চীনের প্রতি বাংলাদেশের কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, বাংলাদেশ আরও চীনা বিনিয়োগ প্রত্যাশা করছে। তিনি বলেন, চীনের সাথে বাংলাদেশের বাণিজ্য ব্যবধান অনেক বেশি। চীনে রফতানি বৃদ্ধি করা এবং বাংলাদেশে চীনা বিনিয়োগ বাড়ানো প্রয়োজন।
বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে তার নিজ দফতরে ঢাকায় নবনিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও উইয়েনের সাথে মতবিনিময়কালে এসব কথা বলেন মন্ত্রী।
টিপু মুনশি বলেন, ‘চীন বাংলাদেশের বৃহৎ অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক অংশীদার। বাংলাদেশের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড তথা মেগাপ্রকল্প বাস্তবায়নে চীন অনেক সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে। এ জন্য বাংলাদেশ চীনের প্রতি কৃতজ্ঞ।’
‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিদের্শনায় দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে উঠছে। এর অনেকগুলোর কাজ এখন প্রায় শেষ। চীনসহ বিশ্বের অনেক দেশের বিভিন্ন কোম্পানি বাংলাদেশে বিনিয়োগ করেছেন’, যোগ করেন বাণিজ্যমন্ত্রী।
তিনি বলেন, বিনিয়োগের ক্ষেত্রে চীনের অবস্থান বেশ ভালো। কৃষিপ্রধান বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলে কৃষিভিত্তিক শিল্প কলকারখানা স্থাপন খুবই প্রয়োজন এবং এখানে বিনিয়োগ লাভজনক হবে।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, চীনের বিনিয়োগকারীদের নিয়ে উত্তরাঞ্চল পরিদর্শন করলে এ্যাগ্রো সেক্টরসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিনিয়োগ করা সহজ হবে।
‘উত্তরাঞ্চলের সাথে দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হয়েছে, অল্প কিছুদিনের মধ্যে প্রাকৃতিক গ্যাস সরবরাহ শুরু হবে,’ যোগ করেন মন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘এছাড়া, বাংলাদেশের, চামড়া, আইসিটি লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং খাতে বিনিয়োগ খুবই সম্ভবনাময়। ২০৪১ সালে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে আইসিটি সেক্টরের গুরুত্ব অনেক বেশি। এ সেক্টরে বিনিয়োগ চীনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। বাংলাদেশ এ সেক্টর থেকে ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রফতানির প্রস্তুতি নিয়েছে।’
এ সময়ে চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও উইয়েন বলেন, বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে চীন বাংলাদেশকে অধিক গুরুত্ব দিয়ে থাকে। বাংলাদেশে মেগা প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে চীন আন্তরিকতার সাথে সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে। ২০৪১ সালে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে চীন প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দিয়ে যাবে।
তিনি বলেন, এছাড়াও চীন বাংলাদেশের পাওয়ার প্ল্যান্টসহ বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে বিনিয়োগ করতে প্রস্তত। বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য ব্যবধান কমাতে চীন ৯৮ ভাগ পণ্য রফতানিতে শুল্কমুক্ত সুবিধা দিয়েছে।
‘বাংলাদেশ-চায়না ফ্রি ট্রেড এগ্রিমেন্ট করতে জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ কাজ করছে। বাংলাদেশে স্পেশাল ইকোনমিক জোনে বিনিয়োগের বিষয়ে চীন খুবই আগ্রহী’, যোগ করেন মন্ত্রী।
আগামী নভেম্বরে চীনের সাংহাইতে অনুষ্ঠেয় চায়না ইমপোর্ট ফেয়ারে বাণিজ্যমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘মার্চে বাংলাদেশে অনুষ্ঠেয় বাংলাদেশ সামিটে চীন গুরুত্ব দিয়ে অংশগ্রহণ করবে। আগামীতে বাংলাদেশে চীনের বিনিয়োগ আরও বাড়বে।’