শেষ ম্যাচে হেরে সিরিজ শেষ করল বাংলাদেশ। যদিও সিরিজ জয় নিশ্চিত হয়েছে আগেই। শুরুতে ব্যাট করে ল্যাথাম-ফিনের ব্যাটে ১৬১ রানের চ্যালেঞ্জিং স্কোর গড়ে নিউজিল্যান্ড, জবাবে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৩৪ রানে থামে বাংলাদেশ। এতে ২৭ রানে জয় পায় সফরকারী নিউজিল্যান্ড।
১৬২ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে ধীরগতিতে এগুচ্ছে নাঈম-লিটন জুটি। হামিশ বেনেটের প্রথম বলেই চার মেরে শুরু করেছেন মোহাম্মদ নাঈম। প্রথম ওভারে উঠেছে ৮ রান।
গত দুই ম্যাচে বাংলাদেশকে ভুগিয়েছে স্পিনার এজাজ প্যাটেল। এই ম্যাচেও বাংলাদেশের প্রথম উইকেট শিকার করলো প্যাটেল। দলীয় ২৬ রানে প্যাটেলের প্রথম বলেই কাট করতে গিয়ে টাইমিংয়ে গড়বড়ের কারণে স্কট কুগেলেইনের তালুবন্দী হন লিটন। ১০ রান করে লিটন।
প্রথম ৬ ওভার শেষে নিউজিল্যান্ডের সংগ্রহ ছিল ২ উইকেটে। পরের ইনিংসে বাংলাদেশের পাওয়ারপ্লেতে রান ১ উইকেটে ৩১। ইনিংসের সপ্তম ওভারে সৌম্যকে হারালো বাংলাদেশ। ম্যাকনকিকে কাট করতে গিয়ে রাচিনের হাতে ক্যাচ দেন সৌম্য। আউট হওয়ার আগে ৯ বলে করেন ৪ রান। সৌম্যের বিদায়ের রেশ না কাটতেই সাজঘরে ফিরলেন নাঈম শেখ। বেন সিয়ার্সের বলে ২৩ রান করে আউট হন এই ওপেনার।
উইকেট হারানোর মিছিলে এবার শামিল হলেন মুশফিক। নবম ওভারে রাচিন রবীন্দ্রর বলে তিন রান করে আউট হন মুশফিকুর রহিম।
চার উইকেট হারিয়ে দল যখন ধুঁকছে, তখন মাহমুদউল্লাহ-আফিফের ব্যাটে আশা দেখছিল বাংলাদেশ। পঞ্চম উইকেটে অর্ধশত রানের জুটি গড়েন এই দুই ব্যাটসম্যান। কিন্তু দলীয় ১০৯ রানে ৬৩ রানের জুটি গড়ে বিদায় নেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। ২৩ রান করে স্কট কুগেলেইনের বলে আউট হন বাংলাদেশের অধিনায়ক। পরের ওভারে আউট হন নুরুল হাসান সোহান। এজাজ প্যাটেলের বলে চার রান করে আউট হন তিনি।
সিরিজের পঞ্চম ম্যাচে সুযোগ পেয়ে সেটি কাজে লাগাতে পারেননি শামীমও। ২ রান করে বোল্ড হন তিনি। তবে একপ্রান্ত ধরে রাখেন আফিফ হোসেন। শেষ পর্যন্ত ৩৩ বলে ৪৯ রানে অপরাজিতে থাকেন তিনি।
নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৮ উইকেট হারিয়ে স্কোর বোর্ডে ১৩৪ রান তুলতে পারে স্বাগতিকরা। এতে ২৭ রানে ম্যাচ হারতে হয় বাংলাদশকে। শেষটি জয়ে রাঙিয়ে ২-৩ ব্যবধানে সিরিজ শেষ করে নিউজিল্যান্ড।
এর আগে টস হেরে ফিল্ডিংয়ে নেমে তাসকিনকে দিয়ে আক্রমণ শুরু করে বাংলাদেশ। প্রথম ওভারে তাসকিন আহমেদ দেন ২ রান। প্রথম ওভারটা দেখেশুনে খেললেও দ্বিতীয় ওভার থেকেই মারমুখি ভঙ্গিতে ব্যাট করতে থাকেন দুই কিউই ওপেনার ফিন অ্যালেন এবং রাচিন রবীন্দ্র। ওপেনিং জুটিতে মাত্র ৩৪ বল খেলে দুজন মিলে তুলেন ৫৮ রান।
এরপর শরিফুল ইসলামের করা পাওয়ার প্লের শেষ ওভারের চতুর্থ বলে মুশফিকুর রহিমের হাতে ক্যাচ তুলে দেন রাচিন। আউট হওয়ার আগে করেন ১৭ রান। পরেই বলেই এলবির ফাঁদে পড়েন আরেক ওপেনার ফিন অ্যালেন। তবে রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান তিনি। পরের বলেই রাচিনকে বিধ্বংসী ফিন অ্যালেনকে আউট করেন শরিফুল। ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ২৪ বলে ৪১ রান তুলেন তিনি। পাওয়ার প্লের ৬ ওভারে নিউজিল্যান্ড ২ উইকেট হারিয়ে ৫৮ রান তুলে নিউজিল্যান্ড।
কিউইরা আজ ঝড়ের গতিতে রান তুলেছে। বারবার বোলিং পরিবর্তন করেও লাভ হচ্ছে না। নবম ওভারে আফিফকে বোলিংয়ে আনেন মাহমুদউল্লাহ। এসেই অধিনায়কের আস্থার প্রতিদান দিলেন তরুণ এই অলরাউন্ডার। নিজের চতুর্থ বলে উইল ইয়ংকে সাজঘরে পাঠালেন আফিফ। ৮ বলে ৬ রান করেন করেন তিনি। আর নাসুমের বলে শামীমের হাতে ক্যাচ তুলে বিদায় নেন কলিন ডি গ্র্যান্ডহোম। ভয়ংকর এক সিরিজ কাটল গ্র্যান্ডহোমের। আগের চার ম্যাচে ৯ রান করা গ্র্যান্ডহোম আজ করেছেন ৯ রান।
দলীয় ১১৮ রানে তাসকিনের বলে দুর্দান্ত ক্যাচে নিকোলাসকে ফেরান সোহান। অফস্টাম্পের বাইরের বলে ব্যাট চালিয়েছিলেন নিকোলস, বাঁদিকে ঝাঁপিয়ে সেই ক্যাচ নিয়েছেন সোহান। আউট হওয়ার আগে ২০ রান করেন নিকোলাস।
শেষদিকে টম ল্যাথামের অর্ধশতকে ভর করে ১৬১ রানের চ্যালেঞ্জিং স্কোর সংগ্রহ করেছে নিউজিল্যান্ড।
বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ দুটি উইকেট নেন শরিফুল ইসলাম। এছাড়া একটি করে উইকেট পেয়েছেন আফিফ হোসেন, নাসুম আহমেদ এবং তাসকিন আহমেদ।