ছবি: বহুমাত্রিক.কম
বগুড়া : আবহমান কাল ধরে পুরুষের প্রতি অগাধ ভালবাসার অনত্যম প্রতীক হিসাবে গন্য করা হতো যে হাতপাখার বাতাস তা আরে চোখে পড়ে না। আধুনিকতার স্রোতে বাঙ্গালির গ্রামীণ সংস্কৃতির এই অনুষঙ্গ কী তাহলে বিলীন হতে চলেছে?
আগেকার দিনে দেখা যেত গ্রীস্মের প্রচন্ড গরমে ও কাঠ ফাটা রোদে স্বামী যখন মাঠ থেকে কাজ শেষে বাড়ী ফিরতেন, তখন তার স্ত্রী হাত পাখা দিয়ে বাতাস করে তাকে স্বস্তি দান করতেন। সংসার জীবনের সীমাহীন কষ্ঠ আর অপ্রাপ্তিকে পেছনে ফেলে স্বজনদের মাঝে ভালোবাসার এই ক্ষুদ্র বিনিময় সংসারগুলোকে করে তুলতো অনেক বেশি প্রাণবন্ত-শান্তিময়।
হাতপাখার এই বাতাসে মাঠের তপ্ত শরীরই কেবল জুড়াত না পারস্পারিক অনেক ভাব বিনিময়ও হতো। ভালোবাসার সুদৃঢ় এই বন্ধন বছর থেকে যুগ, যুগ থেকে বহুযুগের যুবলবন্দীত্বে প্রবর্তনা যোগাত।
তবে সাম্প্রতিক কালে স্মার্টফোন আর আকাশ সংস্কৃতির যুগে দাম্পত্য জীবন অনেক বেশি যান্ত্রিকতার ঘেরাটোপে আবদ্ধ হয়ে যাওয়ায় অধিকাংশ ক্ষেত্রেই পারিবারিক সম্পর্ক ঠুনকো হয়ে পড়ছে। বাড়ছে পারিবারিক কলহ, স্বামীর হাতে স্ত্রী, স্ত্রীর হাতে স্বামী, মা’র হাতে সন্তান, সন্তানের হাতে মা-বাবা হত্যার মতো ভয়াবহ সামাজিক অনাচার।
বিদ্যমান এসব অপ্রিয় খবরাখবর যখন ক্রমেই সামনে আসছে ‘মা-চাচী কিংবা দাদী-নানী’র মুখে শোনা তাদের মধুর দাম্পত্য জীবনের গল্প ততোই ফিঁকে হয়ে যাচ্ছে। তাই তাগিদ এসেছে কেবল পান্তা-ইলিশ কিংবা পহেলা বৈশাখের দু’চারদিনের পোশাকি সংস্কৃতিতে না ডুবে গিয়ে আবহমান বাংলার ভালোবাসা চর্চার চিরায়ত যে রীতি ছিল-তা আবারও ফিরিয়ে আনার। সেখানে গুরুত্ব পেতে পারে হাত পাখায় স্বজনদের জন্য ভালোবাসার চর্চা বাড়ানোর।
বহুমাত্রিক.কম