
ফাইল ছবি
যুক্তরাষ্ট্রের আইন বিভাগ কুখ্যাত যৌন অপরাধী জেফরি এপস্টেইনের মামলার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কিছু গোপন নথি প্রকাশের জন্য আদালতের কাছে আবেদন করেছে। ২০১৯ সালের এপস্টেইনের মানব পাচার মামলার গ্র্যান্ড জুরি সংক্রান্ত নথি প্রকাশের এই আবেদন এসেছে ট্রাম্প প্রশাসনের মামলাটি পরিচালনার ধরন নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার মধ্যে।
এ খবর দিয়ে অনলাইন বিবিসি বলছে, গ্র্যান্ড জুরির সাক্ষ্য ও নথি সাধারণত আইনি কারণে গোপন রাখা হয়। তবে জনস্বার্থে আদালত চাইলে সেগুলো প্রকাশ করতে পারে। এপস্টেইনকে ১৪ বছর বয়সী কিশোরীসহ ডজন ডজন মেয়েকে পাচারের অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়। আইন বিভাগ যুক্তি দিয়েছে, এই নথি জনস্বার্থে প্রকাশ করা প্রয়োজন।
ওদিকে প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প বৃহস্পতিবার অ্যাটর্নি জেনারেল পাম বন্ডিকে নির্দেশ দিয়েছেন এপস্টেইনের গোপন সাক্ষ্যের নথি প্রকাশের জন্য আদালতে আনুষ্ঠানিক আবেদন করতে। একই সঙ্গে এপস্টেইনের সহযোগী ঘিসলেইন ম্যাক্সওয়েলের মামলার কিছু নথি প্রকাশেরও দাবি তুলেছে আইন বিভাগ। তবে এটা স্পষ্ট নয়, আদালত আদৌ নথিগুলো প্রকাশের অনুমতি দেবে কি না বা সেগুলোতে ট্রাম্পপন্থীরা যে তথ্য চাচ্ছেন, সেগুলো আছে কি না। এই আবেদনের পাশাপাশি শুক্রবার ট্রাম্প মায়ামিতে ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের মূল কোম্পানি ডাউ জোন্স-এর মালিক রুপার্ট মারডক এবং দুই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ১০ বিলিয়ন ডলারের মানহানির মামলা করেছেন।
ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল দাবি করে, ট্রাম্প ২০০৩ সালে এপস্টেইনের ৫০তম জন্মদিনে একটি অশালীন ব্যক্তিগত বার্তা পাঠিয়েছিলেন। জার্নালের রিপোর্টে বলা হয়, বার্তাটি টাইপ করা লেখা এবং হাতে আঁকা এক নগ্ন মহিলার আউটলাইন দ্বারা বেষ্টিত ছিল এবং ট্রাম্প-এপস্টেইনের মধ্যে এক কল্পিত কথোপকথনের আকারে সাজানো হয়। ট্রাম্প একে ভুয়া দাবি করে বলেন, এগুলো আমার লেখা নয়, আমি এভাবে কথা বলি না। আমি ছবি আঁকিও না। তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন, আমরা সেই ভুয়া, কুৎসিত, মানহানিকর রিপোর্টের জন্য একটি শক্তিশালী মামলা দায়ের করেছি। রুপার্ট ও তার বন্ধুরা যেন প্রস্তুত থাকে- এই মামলায় তাদের ঘন্টার পর ঘন্টা জেরা ও সাক্ষ্য দিতে হবে। ডাউ জোন্স এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তাদের রিপোর্টের নির্ভুলতার ব্যাপারে তারা আশ্বস্ত এবং মামলার বিরুদ্ধে শক্তভাবে লড়াই করবে।
এপস্টেইন মামলায় নথি প্রকাশে দেরির কারণে ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে তার সবচেয়ে অনুগত সমর্থকদেরও ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর পদে লড়াই করা রিপাবলিকান শেরিফ চ্যাড বিয়ানকো বিবিসিকে বলেন, ট্রাম্পের আচরণ আমাদের প্রত্যাশা পূরণ করেনি, লাখো সমর্থক ক্ষুব্ধ। আমাদের এমনভাবে দেখা হচ্ছে যেন আমরা বোকা শিশু। কংগ্রেসে এখন চাপ বাড়ছে যাতে ‘ডিসচার্জ পিটিশন’ পাস করে অ্যাটর্নি জেনারেল বন্ডিকে বাধ্য করা যায় এপস্টেইনের মামলার নথি প্রকাশ করতে। এই উদ্যোগে বিরলভাবে রিপাবলিকান মার্জোরি টেইলর গ্রিন এবং ডেমোক্রেট আলেক্সান্দ্রিয়া ওকাসিও-কর্তেজ একসাথে সমর্থন জানিয়েছেন। এখন দেখার বিষয়, আদালত কত দ্রুত নথি প্রকাশের অনুমতি দেয় এবং সেই নথিগুলো ট্রাম্প প্রশাসনের ওপর চাপ বাড়াবে নাকি তাকে রাজনৈতিকভাবে রক্ষা করবে।