বরিশাল : বরিশালের আগৈলঝাড়ায় ৪ মাস কাজের পরেও বেতন জোটেনি যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের আওতাধীন ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মসূচির আওতায় কর্মরত উপজেলার এক হাজার কর্মজীবীর।
বেতন না পেয়ে অর্থ কষ্টে মানবেতর জীবনযাপন করছেন ওই কর্মজীবিসহ পরিবারের সদস্যরা।
যুব উন্নয় অফিস সূত্র মতে, উপজেলায় কর্মরত এক হাজার কর্মীর ৪ মাসের বেতন বাবদ ১কোটি ৬০ লাখ টাকা বকেয়া রয়েছে। এছাড়াও দ্বিতীয় দফায় যোগদান করা ১শ’ ৭৬জন কর্মী এক মাস যাবত কর্মরত রয়েছেন। বেতন তো দূরের কথা, তাদের তিন মাসের প্রশিক্ষণ ভাতাও দেয়নি যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর।
ভুক্তভোগী ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মসূচিতে কর্মরত রুবিনা আজাদ, সীমা আক্তার, বুলু হালদারসহ একাধিক কর্মজীবিরা জানান, ৩ মাস প্রশিক্ষণ শেষে যুব উন্নয়ন অফিসের নিয়োগপত্র পেয়ে দু’বছর মেয়াদী প্রকল্পে ১ জুন উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরে তিনিসহ ১ হাজার জন শিক্ষিত বেকার যুবক-যুবতী তাদের নির্ধারিত কর্মস্থলে যোগদান করেছেন।
সেপ্টেম্বর মাস নিয়ে কর্মস্থলে তাদের ৪ মাস চাকুরীর বয়স হলেও এখনও তারা কোন বেতন তুলতে পারেনন নি। ফলে ৪ মাস কাজ করে কোন বেতন না পেয়ে অর্থাভাবে চরম সমস্যার মধ্যে পরেছে কর্মজীবিসহ তাদের পরিবারের স্বজনেরা।
তারা আরও বলেন, গত ঈদের আগে বেতন না পাওয়ায় ছেলেদের নতুন পোশাক কিনে দিতে পারেননি তিনি। নির্দিষ্ট সময় কাজ শেষে বাড়ি ফিরে তিনি সংসারের কাজেও তেমন সময় দিতে না পারায় এবং এতদিনে বেতন না পাওয়ায় পরিবারের স্বজনদের বিভিন্ন কথা শুনে আসছেন। তিনি আরও বলেন, তাদের কাছ থেকে অনেক আগেই অফিসের লোকজন বেতন শিটের রেভিনিউতে স্বাক্ষর নিলেও তারা এখনও কোন টাকা হাতে পায়নি।
নাম না প্রকাশের শর্তে একাধিক কর্মী অভিযোগ করে বলেন, চাকরি করে মাস শেষে টাকা না পেয়ে ঘরে গেলে স্বামীর নির্যাতনসহ শ্বশুর বাড়ির সদস্যদের বিভিন্ন গালমন্দ ও বাজে কথা শুনতে হয় তাদের। এরকম আগে জানলে তারা অনেকেই চাকুরীতে আসতেন না বলেও জানান।
এব্যাপারে উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা মাসুদুল হাসান বলেন, ৪ মাস কাজের পর কর্মীরা বেতন না পাওয়ায় বিষয়টি নিয়ে তিনি বিব্রত। তবে সম্প্রতি কর্মীদের ২ মাসের বেতনের টাকা এসেছে। জনতা ব্যাংক এ্যাকাউন্ট হোল্ডারদের টাকা সোনালী ব্যাংকে চাওয়া হয়েছে। সোনালী ব্যাংক এত টাকা এক সাথে দিতে না পারায় বেতন পরিশোধে একটু বিলম্ব হচ্ছে।
যুব উন্নয়নের ডেপুটি ডিরেক্টর এবি সিদ্দিকুর রহমান জানান, এই খাতে বরাদ্দ না থাকায় কর্মীদের বেতন দেয়া যায়নি। এখন বরাদ্দ এসেছে, তবে তাও সম্পূর্ণ নয়। ওই বরাদ্দ থেকে যতদূর সম্ভব বেতন ও প্রশিক্ষণ ভাতা খুব শিগগির প্রদান করা হবে। বরাদ্দের ব্যাপারে মন্ত্রণালয়ে তিনি সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছেন বলেও জানান।
বহুমাত্রিক.কম