Bahumatrik | বহুমাত্রিক

সরকার নিবন্ধিত বিশেষায়িত অনলাইন গণমাধ্যম

চৈত্র ১৩ ১৪৩০, বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪

খুলনায় ঝড় ও বজ্রপাতে নিহত ৭, আহত ২০

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৭:৩৮, ১২ জুন ২০১৬

আপডেট: ০০:০০, ৩১ ডিসেম্বর ১৯৯৯

প্রিন্ট:

খুলনায় ঝড় ও বজ্রপাতে নিহত ৭, আহত ২০

খুলনা : খুলনায় ঝড় ও বজ্রপাতে শিশুসহ ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এরমধ্যে খুলনায় বজ্রপাতে ৪ জন, ট্রলারডুবিতে ১ জন এবং দেয়াল চাপা পড়ে ১জনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে।

মুর্হুমুহূ বজ্রপাতের ঘটনায় মামুষের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। অনেকেই নির্ঘূম রাত কাটিয়েছেন। এ সময়ে আহত হয়েছেন কমপক্ষে ২০ জন । খুলনায় গত ২৪ ঘন্টায় ১৭৭ মিলিমিটার বৃষ্টিúাত রেকর্ড করা হয়েছে। সোমবার নাগাদ আবহাওয়ার এই অবস্থার উন্নতি হতে পারে বলে আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কয়রা উপজেলায় মঠবাড়ি গ্রামে নিজ বাড়ির বারান্দায় অবস্থান করা মোঃ মুরাদ গাজী (৩৩) ও তার শিশু কন্যা মুসলিমা আক্তার সোনালীর (৭) বজ্রপাতে মৃত্যু হয়েছে। রোববার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে বজ্রপাতের এই ঘটনা ঘটে।

অপরদিকে পাইকগাছায় বজ্রপাতে ১ ব্যক্তি নিহত ও কমপক্ষে ১০ ব্যক্তি আহত হয়েছে। আহতদের স্থানীয় ও খুমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। চিংড়ী ঘেরের বাসায় আশ্রয় নেয়া খড়িয়া খাল পাড় গ্রামের মৃত মান্দার গাজীর ছেলে আব্দুল মালেক গাজী শ্বশুরবাড়ীস্থ পাতড়াবুনিয়া চিংড়ী ঘেরের বাসায় অবস্থানকালে নিহত হয়। এছাড়া বজ্রপাতে আরো ১০ ব্যক্তি আহত হয়।

আহতরা হলেন-পাতড়াবুনিয়া গ্রামের মৃত নওয়াব আলী সানার ছেলে রাজ্জাক সানা (৩২), আমিরুল সরদারের ছেলে মারুফ বিল্লাহ (২৫), নজরুল সানার ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান (১৬), মঠবাটি গ্রামের আবু তালেব গাজীর ছেলে আমিনুল ইসলাম (২৫), শ্যামনগর গ্রামের জহিরুদ্দিন শেখের ছেলে আব্দুর রাজ্জাক শেখ (৪৫), রাড়–লী গ্রামের মৃত দবির উদ্দীন গাজীর ছেলে মোজাহার গাজী (৪৫) ও মাজহারুল ইসলাম (৪২), তাছের গোলদারের ছেলে নওশের আলী (৬৫), আগড়ঘাটা গ্রামের স্বরুপ সরদারের ছেলে রেজাউল (৩৮)। আহতদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হলে মারুফ বিল্লাহর অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।

ভোরে বটিয়াঘাটা উপজেলার দারোগার ভিটা এলাকায় আম্বিয়া বেগম (৩২) নামের এক নারী নিজ ঘরে অবস্থানকালে বজ্রপাতে নিহত হয়েছেন। সাচিঁবুনিয়ায় নিপুন মন্ডল (৪৫) নামে এক ব্যক্তি গাছ চাপা পড়ে মারা গেছেন। এছাড়া ট্রলারডুবিতে মারা গেছেন আরও একজন বলে জানা গেলেও তার পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

অপরদিকে, পাইকগাছায় টর্নেডোর কবলে পড়ে ট্রলার ডুবিতে সীমা রাণী মন্ডল (৩০) নামে এক মহিলার মৃত্যু হয়েছে। শশী মন্ডল নামে আট বছরের শিশু সন্তান কে বাঁচাতে গিয়ে সীমা রাণী মন্ডল নামে এক মহিলার করুণ মৃত্যু হয়। সীমা গেওয়াবুনিয়া গ্রামের সুমন মন্ডলের স্ত্রী। এছাড়া এসময় চিংড়ি ঘেরের বাসায় আশ্রয় নেয়া অবস্থায় বজ্রপাতে দেলুটি গ্রামের সামাদ সানার ছেলে সোবহান সানা (৩০) ও তার স্ত্রী পারভীন আক্তার গুরুতর আহত হয়। আহতদের তাৎক্ষণিক ভাবে স্থানীয় লোকজন উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে।

এদিকে খুলনায় শনিবার (১১ জুন) দিবাগত রাত ১টা থেকে রোববার (১২ জুন) সকাল ৯টা পর্যন্ত ব্যাপক বজ্রপাত হয়েছে। বজ্রপাতে শত শত গাছপালা পুড়ে গেছে। একইসঙ্গে মাঝারি ও ভারী বৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টিতে খুলনার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। নষ্ট হয়েছে কাঁচা ঘর বাড়ি। অনেক এলাকা এখনও বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। তাছাড়া কোন কোন স্থানে মোবাইল ফোনের নেটওর্য়াকও বন্ধ হয়ে হয়ে আছে।

খুলনা আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবহাওয়াবিদ আমিরুল আযাদ বলেন, আবহাওয়ায় পশ্চিমা লঘুচাপ ও বঙ্গোপসাগরের গভীর সঞ্চালনশীল শেঘমালার কারণে অতিবৃষ্টি ও বজ্রপাত হযেছে। তিনি বলেন, এই দুটি নিন্মচাপের ফলে কিউমলিনিম্বাস নামে একপি মেঘমালার সৃষ্টি হয় । একারণে বজ্রপাতের ঘটনা বেশী ঘটে।

শনিবার রাত ১২ টা থেকে রোববার সকাল ৬ টা পর্যন্ত মোট বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে১৫৫ মিলিমিটার। এছাড়া গত ২৪ ঘন্টায় বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ১৭৭ মিলিমিটার। তিনি বলেন, সোমবার থেকে আবহাওয়ার এই অবস্থার উন্নতি হতে পারে।

খুলনা জেলা প্রশাসক মোঃ নাজমুল আহসান বলেন, শনিবার রাত ও রোববার সকালে খুলনার উপর দিয়ে ভয়াবহ টণেৃডো হানা দেয়। এতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হযেছে। এর মধ্যে বজ্রপাত, ট্রলারডুবি ও গাছ চাপা পড়ে মারা গেছে ৭জন। আহত হয়েছে কমপক্ষে ২০ জন। তিনি বলেন, জেলার ৯ উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের ক্ষয়ক্ষতির তালিকা করতে বলা হযেছে।

বহুমাত্রিক.কম

Walton Refrigerator Freezer
Walton Refrigerator Freezer