ঢাকা : শিল্প এবং স্থাপত্যকে নতুন আঙ্গিকে মানুষের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে সামদানী আর্ট ফাউন্ডেশন-এর উদ্যোগে এবং বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সহযোগিতায় আগামী ২ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হচ্ছে ঢাকা আর্ট সামিট (ডাস)।
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে এই সামিট চলবে আগামি ১০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। ২ ফেব্রুয়ারি সামিটের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর এবং তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করবেন শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী। এছাড়াও উপস্থিত থাকবেন ঢাকা আর্ট সামিট এর সাংগঠনিক কমিটির চেয়ারম্যান ফারুক সোবহান এবং সামদানী আর্ট ফাউন্ডেশনের পরিচালক নাদিয়া সামদানী।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ঢাকা আর্ট সামিট একটি আন্তর্জাতিক, অবাণিজ্যিক, দক্ষিণ এশিয় আর্ট এবং আর্কিটেকচার সম্বন্ধীয় গবেষণাধর্মী এবং প্রদর্শনীধর্মী প্ল্যাটফর্ম। সরকারি বেসরকারি যৌথ উদ্যোগ ঢাকা আর্ট সামিটের আয়োজনের সহযোগি প্রতিষ্ঠান হিসেবে আরো রয়েছে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়, তথ্য মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড, বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট ডেভেলপমেন্ট অথরিটি ও বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর। মাইক্রোসফট বাংলাদেশের সাথে পার্টনারশিপের অংশ হিসেবে সামিটের শিক্ষামূলক অনুষ্ঠানগুলি দেশের বিভিন্ন স্কুল ও ইউনিভার্সিটিতে সরাসরি সম্প্রচার করা হবে। ৫৫টি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান আর্ট সামিটের সাথে পার্টনার হিসাবে থাকছে।
দক্ষিণ এশিয় শিল্পের নতুন এক দিগন্ত উন্মোচন করতে ডায়ানা ক্যাম্পবেল বেটানকোর্টের উদ্যোগে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের নেতৃস্থানীয় প্রতিষ্ঠানের কিউরেটরগণকেও আমন্ত্রন জানানো হয়েছে। সামিটে ২০১৮ সংস্করণে দক্ষিণ ও দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের সংপৃক্ততাকে তুলে ধরা হবে নতুনভাবে। জাতীয় উন্নয়নকে বিশেষভাবে প্রভাবিত করার জন্য রয়েছে শ্রীলঙ্কার অজানা শিল্পকলার ইতিহাস। এছাড়াও দক্ষিণ এশিয়ার প্রদর্শনীর ইতিহাসের ওপর আলোকপাত করা হবে। সামিটে এবার প্রথমবারের মত সম্পৃক্ত হতে যাচ্ছে ইরান ও তুরস্ক।
এসব প্রদর্শনীতে অংশ নেবেন ৩৫টি দেশের ৩০০ এর বেশি শিল্পী; দক্ষিণ এশিয়ার কিছুতা অজানা এবং একই সাথে সমৃদ্ধ ও সম্ভাবনাময় শিল্পকলার উন্নয়নকে সামনে রেখে সামিটে ১২০ জনেরও বেশি বক্তার অংশগ্রহনে থাকবে মোট ১৬ টি প্যানেল আলোচনা এবং ২টি সিম্পোজিয়াম। প্রতিশ্রুতিশীল শিল্পীদের জন্য সামদানী আর্ট অ্যাওয়ার্ড এবং সামদানী সেমিনার প্রোগ্রামের আয়োজন থাকবে।
সামিটে আরও থাকছে সামদানী আর্কিটেকচার অ্যাওয়ার্ডে প্রথম বিজয়ী মাকসুদুল করিমের ডিজাইনকৃত সর্বপ্রথম এডুকেশন প্যাভিলিয়ন। আর্ট এবং আর্কিটেকচারকে দেখার নতুন দৃষ্টিভঙ্গি সৃষ্টির উদ্দেশ্যে আরও থাকছে আন্তঃবিষয়ক ওয়ার্কশপ। অংশগ্রহণে থাকছে র্যাকস মিডিয়া কালেকটিভ, সুপারফ্লেক্স, দায়ানিতা সিং এবং আর্ট এডুকেশনের নেতৃস্থানীয় প্রতিষ্ঠানসমুহ। এছাড়াও যৌথ
সম্পৃক্ততায় রয়েছে স্ট্যান্ডেলশুল, ওপেন স্কুল ইস্ট, টিবিএ ২১ একাডেমি, মারসে কানিঙ্ঘ্যাম ট্রাস্ট, এফএইচএন ডবলু একাডেমি অফ আর্ট এন্ড ডিজাইন এবং হার্ভার্ড প্রমুখ।
ঢাকা আর্ট সামিট ২০১৮ কে সামনে রেখে এরই মধ্যে আন্তর্জাতিক কিউরেটর, শিল্পী, লেখক, গবেষক, সমালোচকবৃন্দ বাংলাদেশে আসতে শুরু করেছেন। এবার সামিটে ১২০০-এরও অধিক আন্তর্জাতিক অতিথি সমাগম হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এবারের চতুর্থ সংস্করণে ঢাকা আর্ট সামিটের অন্যতম আকর্ষনীয় দিক হচ্ছে এবারই প্রথমবারের মত মূল লোগোতে ইংরেজির পাশাপাশি বাংলা ভাষা ব্যবহার করা হয়েছে। বাংলাদেশের প্রায় শতাধিক শিল্পীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হয়েছে এবারের সামিটে। বাংলাদেশি ১২টি আর্টিস্ট-লেড অর্গানাইজেশন তাদের শিল্পীদের নিয়ে ঢাকা আর্ট সামিটে অংশগ্রহণ করছে।
বাংলাদেশের শিল্পকর্ম আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পৌঁছে দেওয়া আর্ট সামিটের অন্যতম উদ্দেশ্য। এর অংশ হিসেবে আর্ট সামিটে থাকছে এশীয় শিল্পকর্ম প্রদর্শনীর অন্যতম পুরানো প্ল্যাটফর্ম এশিয়ান আর্ট বিয়েনালের উপর একটি বিশেষ প্রদর্শনী যেখানে প্রখ্যাত বাংলাদেশী শিল্পী সফিউদ্দিন আহমেদ, এম এম সুলতানসহ অন্যান্য শিল্পীদের শিল্পকর্ম প্রদর্শনী করা হবে। এ প্রদর্শনী আর্কাইভে সহযোগিতায় আছে জাপানের ফুকোওয়াকা মিউজিয়াম এবং বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি।
ঢাকা আর্ট সামিট দক্ষিণ এশীয় শিল্পকর্মের জন্য জন্য বৃহত্তম আন্তর্জাতিক প্লাটফর্ম। এখানে চিত্রকর্ম ছাড়াও ভাস্কর্য, ভিডিও আর্ট ছাড়াও থাকছে আন্তর্জাতিক শিল্পীদের অংশগ্রহণে মাল্টিস্টেজ পারফরম্যান্স প্রোগ্রাম যা এবারের ঢাকা আর্ট সামিটের বিশেষ আকর্ষণ হয়ে থাকবে।