Bahumatrik | বহুমাত্রিক

সরকার নিবন্ধিত বিশেষায়িত অনলাইন গণমাধ্যম

বৈশাখ ১১ ১৪৩১, শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪

হৈমন্তী শুক্লা ও পার্বতী বাউলের গানে মুগ্ধ সিলেটবাসী

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২২:৩৯, ২ মার্চ ২০১৭

আপডেট: ০০:০০, ৩১ ডিসেম্বর ১৯৯৯

প্রিন্ট:

হৈমন্তী শুক্লা ও পার্বতী বাউলের গানে মুগ্ধ সিলেটবাসী

ছবি: বেঙ্গল ফাউন্ডেশন

সিলেট : ভারতের প্রখ্যাত শিল্পী হৈমন্তী শুক্লা ও পার্বতী বাউলের গান মুগ্ধতার রেশ ছড়িয়ে দিলো সিলেটবাসীর মনে। সুরের ইন্দ্রজাল ছড়িয়ে শিল্পীরা দর্শকদের এক উপভোগ্য রাত উপহার দিলেন। আর তাই ঘড়ির কাটা মধ্যরাতের দিকে এগুলেও সেদিকে ভ্রুক্ষেপ ছিল না কারোই। পরিবার-পরিজন আর বন্ধু-বান্ধবদের নিয়ে তাই নিজেদের মতো করে উৎসবস্থলে মজে থাকলেন মাঠভর্তি মানুষ।

এ চিত্র বৃহস্পতিবার বেঙ্গল সংস্কৃতি উৎসবের নবম দিনের। সন্ধ্যার পর থেকে হাজার হাজার মানুষ সারি বেঁধে উৎসবস্থলে ঢুকতে থাকেন। প্রায় মধ্যরাত পর্যন্ত বিনোদনপ্রিয় এসব মানুষ মনের আনন্দে উপভোগ করেন শিল্পীদের নান্দনিক সব পরিবেশনা। আজ শুক্রবার ১০ দিনব্যাপী এ উৎসবের শেষ হবে।

উল্লেখ্য, বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে আয়োজিত এ উৎসবটি উৎসর্গ করা হয়েছে জ্ঞানতাপস আব্দুর রাজ্জাককে। ইনডেক্স গ্রুপ নিবেদিত এ উৎসবের সহযোগিতায় রয়েছে ঢাকা ব্যাংক। সম্প্রচার সহযোগী চ্যানেল আই।

এদিন বেলা চারটায় সৈয়দ মুজতবা আলী মঞ্চে ‘রীনা ব্রাউন’ চলচ্চিত্রের প্রদর্শনী হয়। একই মঞ্চে সন্ধ্যা সোয়া সাতটায় লোকনাট্যদল পরিবেশন করে ‘কঞ্জুস’ মঞ্চনাটক। এদিকে সময় কিছুটা এগিয়ে গতকাল বেলা চারটা থেকে হাসন রাজা মঞ্চে সাংস্কৃতিক পর্বের অনুষ্ঠান শুরু হয়। শুরুতেই ছিল জাতীয় রবীন্দ্রসংগীত সম্মিলন পরিষদ সিলেটের শিশু শিল্পীদের পরিবেশনায় ‘চতুরঙ্গ’ পরিবেশনা। এরপর শিশুতীর্থের উদ্যোগে খুদে শিল্পীদের অংশগ্রহণে একটি গীতিনৃত্যনাট্য পরিবেশিত হয়। এ গীতিনৃত্যনাট্যে সিলেটের ঐতিহ্যবাহী বিয়ে উৎসব উপস্থাপিত হয়েছে।

খুদে শিল্পীদের পরিবেশনার পরপরই মঞ্চে ওঠেন শিল্পী রাকিবা ইসলাম ঐশী। তিনি বেশ কয়েকটি নজরুলসংগীত পরিবেশন করেন। তাঁর পরিবেশনার পর ভাওয়াইয়া গানের শিল্পী শফিউল আলম রাজা মঞ্চে ওঠে জনপ্রিয় ও প্রচলিত কিছু ভাওয়াইয়া গান পরিবেশন করে দর্শকদের আনন্দ দেন। এরপরই মঞ্চে আসেন বাংলাদেশের নজরুলসংগীতের প্রখ্যাত শিল্পী ফেরদৌস আরা। তাঁর গানও বুঁদ হয়ে শোনেন মাঠভর্তি দর্শক-শ্রোতারা। মুহুমুহু করতালিতে এ শিল্পীকে অভিনন্দন জানান সিলেটবাসী।

