ফাইল ছবি
জাতিসংঘের নতুন এক প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, গাজার ওপর ইসরায়েলের চলমান হামলার ফলে নিহতদের মধ্যে ৭০ শতাংশের বেশি নারী ও শিশু। জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনার ভলকার তুর্ক এ ঘটনার জন্য ইসরায়েলকে ‘প্রকাশ্য উদাসীনতা’ দায়ী করে তীব্র সমালোচনা করেছেন।
শুক্রবার জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন এ প্রতিবেদনটি প্রকাশ করে। খবর আলজাজিরা।
প্রতিবেদনটি জানায়, গত ছয় মাসে গাজায় সংঘটিত এ যুদ্ধের প্রথম ছয় মাসে ৮,১১৯ জনের মৃত্যু নিশ্চিত হয়েছে, যার মধ্যে প্রায় ৭০ শতাংশই নারী ও শিশু। সবচেয়ে কম বয়সী নিহত শিশুর বয়স ছিল মাত্র একদিন, আর সবচেয়ে প্রবীণ ছিলেন ৯৭ বছর বয়সী একজন বৃদ্ধা।
এ ছাড়া জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থার এ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিহতদের মধ্যে ৪৪ শতাংশই ছিল শিশু, এবং সবচেয়ে বেশি নিহত শিশু ছিল ৫ থেকে ৯ বছর বয়সী।
প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে, ৮৮ শতাংশ ঘটনাতেই একাধিক মানুষ নিহত হয়েছেন। এ নিহতের সংখ্যা বেড়েছে ইসরায়েলি বাহিনীর ব্যবহৃত ব্যাপক বিধ্বংসী অস্ত্রের কারণে। এসব হামলা বেশিরভাগই গাজা শহরের ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় চালানো হয়েছে।
যদিও কিছু হামলার জন্য ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর গোলাগুলি দায়ী হতে পারে, তথাপি জাতিসংঘের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, প্রতিনিয়ত ইসরায়েল যুদ্ধের আন্তর্জাতিক নিয়মাবলী ভেঙে চলেছে, অথছ যে আইনের উদ্দেশ্য ছিল মানবীয় ক্ষতি সীমিত রাখা। জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনার ভলকার টুর্ক ইসরায়েলকে আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছেন।
প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ইসরায়েলি সরকার গাজায় মানবিক সহায়তা প্রবাহের অনুমতি দেয়নি এবং ইসরায়েলের সেনারা গাজার বেসামরিক অবকাঠামোতে হামলা ফলে বহু মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। এতে গুরুতর মানবিক সংকট সৃষ্টি হয়েছে।
প্রতিবেদনটিতে সতর্ক করে বলে হয়েছে, ইসরায়েল রাষ্ট্র কর্তৃক এ ধরনের ‘পদ্ধতিগত হামলা বা সিস্টেমেটিক হামলা’ যদি আরও চলতে থাকে, তবে তা ‘মানবতার বিরুদ্ধে জগন্য অপরাধ’ হিসেবে গণ্য হবে।
অপরদিকে এ প্রতিবেদনটি প্রকাশের পর, ইসরায়েলের কূটনৈতিক মিশন তা ‘অপভ্রান্ত’ ও ‘অত্যন্ত অযাচিত’ বলে উল্লেখ করেছে এবং জাতিসংঘের এ তথ্যের সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।
এদিকে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, ৭ অক্টোবর ২০২৩ থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলের হামলায় ৪৩,৪৬৯ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১,০২,৫৬১ জন আহত হয়েছে।