Bahumatrik | বহুমাত্রিক

সরকার নিবন্ধিত বিশেষায়িত অনলাইন গণমাধ্যম

বৈশাখ ৫ ১৪৩১, শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪

অলিম্পিক আসরে ভূমিকম্পের হানা

বহুমাত্রিক ডেস্ক

প্রকাশিত: ১২:৪৯, ৪ আগস্ট ২০২১

প্রিন্ট:

অলিম্পিক আসরে ভূমিকম্পের হানা

ভূমিকম্পে কেঁপে উঠেছে জাপান। বুধবার (৪ আগস্ট) স্থানীয় সময় ভোর সাড়ে ৫টার দিকে কেঁপে উঠেছে টোকিওর পূর্ব প্রান্ত। রিখটার স্কেলে এই ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৬। গেমস ভিলেজে থাকা অলিম্পিকের আয়োজক, প্রতিযোগী ও সাংবাদিকরা প্রায় তিন মিনিট ধরে কম্পন অনুভব করেন বলে জানা গেছে।

সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার নিচে এই ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল বলে জানা গেছে।টোকিওতে উপস্থিত থাকা এক সাংবাদিক টুইটে লেখেন, ’টোকিওতে ভূমিকম্প হচ্ছে। গত ৩০ সেকেন্ড ধরে কম্পন অনুভব করছি।’

আরেকজন টুইট করে লেখেন, ’প্রায় তিন মিনিট ধরে মৃদু কম্পন অনুভব করলাম।’ অস্ট্রেলিয়ার এক সাংবাদিক সেই সময় সম্প্রচার করছিলেন। তার মধ্যেই ভূমিকম্প হয়। সেই শো-তেই ভূমিকম্পের কথা জানান তিনি।

জাপানে প্রায়ই ভূমিকম্প হয়। ভয় থাকে সুনামিরও। তবে জাপানের আবহাওয়া দপ্তর কোনো সুনামির সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছে। গেমস ভিলেজ ও বিভিন্ন স্টেডিয়াম সেই ভাবেই তৈরি করা হয়েছে যাতে ভুমিকম্পে নষ্ট না হয়।

জাপানের ভৌগলিক অবস্থানগত কারণে দেশটি পৃথিবীর যে কোনো দেশের চেয়ে বেশি ভূমিকম্প অনুভূত হয়। দেশটিতে প্রতি বছর গড়ে দুই হাজার এর মতো ভূমিকম্প সংঘটিত হয়ে থাকে। এমনকি ২০১১ সালে দেশটিতে ১০ হাজারের বেশি ভূমিকম্প হয়। তবে মজার বিষয় এই যে দেশটির সমস্ত অঞ্চলে এই ভূমিকম্প আঘাত করে না। বিশেষত রাজধানী টোকিওতে এর প্রভাব বেশি হয়ে থাকে। ভূমিকম্পগুলোর অধিকাংশই মৃদু হয়ে থাকে।

জাপানে কেন এত বেশি ভূমিকম্প হয়
পৃথিবীর কাঠামো মোটামুটি তিনটি ভাগে বিভক্ত। প্রথমত, বহির্ভাগের লবণাক্ত ও কঠিন ভূতক (পুরুত্ব প্রায় ৩০ কিমি), দ্বিতীয়ত এর নিচে যা ২৯০০ কিমি পুরু এক ধরনের ঘন ও আঠালো অংশ আর তৃতীয়ত সাড়ে তিন হাজার ব্যাসের কেন্দ্রীয় পৃষ্ঠ। দ্বিতীয় অংশের ঘন ও আঠালো ভাগের উপরিভাগ সাতটি অংশে বিভক্ত।

এইগুলোই হচ্ছে টেকটোনিক প্লেট। প্লেটগুলোর নাম - প্রশান্ত মহাসাগরীয়, ইউরেশীয়, আফ্রিকান, আটলান্টিক, উত্তর আমেরিকান, দক্ষিণ আমেরিকান এবং ইন্দো-অষ্ট্রেলীয়। টেকটোনিক প্লেটগুলোর একটি অপরটির সঙ্গে সংঘর্ষ হলে অথবা ধাক্কা লাগলে ভূমিকম্পের সৃষ্টি হয়।

বিশেষজ্ঞদের মতে, জাপান প্রশান্ত মহাসাগরীয় ‘রিং অব ফায়ার’ অঞ্চলে অবস্থিত। রিং অব ফায়ার এর অর্থ হলো আগুনের গোলা। রিং অব ফায়ার এমন একটি কাল্পনিক বেল্ট যা ঘোরার খুরের মত প্রধানত প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলকে ঘিরে রেখেছে।এই রিং অব ফায়ারে যেইসব অঞ্চল অন্তর্ভুক্ত রয়েছে তা সবচেয়ে বেশি ভূমিকম্পপ্রবণ। এই রিং অব ফায়ারই ৯০ শতাংশ ভূমিকম্পের কারণ।

৪০ হাজার কিলোমিটার দীর্ঘ এই রিং অব ফায়ার অঞ্চলে ৪৫২ টি সক্রিয় আগ্নেয়গিরি রয়েছে যা পৃথিবী পৃষ্টের মোট আগ্নেয়গিরির ৭৫ শতাংশ। এশিয়ার জাপান, পলিনেশিয়ার টোঙ্গো, দক্ষিণ আমেরিকার ইকুয়েডর এই অঞ্চলের অন্তর্ভুক্ত। তাই এইসব অঞ্চলেই বেশি ভূমিকম্প হয়ে থাকে।

Walton Refrigerator Freezer
Walton Refrigerator Freezer