ফেরদৌস আরার পরিবেশনার পর মঞ্চে আসেন ভারতের বিশিষ্ট শিল্পী হৈমন্তী শুক্লা। উপমহাদেশের প্রখ্যাত এই শিল্পী তাঁর জনপ্রিয় আধুনিক সব গান পরিবেশন করে দর্শকদের বিমুগ্ধ করে রাখেন। দর্শকেরাও বারবার করতালি দিয়ে এই শিল্পীকে অভিনন্দিত করেন। সবশেষে মঞ্চে আসেন এ সময়ের জনপ্রিয় বাউল গানের শিল্পী পার্বতী বাউল। তিনি সিলেট অঞ্চলকে লোকগানের উর্বর ভূমি আখ্যা দিয়ে একের পর এক বাউলগান পরিবেশন করেন। লালন সাঁই থেকে শুরু করে সিলেটের রাধারমণ, এসব প্রখ্যাত গীতিকারদের গান পরিবেশন করে শ্রোতাদের মোহাবিষ্ট করে রাখেন।

শুক্রবারের পরিবেশনা : সৈয়দ মুজতবা আলী মঞ্চে সকাল সাড়ে ১০টায় বেঙ্গল ইনস্টিটিউট ফর আর্কিটেকচার ল্যান্ডস্কেপস অ্যান্ড সেটলমেন্টসের উদ্যোগে ‘সিলেট হয়ে উঠুক আরো সিলেট’ শীর্ষক বিশেষ উপস্থাপনা ও আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে। আলোচনায় অংশগ্রহণ করবেন আব্দুল মোমেন, আবেদ চৌধুরী, জেরিনা হোসেন ও কাজী খালিদ আশরাফ। বেলা চারটায় এ মঞ্চেই ‘ঘাসফুল’ চলচ্চিত্রটি প্রদর্শিত হবে। একই মঞ্চে সন্ধ্যা সোয়া সাতটায় সুবচন নাট্যসংসদ পরিবেশন করবে প্রয়াত বাউলসাধক শাহ আবদুল করিমের জীবন ও কর্ম নিয়ে রচিত মঞ্চনাটক ‘মহাজনের নাও’।

গীতবিতান বাংলাদেশের শিল্পীরা বেলা চারটায় হাসন রাজা মঞ্চে ছোটদের গান ও আবৃত্তি পরিবেশন করবে। এরপর নজরুলসংগীত পরিবেশন করবেন শিল্পী অনিন্দিতা চৌধুরী। তাঁর পরিবেশনার পরপরই বেঙ্গল পরম্পরা সংগীতালয়ের শিল্পীরা দলীয় যন্ত্রসংগীত পরিবেশন করবে। দলীয় যন্ত্রসংগীত পরিবেশনার পরপরই সমাপনী অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে। সমাপণী অধিবেশনের পর রবীন্দ্রসংগীত পরিবেশন করবেন বাংলাদেশের প্রখ্যাত শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা। সবশেষে লোকসংগীত পরিবেশন করবেন দেশের জনপ্রিয় শিল্পী শফি মণ্ডল।

উল্লেখ্য, প্রতিদিনই কয়েকটি মঞ্চে অনুষ্ঠান হচ্ছে। মূল অনুষ্ঠান হচ্ছে সৈয়দ মুজতবা আলী এবং হাসন রাজা মঞ্চে। এ ছাড়া প্রথম দিন থেকেই শাহ আবদুল করিম চত্বরে বাদ্যযন্ত্র ও সিলেট অঞ্চলের লোকগানের ইতিহাস নিয়ে প্রদর্শনী; গুরুসদয় দত্ত চত্বরে কারুমেলা ও বেঙ্গল প্যাভিলিয়ন এবং কুশিয়ারা কলোনেডে স্থাপত্য প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। রাধারমণ দত্ত বেদিতে অনুষ্ঠিত হচ্ছে সুবীর চৌধুরী আর্ট ক্যাম্প।

বহুমাত্রিক.কম

Walton Refrigerator Freezer
Walton Refrigerator Freezer