভাবতে থাকি শ্বেত কাফনের কথা
শূন্য হাতে ফিরি। মানুষ আমায় ফেরায়, পশুটার নেই হুঁশ।
বিলাসবহুল অট্টালিকা গড়বো বলে ফন্দি আঁটি, নকশা আঁকি
ব্যাকুল হয়ে মিস্ত্রি ডাকি, তখন ভীষণ অন্ধকারে কবর-ঘরে
জীর্ণশীর্ণ চিন্তা চাপে, মনে আমার পশু এবং মানুষ।
পুষ্টিপূর্ণ খাবার খেয়ে ব্যস্ত যখন গড়তে শরীর, ঠিক তখনই
মৃত্যু এসে চোখে ভাসে। মাটির স্পর্শে পঁচে যাবে পোকায় খাবে
যেই দেহটা গড়ছি আমি খুব যতনে। মানুষ বুঝে, পশুটা বেহুঁশ।
পূর্ণিমায় প্রণয়মাতাল
পূর্ণিমায় তুমি আমি এক আঙিনায়, যেন ছোট্ট পুকুরে
প্রণয়মাতাল দু’টি হংসবলাকা
আজ শুধু সারা রাত হাতে হাত, জলের সঙ্গে যেমন
শরীরে শরীর সন্ধিবদ্ধ জলতরঙ্গ
তুমি মানে বারোহাত শাড়িময় আপাদমস্তক ঢাকা এক নারী।
চাঁদের আলোতে রুপালি পুকুরঘাট, ভাঙাগলায় প্রেমিকার
নাম ধরে গান গায় প্রেমিক কোকিল
আমার বাহুতে মাথা রাখো তুমি, আমাদের বুকের ভেতর
রক্ত হঠাৎ ছলাত ছলাত করে
তুমি মানে রোমাঞ্চ-চঞ্চল প্রেমের সূত্র জানা চপলা ঘরণী।
এসো পাশে ঘেঁষে ঘেঁষে বসি, খোঁপার বাঁধন খুলে দাও যদি
ব্যর্থ হবে আমার সন্ন্যাস-আরাধনা
প্রদীপ্ত চাঁদের মতো হাসি হাসব দু’জন, পলক না পড়া চোখে
দেখব তোমার ঠোঁটের কারুকার্য
তুমি মানে ধরণীর ঘরসংসারে চিরযৌবনা স্বর্গীয় অপ্সরা।
আকণ্ঠ করেছি পান মহুয়ার মদ, তোমার হাসির ঝঙ্কারে
ভেঙে যাক আজন্ম নিস্তব্ধ নীরবতা
ঘনীভূত হোক দু’জনার নিঃশ্বাস, জঠরে তোমার উঠুক বেড়ে
আমার রক্তবীজের স্বাস্থ্যবান শিশু।
তুমি মানে চিতাবাঘিনীর মতো সঙ্গমপ্রিয় লক্ষ্মী রমণী।
বহুমাত্রিক.কম