
ফাইল ছবি
খাদ্য সহায়তার আশায় জড়ো হওয়া ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরাইলি বাহিনীর গুলিতে আরও ৩৮ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এ নিয়ে শনিবার একদিনে ইসরাইলের হামলায় উপত্যকাটিতে মোট ১১৬ জন নিহত হয়েছেন।
সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, শনিবার মানবিক সহায়তার আশায় লাইন ধরেছিল ক্ষুধার্ত গাজাবাসী। কিন্তু সেই লাইনে আবারো ঝরেছে রক্ত।
গাজার খান ইউনিস ও রাফাহর দুটি সহায়তা বিতরণ কেন্দ্রের কাছে গুলিতে নিহত হয়েছেন অনেকে, আহত বহু। হামাস-শাসিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, ইসরাইলি সেনাবাহিনীর গুলিতে এদিন হয়েছে ৩৮ জনের প্রাণহানি হয়েছে।
আল জাজিরা বলছে, যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইল সমর্থিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে চলছে খাদ্য সরবরাহ। কিন্তু বিতরণ শুরুর আগেই আশপাশে ইসরাইলি সেনা অবস্থান নেয় এবং গাজাবাসীকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, এটি ছিল হত্যার জন্য নিশানা করা গুলি। হিউম্যান রাইটস মনিটর বলছে, জিএইচএফের চারটি বিতরণ কেন্দ্রের আশপাশেই গেল ছয় সপ্তাহে অন্তত ৬৭৪ জন নিহত হয়েছেন।
অন্যদিকে, জাতিসংঘ বলছে, মার্চ থেকে খাদ্য সরবরাহে বিধিনিষেধ জারি করার পর গাজায় অপুষ্ট শিশুর সংখ্যা দ্বিগুণ হয়েছে। এখন পর্যন্ত ৬৯ জন শিশু মারা গেছে ক্ষুধায়।
ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, অপুষ্টির শিকার এত মানুষ হাসপাতালে আসছে যা নজিরবিহীন। দিনের পর দিন পেটে দানাপানি না পড়ায় তারা চরম ক্লান্ত হয়ে পড়েছে। নড়ার শক্তিও আর অবশিষ্ট নেই। কারও কারও স্মৃতিশক্তি হ্রাস পেয়েছে।
গাজার আল শিফা হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, গত কয়েকদিনের শত শত রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তাদের অনেকেই এতটাই দুর্বল যে নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারছেন না। তাদের নিবিড় চিকিৎসা প্রয়োজন। কিন্তু এসব রোগীর চিকিৎসা করার মতো ওষুধ ও পথ্য হাসপাতালে নেই।
এদিকে, গাজায় ফিলিস্তিনিদের গণহত্যা অব্যাহত রাখলে ইসরাইলি সরকার আরও বেশি সেনা হারাবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন হামাসের সামরিক মুখপাত্র আবু ওবাইদা।
এক ভিডিও বার্তায় ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠনের সামরিক মুখপাত্র জোর দিয়ে বলেন, হামাস ক্ষয়ক্ষতির যুদ্ধ চালিয়ে যেতে প্রস্তুত এবং আক্রমণকারী ইসরাইলি সেনাদের হত্যা বা বন্দি করার লক্ষ্যে গাজাজুড়ে অভিযান চালিয়ে যাবে।